<p>বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসছে, পোশাকশিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। অথচ সম-অধিকার বিবেচনা করলে বাংলাদেশে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার কোনোই সুযোগ নেই। যদি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসেও, সে ক্ষেত্রে পোশাক খাতে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোয় কিছু কিছু কারখানায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। পোশাকের বাজারগুলোতে কৃত্রিম সুতার পোশাকের চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশের জন্য এটিও একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।</p> <p>গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ভোরের কাগজ ও দি অ্যাপারেল নিউজের যৌথ উদ্যোগে ‘পোশাকশিল্পের সাম্প্রতিক সংকট : সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, অতীতেও এ ধরনের অনেক চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। আগামী দিনেও সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পোশাকশিল্প এগিয়ে যাবে। এরই মধ্যে ১৫ বছরের রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। রোডম্যাপে ভার্চুয়াল মার্কেট ও কৃত্রিম ফাইবারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও পোশাক খাত অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে। বক্তারা আরো বলেন, পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে আমেরিকার কংগ্রেস সদস্যরা পোশাকের মূল্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমরা ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করেছি। এখন ক্রেতাদের উচিত মূল্য বাড়ানো।</p> <p>উদ্যোক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার নৈতিক অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। তবে রাজনৈতিকভাবে দেশের ওপর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে সেটা কূটনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে, সমাধান করতে হবে।  পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা আগেই শঙ্কা করেছিলাম ২০২৩ সাল ভালো যাবে না। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি এখনো শেষ হয়নি। ফলে মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় ক্রেতার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মানি সাপ্লাই কমানো এবং সুদহার বৃদ্ধি করা হয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশের গ্রোথ নেগেটিভ হয়। এরপর আমরা পজিটিভ ধারা ধরে রাখতে সক্ষম হই, আগামী দিনেও সেটা ধরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির টার্গেট নিয়ে কাজ করছি, যেখানে সুদহার কমানো প্রয়োজন।’</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রম আইন মানছি না এটা সত্য নয়। আমরা কোনো শ্রম আইন লঙ্ঘন করিনি। এটি যাতে লঙ্ঘিত না হয় তা নিয়ে কাজ করছি। শ্রম ইস্যুতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কোনো কারণ নেই, সেটা হবে না। পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে আমেরিকার কংগ্রেস সদস্যরা পোশাকের মূল্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমরা ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করেছি। এখন ক্রেতাদের উচিত মূল্য বাড়ানো।’</p> <p>বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আইএলও কনভেশনে ট্রেড ইউনিয়নের কথা বলা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেই ১৯৭৪ সালে তাতে সই করেছেন। আমেরিকা, চীন, ভারত এবং আমাদের তৈরি পোশাকের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম এখনো আইএলও কনভেনশনে সই করেনি। শ্রমিকদের অধিকার প্রশ্নে কোর বা ফান্ডামেন্টাল কনভেনশনালের আটটির মধ্যে মাত্র দুটিতে সই করেছে আমেরিকা, যেখানে বাংলাদেশ সবগুলোতেই সই করেছে।’</p>