<p>আমেরিকায় মুসলিম ইতিহাস আমেরিকার ইতিহাসের সমানই প্রাচীন। আজকের আধুনিক আমেরিকাকে বাস উপযোগী ও সভ্য করে তোলার পেছনে মুসলিমদের অবদান কম নয়। আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে মুসলিমদের দাস হিসেবে ধরে আনা হয় আমেরিকা আবাদ করার জন্য। বিশেষত স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান হলে বহু মুসলমান দাসত্ববরণে বাধ্য হয় এবং তাদের আমেরিকায় নির্বাসন দেওয়া হয়। তাদের হার ছিল আগত দাসদের প্রায় ২০ শতাংশ। কিন্তু আমেরিকার সংরক্ষিত ইতিহাসে মুসলিমদের অংশ খুবই সামান্য। তবে সম্প্রতি কালের আবরণে ঢাকা পড়া আমেরিকার মুসলিমদের ইতিহাস উদ্ধার ও সংরক্ষণের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তর ক্যারোলাইনার একদল গবেষক ও শিক্ষার্থী এই উদ্যোগ নিয়েছেন। আটলান্টিক তীরবর্তী অঞ্চলের মুসলিমদের প্রাচীন ও সমৃদ্ধ অথচ অজ্ঞাত ইতিহাস উন্মোচন করতে চান তাঁরা। ‘জন হপ ফ্রাংকলিন ইয়াং স্কলারস সামার প্রগ্রাম’-এর অধীনে কাজ করা হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন মধ্যম ও উচ্চ স্তরের কয়েকজন খ্যাতিমান স্কলার।</p> <p>ডিউক সিনিয়র এডুকেশনাল অ্যান্ড প্রগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক ডেভিড স্টেইন বলেন, ‘আমি একজন অনুষদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে অনুপ্রাণিত হই। তিনি আমাকে জানান, আমেরিকায় ক্রীতদাস হয়ে আসা মানুষের ২০ শতাংশই ছিল মুসলিম। আমি তখন বললাম, তাহলে কেন আমরা অজ্ঞাত ইতিহাস জানতে শুরু করব না।’</p> <p>ফ্রাংকলিন প্রজেক্টের অধীনে শিক্ষার্থীরা মুসলিম কমিউনিটির কাছে যাবে এবং তারা স্থানীয় মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারগুলো পরিদর্শনে যাবে। পাশাপাশি তারা ইসলামী শিল্পকলা ও অনুষ্ঠানগুলো পর্যবেক্ষণ করবে।</p> <p>নর্থ ক্যারোলাইনার দুরহাম শহরের সাবেক পরিকল্পনাবিদ নাজিম আবদুল হাকিম তাঁর বই ‘দ্য আজান ইন দ্য বুল সিটি’তে দুরহাম সিটির মুসলিম জনগণের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে উনিশ শতকের মুসলিম লেখক ওমর বিন সাঈদের আলোচনাও এসেছে।</p> <p>আমেরিকায় মুসলিম ইতিহাস জুড়ে রয়েছে দুটি বেদনাদায়ক বিষয়। আফ্রিকান মুসলিমদের দাসত্বে বাধ্য করা এবং মালিক কর্তৃক তাদের ধর্মান্তরে বাধ্য করা। এর বিপরীতে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ‘ব্ল্যাক মুসলিম মুভমেন্ট’ (১৯১৩) আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এই আন্দোলনের মূল প্রতিবাদ্য ছিল আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমদের আত্মপরিচয় (মুসলিম পরিচয়) ফিরিয়ে দেওয়া এবং শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের ভয়াবহতা থেকে আত্মরক্ষা করা। তখন অনেক কৃষ্ণাঙ্গ জানতে পেরেছিল যে তাদের পূর্বপুরুষরা মুসলিম ছিল। সূত্র : ডিউক টুডে</p>
