ছবি প্রতিকী
বর্তমানে উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের কাছে তারকা হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এতে বড়রা আত্মনিয়োগ করছে। টিকটক, লাইকিসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় অ্যাপে উদ্ভট বা অশ্লীল ভিডিও কনটেন আপলোড করে অনেকেই রাতারাতি তারকা হওয়ার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায় আদাজল খেয়ে নেমেছে। কেউ আবার নতুন কিছু দেখাতে গিয়ে এমন বিপজ্জনক কাজ করছে, যা মানুষের জীবন পর্যন্ত নষ্ট করতে পারে।
বিজ্ঞাপন
আমাদের সবার জানা, এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করা হয় কৌতুক, গান-বাজনা ইত্যাদির মাধ্যমে বিনোদনের জন্য, যা ইসলামে হারাম। যারা এগুলো বানাবে, আর যারা দেখবে উভয়েই গুনাহগার হবে। বিপদের কথা হলো, যতজন মানুষ এই ভিডিওগুলো দেখে গুনাহ করবে, ভিডিও নির্মাতাও তাদের সবার গুনাহের একটি অংশ পেয়ে যাবে। যা ভিডিও নির্মাতার গুনাহের পাল্লা প্রতি মুহূর্তেই ভারী করবে। এমনকি ভিডিও নির্মাতার মৃত্যুর পরও যদি কেউ ভিডিও দেখে, তার গুনাহও তার আমলনামায় পৌঁছে যাবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মানুষকে নেক কাজের দাওয়াত দেবে সে ওই লোকদের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে; যারা তার দাওয়াত পেয়ে নেক কাজ করবে। অথচ তাদের সওয়াবের সামান্যও হ্রাস পাবে না। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি মানুষকে গুনাহের কাজের দাওয়াত দেবে সে ওই লোকদের সমপরিমাণ গুনাহ পাবে, যারা তার দাওয়াত পেয়ে গুনাহের কাজ করবে। অথচ তাদের গুনাহ হ্রাস পাবে না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৯৮০)
কেউ কেউ আবার টিকটক ভিডিওর মাধ্যমে অন্যকে নিয়ে ট্রল করে মজা নেওয়ার চেষ্টা করে। এটি জঘন্য অপরাধ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদাররা, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অন্যের নিন্দা কোরো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতই না নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো জালিম। ’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১১)
অতএব আমাদের সবার উচিত এ ধরনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে ও সন্তানদের দূরে রাখা। এ ধরনের অ্যাপ দিয়ে কেউ কেউ লাখ টাকা আয় করলেও বেশির ভাগ মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে ফেলে। তা ছাড়া সমাজে অশ্লীলতা ও গুনাহ ছড়িয়ে অর্থ উপার্জন করাও কোনো মুসলমানের জন্য হালাল নয়। আল্লাহ সবাইকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।