<p>আরবি ‘কুদস’ শব্দ থেকে ‘কুদসি’ শব্দের উৎপত্তি। কুদস অর্থ পবিত্র। মহান আল্লাহর পবিত্র সত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বিশেষ ধরনের হাদিসকে কুদসি বলা হয়, যার যৌগিক অর্থ পবিত্র সত্তার বাণী। পরিভাষায় ‘যেসব হাদিস রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করেছেন তাকে কুদসি বলা হয়। যেমন—‘তিনি বলেন, মহান আল্লাহ বলেছেন’। হাদিসে কুদসিকে হাদিসে ইলাহি ও হাদিসে রব্বানিও বলা হয়। মহান আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় এসব হাদিসকে কুদসি এবং বর্ণনা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ হওয়ায় তাকে হাদিস বলা হয়। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিসে কুদসি ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে’ বলে বিশ্বাস করা আবশ্যক মনে করে। (উলুমুল হাদিস ওয়া নুসুসুম-মিনাল আসার, পৃষ্ঠা-১৩৭)</p> <p>হাদিসে কুদসির মর্যাদা : হাদিসবিশারদদের মতে, হাদিসে কুদসির মর্যাদা কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যবর্তী। অর্থাৎ মর্যাদার বিচারে হাদিসে কুদসির অবস্থান কোরআনের পরে এবং সুন্নাহর ওপরে। কেননা কোরআনে শব্দ ও বাক্য উভয়টি আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর সুন্নাহর শব্দ ও বাক্য উভয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ থেকে। অন্যদিকে হাদিসে কুদসির শব্দ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ আর তার অর্থ ও মর্ম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। (তাইসিরু মুসতালাহুল হাদিস, পৃষ্ঠা-১২৮)</p> <p>কোরআন ও হাদিসে কুদসির পার্থক্য : পবিত্র কোরআন ও হাদিসে কুদসি উভয়ই আল্লাহর বাণী হলেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো—</p> <p>১. কোরআনের শব্দ ও মর্ম উভয়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর হাদিসে কুদসির শুধু মর্ম আল্লাহর পক্ষ থেকে।</p> <p>২. সম্পূর্ণ কোরআন সন্দেহাতীত সনদে ধারাবাহিক সূত্রে বর্ণিত, কিন্তু হাদিসে কুদসি এমন নয়।</p> <p>৩. কোরআন আল্লাহ কর্তৃক শতভাগ সংরক্ষিত। হাদিসে কুদসিও সংরক্ষিত, তবে কোরআনের মতো নয়।</p> <p>৪. নামাজে কোরআন তিলাওয়াত আবশ্যক। অন্যদিকে নামাজে কিরাতের পরিবর্তে হাদিসে কুদসি তিলাওয়াত করা বৈধ নয়।</p> <p>৫. কোরআন মহানবী (সা.)-এর জন্য মুজিজা (অলৌকিক), কিন্তু হাদিসে কুদসি মুজিজা নয়। (সহিহ হাদিসে কুদসি, পৃষ্ঠা ১-২)</p> <p> </p>