<p>টেক্সটাইল পল্লীর জন্য প্লট বিক্রির উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পর খুলনা টেক্সটাইল মিল (কেটিএম) এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করতে চাইছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশন (বিটিএমসি)। প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিটিএমসি এই বাণিজ্যিক স্থাপনার প্রস্তাবনা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সায়ও দিয়েছে বলে জানা গেছে।</p> <p>লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯৩ সালের ১৯ জুন বিএনপি সরকার দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারীকে ছাঁটাইসহ মিলটি বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ১৯৯৯ সালে ওই জমিতে টেক্সটাইল পল্লী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে অনুমোদনও দেন। কিন্তু ২০০১ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকার প্রকল্পটি স্থগিত করে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে আবারও টেক্সটাইল পল্লী স্থাপনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু মামলার কারণে তা আটকে যায়। মামলা নিষ্পত্তি করে বিটিএমসি খুলনা টেক্সটাইল পল্লী স্থাপনের জন্য ২৪টি শিল্প প্লট তৈরি করে, যা বিক্রির জন্য দুই <img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/10 October/09-10-2019/kalerkantho-10a-2019-10-09.jpg" style="float:left; height:265px; margin:10px; width:179px" />দফায় দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু কোনো ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ-জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, কোনো স্থানে শিল্প কল-কারখানা গড়ে তোলার জন্য যোগাযোগ, বিদ্যুতের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু খুলনার প্রস্তাবিত টেক্সটাইল পল্লীতে এ দুটিরই সংকট রয়েছে। নগরীর যে স্থানে প্রকল্পটির অবস্থান সেখানে যাতায়াতের জন্য প্রশস্ত কোনো রাস্তাও নেই। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এ কারণে বোধকরি টেক্সটাইল পল্লীর জন্য প্লট বিক্রিতে সাড়া পড়েনি।</p> <p>বিকল্প হিসেবে বিটিএমসি ওই জমিতে ডেভেলপিং কম্পানির মাধ্যমে আবাসিক/বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের প্রস্তাব করে। ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর পাঠানো ওই প্রস্তাবনা অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত হলে তারা সরকারি অব্যবহৃত জমি বিক্রি না করে প্রচলিত বিধি-বিধান অনুযায়ী সরকারের উন্নয়নমূলক/জনহিতকর কার্যক্রমে ওই জমি ব্যবহারে মত দেয়। জমিতে আবাসিক/বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা যাবে কি না জানতে চেয়ে মন্ত্রণালয় বিটিএমসিকে চিঠি দেয়। গত ৬ আগস্ট বিটিএমসি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তাতে টেক্সটাইল পল্লী স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পরিবর্তন করে পিপিপির আওতায় ফুডকোর্ট, থিমপার্ক, হাসপাতাল অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট নির্মাণের জন্য স্থায়ী কমিটির সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।</p> <p>এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মির্জা আজম সাংবাদিকদের বলেন, খুলনা টেক্সটাইল মিলটি যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে শিল্পাঞ্চল করার পরিবেশ নেই। যেসব জায়গায় পরিবেশের কারণে শিল্পায়ন সম্ভব নয়, সেখানে অন্যভাবে আয়বর্ধক কর্মসূচি নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটা গাইডলাইন রয়েছে। এটা বিবেচনা করে বিটিএমসির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সুপারিশ করা হয়েছে।</p> <p>বিটিএমসির উপমহাব্যবস্থাপক কাজী ফিরোজ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, শিল্প স্থাপনে অনুমোদন পাওয়া যাবে না আশঙ্কায় আমরা শিল্প প্লট বিক্রি করতে পারিনি। এ কারণে পিপিপির আওতায় সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলার চিন্তা-ভাবনা চলছে। প্রসঙ্গত, ১৯৩১ সালে খুলনা নগরীর ছোট বয়রা এলাকায় ২৫ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কটন মিলের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬০ সালে নামটি পরিবর্তন করে এর নতুন নাম হয় খুলনা টেক্সটাইল মিলস । স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মিলটি জাতীয়করণ করা হয়।</p>