<p>নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ বরদ্দ রাখা হচ্ছে। তিন ভাগে মোট ১৬ হাজার কোটি টাকা রাখছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে এক ভাগ সরাসরি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় থোক বরাদ্দ রাখা হবে। বাকি দুই ভাগের এক ভাগ রাখা হচ্ছে এসএমই খাতে প্রণোদনার সুদ খরচ বাবদ। আরেক ভাগ রাখা হচ্ছে বিজেএমসির শ্রমিকদের জন্য। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’ শিরোনামে বাজেট উপস্থাপন করবেন। বাজেট বক্তৃতায় এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করবেন তিনি।</p> <p>এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস কত দিন থাকবে তা কেউ বলতে পারছে না। তাই অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।’</p> <p>তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি এম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার প্রভাবে পুরো অর্থনীতি থমকে গেছে। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখা ইতিবাচক দিক। তবে এসব বরাদ্দ যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ বাড়াতে হবে।’</p> <p>সূত্র মতে, সাধারণত বিশেষ কোনো কাজের জন্য বাজেটে থোক বরাদ্দ রাখা হয়। গত কয়েক অর্থবছরে অবশ্য থোক বরাদ্দ সেভাবে ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনি। তবে এবার করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সব কিছু নতুন করে সাজানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ থাকছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাখা হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানার জন্য সরকার ঘোষিত প্যাকেজের সুদ খাতে খরচ বাবদ রাখা হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। আর দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বিজেএমসির শ্রমিকদের জন্য। অর্থ মন্ত্রণালয় এ বরাদ্দ চূড়ান্ত করেছে। চলতি বাজেটে থোক বরাদ্দ রাখা আছে চার হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে অপ্রত্যাশিত খাতে বরাদ্দ আছে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর অন্যান্য খাতে রাখা আছে দুই হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ থাকছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বাজেটের তুলনায় আগামীতে থোক বরাদ্দ বাড়ছে প্রায় পাঁচ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যে আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয় এর অধিকাংশই ব্যবহার হয়েছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায়। কারণ করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় চিকিৎসা খাতে ব্যাপক ব্যয় বেড়ে যায়। বিশেষ করে এসব ব্যয় মেটাতে অতিরিক্ত ৪৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয় বিভিন্ন হাসপাতালে। করোনা রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য করোনা এক্সপ্রেস নামে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সারা দেশে করোনার ক্ষতির প্রচারণা করতে আরো বরাদ্দ দেওয়া হয় ২০ কোটি টাকা।</p> <p> </p>