<p>কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে। তাই আমাদের জন্য আবশ্যক হলো কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত পন্থায় নামাজ আদায় করা। যেভাবে নামাজ পড়লে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়, সেভাবে নামাজ পড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা। কারণ কিছু নামাজ আল্লাহর নির্দেশিত পদ্ধতিতে না হওয়ার দরুন তাঁর অসন্তুষ্টির কারণও হতে পারে। তখন সে নামাজ জান্নাতের  চাবি না হয়ে, জাহান্নামে নিক্ষেপ করার যন্ত্রে পরিণত হতে পারে। নিম্নে নামাজের এমন কিছু পদ্ধতি তুলে ধরা হলো, যেগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।</p> <p>নামাজে অলসতা : কিছু নামাজি এমন আছে, যারা নামাজের ব্যাপারে ভীষণ অলস। তারা সময়মতো নামাজ আদায় করে না। আবার সময়মতো নামাজ আদায় করলেও রুকু-সিজদা, ওঠা-বসা যথাযথভাবে করে না। কিরাত, দোয়া ও তাসবিহ ঠিকমতো পড়ে না। মহান আল্লাহ এ ধরনের নামাজির জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে  উদাসীন।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৫)</p> <p>লোক দেখানো নামাজ : কিছু লোক আছে, যারা নামাজ তো ঠিকভাবে পড়ে কিন্তু তাদের মনে রিয়া থাকে। তারা মানুষের সামনে নিজেকে পাকা নামাজি হিসেবে জাহির করার জন্য নামাজ পড়ে, মনের মাঝে অহংকারের বীজ বপন করে। পবিত্র কোরআনের ভাষ্যমতে, তাদের জন্যও মহা দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সুরা মাউন, আয়াত : ৬)। তা ছাড়া এভাবে লোক দেখানো নামাজ পড়া মুনাফিকদের স্বভাব। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়, আর তিনিও তাদের ধোঁকায় ফেলেন। যখন ওরা নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪২)</p> <p>দায়সারা নামাজ : আর এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা দায়সারা নামাজ পড়ে। নামাজের সময় তারা এতটাই চঞ্চল হয়ে পড়ে যে ঠিকমতো রুকু-সিজদা করার সময়টুকু তারা পায় না। নামাজের প্রতিটি রুকন ধীরস্থিরে আদায়ের ক্ষেত্রে তারা যত্নবান হয় না। রাসুল (সা.) এ ধরনের লোকদের নামাজ চোর বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় চোর ওই ব্যক্তি, যে তার নামাজ চুরি করে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, সে কিভাবে নামাজ চুরি করে? তিনি বলেন, সে নামাজে রুকু ও সিজদা পূর্ণ করে না।’ (মুসনাদে আহামাদ, হাদিস : ২২৬৯৫)</p> <p>উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বোঝা গেল যে আমাদের নামাজের ব্যাপারে আরো যত্নবান হতে হবে। প্রতিটি নামাজই জীবনের শেষ মনে করে একাগ্রচিত্তে অত্যন্ত যত্নসহকারে আদায় করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।</p>