<p><strong>সুরা কিয়ামাহ</strong></p> <p>এ সুরায় অন্য মাক্কি সুরার মতো দ্বিন ও ঈমানের মূলনীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মৃত্যু, পুনরুত্থান ও সৃষ্টির সূচনালগ্ন বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।</p> <p>কিয়ামতের কসম খেয়ে সুরাটি শুরু করা হয়েছে। এ সুরায় বিশেষভাবে পুনরুত্থানের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এবং যে পুনরুত্থানে বিশ্বাস করে না, তার ভ্রান্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর কিয়ামতের বিভিন্ন আলামত উল্লেখ করা হয়েছে। কিয়ামত অমোঘ ও অনিবার্য। এ সুরায় বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর নবী (সা.)-কে ওহি চলাকালে কোরআনের আয়াত মুখস্থ করার চেষ্টা করতে নিষেধ করেছেন। এবং আল্লাহ বলেছেন, তিনি নিজেই তা হিফজের ব্যবস্থা করবেন। দুনিয়ার মুহব্বত ও আখিরাতের ওপর দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিতে সতর্ক করা হয়েছে। আবার মানুষ আখিরাতে দুই প্রকার হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে—এক প্রকার সৌভাগ্যবান, অন্য প্রকার দুর্ভাগা। প্রথম ভাগের লোকেরা তাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলাকে দেখে দৃষ্টিকে আনন্দ দেবেন এবং ঈমানের আলোয় তাদের চেহারা ঝলমল করবে। আর দ্বিতীয় পক্ষের নিকষ অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। এরপর মৃত্যুর সময় ও শেষ অবস্থা কত কঠিন হবে সে সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিশেষে হাশর ও পুনরুত্থানের ব্যাপারে প্রমাণ নিয়ে আসা হয়েছে।</p> <p> </p> <p><strong>সুরা দাহর</strong></p> <p>সুরাটি বেশির ভাগ তাফসিরবিদের মতে মাদানি হলেও এ সুরায় আখিরাত সম্পর্কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে চিরস্থায়ী জান্নাতে নিষ্পাপ বান্দারা কেমন নিয়ামত উপভোগ করবে, সে সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে।</p> <p>মানুষের সৃষ্টির সূচনালগ্ন, এরপর মানুষকে কৃতজ্ঞ ও কৃতঘ্ন—দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কৃতজ্ঞদের ও অস্বীকারকারীদের প্রতিদান কী এবং জান্নাত ও জাহান্নামের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এ সুরায় আলোচিত হয়েছে।</p> <p>কৃতজ্ঞদের প্রাপ্য জান্নাত, সওয়াব, পুণ্য সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। এরপর কোরআন নাজিলের উৎসস্থল, রাসুল (সা.)-কে ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর জিকির ও কিয়ামুল লাইল করার আদেশ এসেছে। পাশাপাশি আগের সুরার মতো দুনিয়াপ্রেমে বেঁচে থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে। পরিশেষে কোরআন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ—এ কথা উল্লেখ করে তাদের ঈমান ও আমলের প্রতি দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।</p> <p> </p> <p><strong>সুরা মুরসালাত</strong></p> <p>এই সুরায় মাক্কি অন্য সুরার মতো পুনরুত্থান ও পরকাল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। পুনরুত্থানের প্রাথমিক বিষয়াবলি, আল্লাহর কুদরত ও একত্ববাদের দলিল উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি অদৃশ্য, আখিরাতের বিভিন্ন অবস্থা ও কাফিরদের কাজের ভর্ত্সনার কথা এসেছে।</p> <p>কিয়ামতের দিন বাতাস ও ফেরেশতাদের আগমনের কসম করা হয়েছে সুরার শুরুতে। আজাব নেমে আসা এবং আজাবের সময়ের আলামতও উল্লেখ করা হয়েছে।</p> <p>আল্লাহর কুদরত ও মানুষকে আবার জীবিত করা, আগেকার বিভিন্ন জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়া এবং মানুষের সৃষ্টি, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি সম্পর্কেও আলোচনা এসেছে।</p> <p>কাফিরদের কাজের ভর্ত্সনা ও তাদের ভ্রান্তির কথা আলোচনার মাধ্যমে সুরাটি শেষ করা হয়েছে।</p> <p> </p> <p><strong>সুরা নাবা</strong></p> <p>বিভিন্ন মাধ্যমে পুনরুত্থানের বিষয় প্রমাণ হলো এই সুরার মূল আলোচ্য বিষয়। এ জন্য সুরা শুরু করা হয়েছে কাফিরদের প্রশ্ন করা এবং তাদের কিয়ামত সম্পর্কে খবর দেওয়া, হাশর-নশর ও পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের মাধ্যমে।</p> <p>এ সুরায় পুনরুত্থান সম্পর্কে বিভিন্ন দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।</p> <p>পাশাপাশি আল্লাহর সৃষ্টিরাজির আশ্চর্য ও অভিনবত্ব সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। এরপর এ সুরায় পুনরুত্থান বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।</p> <p>কাফিরদের আজাবের রকমফের ও মুত্তাকিদের শান্তি-সুখের বৈচিত্র্য সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে।</p> <p>কিয়ামতের দিনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই—এ কথা বিশেষ তাগিদের সঙ্গে বলা হয়েছে। এবং কাফিরদের অতি সত্বর আজাবে আক্রান্ত হওয়ার কথা আলোচনা করে এই সুরা শেষ করা হয়েছে।</p> <p> </p> <p> </p>