না জেনে হারাম জিনিস খেয়ে ফেললে করণীয়
প্রশ্ন : কেউ যদি বুফেই হোটেলগুলোতে গিয়ে না জেনে অ্যালকোহল জাতীয় জিনিস বা হারাম জিনিস খেয়ে ফেলে তাহলে তার দায়মুক্তির উপায় কী?
আব্দুল্লাহ, নিউ ইয়র্ক, আমেরিকা।
উত্তর : সন্দেহযুক্ত বা হারাম কোনো কিছু খেয়ে ফেললে পরে আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করতে হবে। আর ভবিষ্যতের জন্য হারাম ও সন্দেহযুক্ত খাবার থেকে বেঁচে থাকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৮৬২, মিরকাত : ৬/২৩৮৬)
কাফফারা না দিয়ে কুলখানি দেওয়া
প্রশ্ন : আমার শাশুড়ি ইন্তেকাল করেছেন। তিনি দুই বছর ধরে খুবই অসুস্থ ছিলেন। তবে তাঁর জ্ঞান ছিল। শুধু হাঁটা-চলা করতে পারতেন না। দুই বছর ধরে তিনি নামাজ পড়তে পারেননি। এখন তাঁর নামাজের কাফফারা আদায় করা বেশি জরুরি, নাকি বড় করে কুলখানি করা বেশি জরুরি। যদি তাঁর উত্তরাধিকাররা তার নামাজের কাফফারা আদায় না করে, তাহলে কি তারা গুনাহগার হবে?
গোলাম জিলানী, নোয়াখালী।
উত্তর : আনুষ্ঠানিক কুলখানি শরিয়তসম্মত নয়। তাই কুলখানির আনুষ্ঠানিকতার পেছনে টাকা ব্যয় না করে মরহুমার ছুটে যাওয়া নামাজগুলোর কাফফারা আদায় করা জরুরি। কাফফারার ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি আগে অসিয়ত করে গেলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে কাফফারা আদায় ওয়াজিব হবে, আদায় না করলে ওয়ারিশরা গুনাহগার হবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি অসিয়ত না করে থাকে, তাহলে কাফফারা ওয়াজিব না হলেও মুস্তাহাব। তাই সাবালক ওয়ারিশরা নিজ নিজ সম্পত্তি থেকে আদায় করা মুস্তাহাব, অর্থাৎ আদায় করলে অনেক সওয়াব হবে, তবে না করলে গুনাহ হবে না। (রদ্দুল মুহতার : ২/৭২, আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪২৪, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/২৫৮)
স্বামীর রাগ বেশি হলে কী করব
প্রশ্ন : আমার স্বামী অনেক রাগী। তার কাছে গেলেই খুব রাগ দেখায়। খাবার দিতে সামান্য দেরি হলেই ভাঙচুর করে। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী? এমন কোনো দোয়া আছে, যা পড়লে তার রাগ কমবে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঘোড়াশাল।
উত্তর : আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর গুরুত্বের সঙ্গে আল্লাহর দরবারে মোনাজাতের মধ্যে স্বামীর রাগ কমার জন্য দোয়া করবেন। ইসলামী শরিয়তের বিধান পুঙ্খানুপুঙ্খ মেনে চলার চেষ্টা করুন। নিজেও রাগান্বিত না হয়ে ধৈর্যসহকারে স্বামীকে ভালোবাসা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। স্বামীর রাগান্বিত অবস্থায় আপনি নীরবে নিঃশব্দে ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তনির রজিম’ বেশি বেশি পড়তে থাকুন। (বুখারি, হাদিস : ৬১১৫)
স্ত্রীর সঙ্গে লুডু খেলা
প্রশ্ন : শুনেছি স্ত্রীকে খুশি করার চেষ্টা করা সওয়াবের কাজ। আমার স্ত্রীকে সাধারণত সময় দিতে পারি না। কিন্তু মাঝেমধ্যে সে আমার সঙ্গে লুডু খেলতে পছন্দ করে। স্ত্রীকে খুশি করার জন্য মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে লুডু খেলি। এতে ইসলামের কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে?
তারেক রহমান, খিলগাঁও।
উত্তর : যদি লুডু খেলায় হার-জিতের বাজি না হয় এবং ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে না হয় এবং এর দ্বারা ফরজ, ওয়াজিব ইবাদত আদায়ে ব্যাঘাত না আসে, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর চিত্তবিনোদনের জন্য কোনো কোনো সময় লুডু খেলা আপত্তিকর নয়। (আসসুনানুল কুবরা লিন নাসায়ি : ৮/১৭৬, আল বাহরুর রায়েক : ৮/১৮৯, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১২/২৯০)
কসমের কাফফারা দিয়ে সে কাজ আবার করা
প্রশ্ন : কোনো ব্যক্তি কসম ভেঙে কাফফারা আদায় করার পর তিনি সে কাজ আবার করতে পারবেন?
সাকিব, লক্ষ্মীপুর।
উত্তর : কোনো ব্যক্তি কসম করার পর তা ভেঙে ফেললে তার কাফফারা দিতে হবে। পরে তার সে কাজ করায় আর কোনো বাধা থাকবে না। কসমের কাফফারা হলো, ১০ জন দরিদ্র লোককে দুই বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়ানো। অথবা এক জোড়া করে পরিধানের কাপড় দেওয়া। কেউ এই দুটির সামর্থ্য না রাখলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৮৯, হিন্দিয়া : ২/৫৭, কিফায়াতুল মুফতি : ২/২৪২, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৭/৩৬৯)
সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
মন্তব্য