<p>ব্যাংকের অগ্রিম বিনিয়োগ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন করে ছয় মাস সময় বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে এডিআর নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট পুরোপুরি না কাটায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ছাড় দিতেই এ সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে এই ছাড় পুঁজিবাজার ও বেসরকারি খাতের অর্থায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে অনেকে।</p> <p>আগামী ৩১ মার্চ অগ্রিম বিনিয়োগ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়ের শেষ সময় ছিল। কিন্তু গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করে জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো এডিআর সমন্বয়ের সময় পাবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে নির্দেশিত মাত্রাসীমায় ক্রমান্বয়ে এডিআর নামিয়ে আনার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।</p> <p>জানা গেছে, গত বছর বেশ কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক বেঁধে দেওয়া এডিআর রেশিও লঙ্ঘন করে বেশি ঋণ দিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর এডিআর রেশিও ৮৩.৫ শতাংশ ও ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য তাদের আয়-আমানত অনুপাত (আইডিআর) ৮৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয় এবং যাদের এডিআর/আইডিআর রেশিও বেশি তাদের প্রথম দফায় ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সার্কুলারের মাধ্যমে তা জুনের মধ্যে নামিয়ে আনতে বলা হয়। এরপর একই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় আবার এই সময় বৃদ্ধি করে ডিসেম্বর করা হয়। পরবর্তী সময়ে তৃতীয় দফায় একই বছরের ৯ এপ্রিল এ সময় বাড়িয়ে করা হয় ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ। কিন্তু বেশ কিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে থাকায় এই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই গতকাল তা আরো ছয় মাস বাড়িয়ে সার্কুলার জারি করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।</p> <p>দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো এসংক্রান্ত সার্কুলারে বলা হয়, অগ্রিম বিনিয়োগ-আমানত অনুপাতের (এডিআর/আইডিআর) নির্দেশিত মাত্রা অতিক্রান্ত থাকায় ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নির্দেশিত মাত্রায় নামিয়ে আনার সুনির্দিষ্ট কার্যপরিকল্পনা গ্রহণ করে ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশনকে অবহিত করতে হবে। এ বিষয়ে অগ্রগতির মাসিক প্রতিবেদন প্রতি মাসের প্রথম ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অফসাইট সুপারভিশন বিভাগকে প্রদান করতে হবে।</p> <p>বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১১টি ব্যাংকের এডিআর রেশিও নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি। এ ছাড়া এই অনুপাত বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু ব্যাংক গ্রাহকদের ঋণ দিতে পারছে না। আবার কিছু ব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করলেও তারল্য সংকটের কারণে তা বিতরণ করতে পারছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ ১৬.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে নির্বাচন ইস্যু ও তারল্য সংকটের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয় ১৩.৩ শতাংশ। এ কারণে দ্বিতীয়ার্ধের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমিয়ে ১৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।</p>