<p>বিশ্বনবী (সা.) গোটা জীবনে প্রায় ৭০ ক্ষতিকর বিষয়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন এবং মহান আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেছেন। কোনো ব্যক্তি যদি সেসব বিষয় থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে, আশা করা যায়, মহান আল্লাহ তাঁকেও সেসব অনিষ্ট থেকে হেফাজত করবেন। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো—</p> <p>‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল’</p> <p>অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি—</p> <p>১. আজজি : অক্ষমতা দুর্বলতা থেকে।</p> <p>২. আল-কাসালি : অলসতা থেকে।</p> <p>৩. আল-জুবনি : ভীরুতা থেকে।</p> <p>৪. আল-বুখলি : কৃপণতা থেকে।</p> <p>৫. আল-হারামি : অক্ষম বার্ধক্য থেকে।</p> <p>৬. আল-কাসওয়াতি : রূঢ়তা থেকে।</p> <p>৭. আল-গাফলাতি : উদাসীনতা থেকে।</p> <p>৮. আল-আইলাতি : দারিদ্র্য থেকে।</p> <p>৯. আজ-জিল্লাতি : হীনতা-লাঞ্ছনা থেকে।</p> <p>১০. আল-মাসকানাহ : নিঃস্ব হওয়া থেকে।</p> <p>১১. আল-ফাকরি : অভাবী হওয়া থেকে।</p> <p>১২. আল-কুফরি : কুফর থেকে।</p> <p>১৩. আশ-শিরকি : শিরক থেকে।</p> <p>১৪. আল-ফুসুকি : পাপাচার থেকে।</p> <p>১৫. আশ-শিকাকি : মতভেদ থেকে।</p> <p>১৬. আন-নিফাকি : কপটতা-মুনাফিকি থেকে।</p> <p>১৭. আস-সুমআতি : খ্যাতিপ্রীতি থেকে।</p> <p>১৮. আর-রিয়ায়ি : লোক দেখানোপনা থেকে।</p> <p>১৯. আস-সাম্মি : বধিরতা থেকে।</p> <p>২০. আল-বাকামি : নির্বাক হওয়া থেকে।</p> <p>২১. আল-জুনুনি : পাগলামো থেকে।</p> <p>২২. আল-জুজামি : কুষ্ঠরোগ থেকে।</p> <p>২৩. আল-বারাসি : শ্বেত রোগ থেকে।</p> <p>২৪. সাইয়িয়িল আসকামি : দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে।</p> <p>২৫. গালাবাতিত দাইনি : ঋণের বোঝা থেকে।</p> <p>২৬. কাহরির রিজালি : অত্যাচারী লোকের দাপট থেকে।</p> <p>২৭. জাওয়ালি নি‘মাতিকা : আপনার নিয়ামত বিলুপ্ত হওয়া থেকে।</p> <p>২৮. তাহাউউলে আফিয়াতিকা : আপনার দেওয়া সুস্থতা বদলে যাওয়া থেকে।</p> <p>২৯. ফুজাআতি নিকমাতিকা : আপনার হঠাৎ রোষ থেকে/ হঠাৎ বিপদ থেকে।</p> <p>৩০. জামিই সাখাতিকা : আপনার সব ক্রোধ উদ্রেক বস্তু থেকে।</p> <p>৩১. জাহদিল বালায়ি : ক্লান্তিকর বালা-মুসিবত থেকে।</p> <p>৩২. দারাকিশ শাকায়ি : দুর্ভাগ্যের নাগাল পাওয়া থেকে/ দুর্ভাগ্য থেকে।</p> <p>৩৩. সুইল কাদায়ি : অবিচার থেকে/মন্দ ভাগ্য থেকে</p> <p>৩৪. শামাতাতিল আ‘দায়ি : শত্রুর আনন্দহাসি থেকে।</p> <p>৩৫. আল-হাম্মি : দুশ্চিন্তা থেকে।</p> <p>৩৬. আল-হুজনি : দুশ্চিন্তা বিষণ্নতা থেকে।</p> <p>৩৭. আরজালিল উমুরি : শেষ বয়সের হীনতা থেকে।</p> <p>৩৮. আজাবিল কবরি : কবরের আজাব থেকে।</p> <p>৩৯. আন-নারি : জাহান্নাম থেকে।</p> <p>৪০. আশ-শাইতানি : শয়তান থেকে।</p> <p>৪১. ফিতনাতিদ দুনিয়া : দুনিয়ার ফিতনা থেকে।</p> <p>৪২. ফিতনাতিদ দাজ্জালি : দাজ্জালের ফিতনা থেকে।</p> <p>৪৩. ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি : জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে।</p> <p>৪৪. আল-মা‘সামি ওয়াল মাগরামি : পাপ ও জরিমানা থেকে।</p> <p>৪৫. ফিতনাতিল গিনা : প্রাচুর্যের ফিতনা থেকে।</p> <p>৪৬. আল-ফিতানি : যাবতীয় ফিতনা থেকে।</p> <p>৪৭. জারিস সুয়ি : ক্ষতিকর প্রতিবেশী থেকে।</p> <p>৪৮. আল-খিয়ানাতি : খিয়ানত বিশ্বাসঘাতকতা থেকে।</p> <p>৪৯. আল-জুয়ি : ক্ষুধার প্রকোপ থেকে।</p> <p>৫০. শাররিন নাফসি : নফসের অনিষ্ট থেকে।</p> <p>৫১. আল-হাদামি : ধ্বংস থেকে।</p> <p>৫২. আল-গারাকি : পানিতে ডোবা থেকে।</p> <p>৫৩. আল-হারাকি : পুড়ে যাওয়া থেকে।</p> <p>৫৪. আলমাওতি লাদিগান : সাপ-বিচ্ছু দংশিত হয়ে মারা যাওয়া থেকে।</p> <p>৫৫. শাররির রীহি : বাতাসের অনিষ্ট থেকে।</p> <p>৫৬. আদ-দালালি : ভ্রষ্টতা থেকে।</p> <p>৫৭. আল-জাহলি : অজ্ঞতা থেকে।</p> <p>৫৮. আজ-জুলমি : জুলুম থেকে।</p> <p>৫৯. আজ-জালালি : পদস্খলন থেকে।</p> <p>৬০. ইলমিন লা ইয়ানফাউ : অনুপকারী ইলম (জ্ঞান) থেকে।</p> <p>৬১. কালবিন লা ইয়াখশাউ : বিনম্রতাহীন কলব থেকে।</p> <p>৬২. নাফসিন লা তাশবাউ : অতৃপ্ত নফস থেকে।</p> <p>৬৩. দাওয়াতিন লা ইউসতাজাবু লাহা : কবুল হয় না—এমন দোয়া থেকে।</p> <p>৬৪. আইনিন লা-ম্মাহ : তিরস্কারকারী চোখদৃষ্টি থেকে/বদনজর থেকে।</p> <p>৬৫. আল-হামাতি : বিচ্ছু থেকে।</p> <p>৬৬. মুনকারাতিল আলখলাক : দুশ্চরিত্র থেকে।</p> <p>৬৭. আন আমুতা ফি সাবিলিকা মুদবিরান : আপনার পথে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করাবস্থায় মৃত্যুবরণ করা থেকে।</p> <p>৬৮. আল-হাসিদি ইজা হাসাদ : হিংসুকের হিংসা থেকে।</p> <p>৬৯. আন-নাফফাসাতি ফিল উকাদ : জাদুগিঁঠে ফুঁকদানকারিণীদের অনিষ্ট থেকে।</p> <p>৭০. মিন শাররি মা খালাক : আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে।</p> <p>শেষোক্ত দোয়াটি পবিত্র কোরআনের সুরা ফালাক থেকে সংগৃহীত, যা মহান আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শিক্ষা দিয়েছেন। এবং এই দোয়ার ভেতর সব দোয়ার মূল কথা লুক্কায়িত। অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্ট সব অনিষ্ট থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বর্ণিত ‘রক্ষাকবজ’ সব দোয়া একসঙ্গে একটি দোয়ায় পাওয়া যায়। সেটি হলো—আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) অগণিত দোয়া করেছিলেন, তার কোনোটি আমরা স্মরণ রাখতে পারলাম না। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি বেশিসংখ্যক দোয়া করেছেন, তার কিছুই আমরা মনে রাখতে পারিনি। তিনি বলেন, তোমাদের আমি কি এরূপ একটি দোয়া শিখিয়ে দেব না, যা সব দোয়াকে সংযুক্ত করবে? তোমরা বলো: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি মা সাআলাকা মিনহু নাবিয়্যুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম, ওয়া আ’উজু বিকা মিন শাররি মাস্তা’আজা বিকা মিনহু নাবিয়্যুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ওয়া আনতাল মুসতা’আনু ওয়া আলাইকাল বালাগ, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা, ইল্লা বিল্লাহ।’</p> <p>অর্থ : হে আল্লাহ, তোমার কাছে সেই সব কল্যাণ কামনা করছি, যা তোমার নবী মুহাম্মদ (সা.) তোমার কাছে প্রার্থনা করেছেন। আর তোমার কাছে সেই সব অকল্যাণ থেকে আশ্রয় কামনা করছি, যেসব অকল্যাণ থেকে তোমার নবী মুহাম্মদ (সা.) আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। তুমিই সাহায্যকারী। তুমিই (কল্যাণ) পৌঁছে দাও এবং তোমার সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বিরত থাকার ও পুণ্য করার ক্ষমতা কারো নেই। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫২১)</p> <p> </p>