হাসি-কান্না মানুষের স্বভাবগত বিষয়। হাসির বিভিন্ন স্তর আছে, যেমন—মুচকি হাসি। এতে মানুষের মুখমণ্ডলে আনন্দের ছাপ ভেসে উঠলেও দাঁত দেখা যায় না। আরবিতে এই হাসিকে বলা হয় ‘তাবাসসুম’।
বিজ্ঞাপন
নবী-রাসুলরা বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তার কথা শুনে সোলায়মান মুচকি হাসল এবং বলল, হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার মাতা-পিতাকে দান করেছেন এবং যাতে আমি আপনার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুরা : নামল, আয়াত : ১৯)
জারির (রা.) বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি, তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে তাঁর কাছে প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন তখন তিনি মুচকি হাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৩০৩৫)
এতে বোঝা যায়, মুচকি হাসা রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। কখনো এই হাসিতে (আওয়াজ ছাড়া) দাঁত প্রকাশ পেলেও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অট্টহাসি কোনো মুসলমানের মুখে শোভা পায় না। কোনো ব্যক্তি নামাজ অবস্থায় অট্টহাসি দিলে তার অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
মুচকি হাসিকে ইসলামে ভালো কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আবু জার (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে বলেন, ‘কোনো ভালো কাজকে তুচ্ছ ভেবো না, যদিও তা তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করার কাজ হয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৮৪)
আর ইসলামের দৃষ্টিতে যেহেতু সব ভালো কাজ সদকাস্বরূপ, তাই মুচকি হাসিকে সদকা বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। মানুষ যখন কারো সাক্ষাতে মুচকি হাসি দেবে, তখন তার আমলনামায় সদকার সওয়াব লেখা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমার ভাইয়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি সদকা। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)
সুবহানাল্লাহ! রাসুল (সা.)-এর সুন্নতগুলোই প্রমাণ করে যে ইসলাম কতটা শান্তির ধর্ম। এখানে হাসির মাধ্যমে ভালোবাসা বিলিয়েও সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়।