<p>ইসলামের পঞ্চম খলিফাখ্যাত হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-এর পরামর্শক্রমে রাসুল (সা.)-এর ওফাতের ৮৫ বছর পর ইবনে শিহাব জুহুরি (রহ.) সিরাতচর্চা শুরু করেন। তিনি যে সংক্ষিপ্ত জীবনীটি রচনা করেন সেটিই সিরাতবিষয়ক প্রথম গ্রন্থ। এটি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শিহাব জুহুরির প্রিয় ছাত্র মুসা ইবনে উকমা দ্বিতীয় সিরাতগ্রন্থ রচনা করেন। কিন্তু এ গ্রন্থও বিলুপ্ত হয়ে যায়। এরপর ইবনে শিহাব জুহুরির আরো কয়েকজন ছাত্র—ইবনে ইসহাক, ওমর ইবনে রাশেদ, আবদুর রহমান ইবনে আবদুল আজিজ, ইবনে সালেহ প্রমুখও সিরাতগ্রন্থ রচনা করেন।</p> <p>তবে প্রথম সিরাত রচয়িতা হিসেবে বর্তমান বিশ্বে যাঁর নামটি সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তিনি হলেন ইবনে ইসহাক (জ. ৮৫ হি.-মৃ-১৫১ হি.)। মদিনায় জন্মগ্রহণকারী ইবনে ইসহাক রচিত ‘সিরাতু রাসুলিল্লাহ’ সিরাতবিষয়ক সর্বাধিক প্রাচীন ও প্রামাণ্য গ্রন্থ।</p> <p>বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হয় সপ্তম শতাব্দীতে, হজরত ওমর (রা.)-এর খেলাফত আমলে। ধীরে ধীরে বাংলার সুলতানদের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলমানদের বাংলা সাহিত্যচর্চার পথও সুগম হয়। বাংলা সাহিত্যে সিরাত রচনা শুরু হয় পুঁথি সাহিত্যের মাধ্যমে। পঞ্চদশ কিংবা ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত এসব পুঁথিতে আমরা মহানবী (সা.)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে অপূর্ব ভাষার পয়ার রচনা করতে দেখি।</p> <p>বাংলা সাহিত্যের মধ্য যুগ মানেই কাব্য যুগ। এ যুগে সাহিত্যে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বন্দনা, স্তুতি ও চরিত্র-চিত্রণ ছাড়াও অনেক পূর্ণাঙ্গ জীবনী রচিত হয়েছে।</p> <p>বাংলা ভাষায় সিরাতচর্চা বিষয়ে গবেষণা করেছেন নাসির হেলাল। এ বিষয়ে তাঁর বই হলো—‘বাংলা ভাষায় সীরাত বিষয়ক গ্রন্থপঞ্জি’। ১২০ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত রচিত মোট ১০২৮টি সিরাতগ্রন্থের তালিকা এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর পর থেকে বর্তমান অবধি আরো বহু সিরাতগ্রন্থ বাংলা ভাষায় রচিত হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।</p>