<p>ব্যাপক অর্থবহনকারী একটি শব্দ হলো ‘খিয়ানত’। স্থান, কাল, পাত্রভেদে এর অর্থ পরিবর্তন হতে পারে। যেমন পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না, আর যে বিষয়ে তোমরা আমানতপ্রাপ্ত হয়েছ, তাতেও বিশ্বাস ভঙ্গ কোরো না।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২৭)</p> <p>এখানে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অধিকারে খিয়ানত (বিশ্বাসঘাতকতা) এই যে জনসমাজে আল্লাহর ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করা তথা নির্জনে তার বিপরীত পাপে লিপ্ত হওয়া। অনুরূপভাবে এটিও খিয়ানত যে ফারায়েজের মধ্যে কোনো ফরজ ছেড়ে দেওয়া ও নিষিদ্ধ জিনিসের মধ্যে কোনো কিছু করা। পরস্পরের আমানতে খিয়ানত করতেও নিষেধ করা হয়েছে। তিনি নিজেও মহান আল্লাহর কাছে খিয়ানতের মতো জঘন্য অপরাধ থেকে আশ্রয় চাইতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা  থেকে আশ্রয় চাই। কারণ তা নিকৃষ্ট শয্যাসঙ্গী। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই খিয়ানত করা থেকে। কেননা তা খুবই নিকৃষ্ট বন্ধু।’  (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৪৭)</p> <p>খিয়ানত একটি নিকৃষ্ট অভ্যাস, যাদের মধ্যে এই অভ্যাস আছে, মহান আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ রক্ষা করেন মুমিনদের। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৮)</p> <p>মহানবী (সা.)-এর ভাষ্যমতে খিয়ানত হলো, মুনাফিকের অন্যতম অভ্যাস। কোনো মুমিন খিয়ানতের পথ বেছে নিতে পারে না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোনো একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে; ২. কথা বললে মিথ্যা বলে; ৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগাল করে। (বুখারি, হাদিস : ৩৪)</p> <p>মহান আল্লাহ সবাইকে এই ঘৃণ্য অভ্যাস থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন</p> <p> </p>