<p>নাম পরিবর্তন ও আইনি ধারা পুনর্গঠনের মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে ট্যারিফ কমিশন। মূলত শুল্কসংক্রান্ত বিষয়ে সরকারকে সুপারিশকারী এই প্রতিষ্ঠানের খসড়া আইনে নতুন ধারা সংযোজন করে ট্যারিফ কমিশনকে আরো কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৮’-এর খসড়া করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খসড়াটি আজ সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।</p> <p>খসড়া আইনে ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে ট্রেড শব্দটি যোগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সংস্থাটির নতুন নাম দাঁড়াবে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।’</p> <p>সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ট্যারিফ কমিশনের নামের সঙ্গে ট্রেড শব্দটি যুক্ত হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত এটি চূড়ান্ত অনুমোদন মিললে বাণিজ্যসংক্রান্ত অনেক কাজই ট্যারিফ কমিশন পরিচালনা করার সুযোগ ও ক্ষমতা পাবে।</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/06 June/04-06-2018/kalerkantho-2a-2018-06-04.jpg" style="float:left; height:428px; width:272px" />আরো জানা গেছে, ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে হওয়ার কথা এমন অনেক কাজই এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় করছে। ফলে বাণিজ্যসংক্রান্ত বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও কার্যক্রম পরিচালনা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ট্যারিফ কমিশন অনেকটাই অকার্যকর। কমিশনের নিজস্ব আইনের শক্ত ভিত্তি না থাকা এবং পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবলের অভাবে কমিশনটির কার্যক্রম আশাব্যঞ্জক নয়।</p> <p>বর্তমানে প্রচলিত ১৯৯২ সালের আইনে জনবল নিয়োগে নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। এসব বাধা দূর করার জন্য খসড়া আইনটিতে নতুন ধারা সংযোজন করা হচ্ছে। যেখানে বলা হয়েছে, কমিশন গবেষণা বা সমীক্ষা সহায়তার জন্য স্বল্প মেয়াদে গবেষণা সহায়তাকারী নিয়োগ করতে পারবে।</p> <p>খসড়া আইনে বলা হয়েছে, শিল্পপণ্য ও সেবা উৎপাদনে দক্ষতা বাড়াতে কাজ করবে ট্যারিফ কমিশন। বিপণনে দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করবে বিশেষায়িত এ সংস্থা। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সুবিধা নিরূপণ, দেশীয় পণ্য রপ্তানি উন্নয়ন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকারকে ১১টি বিষয়ে পরামর্শ দেবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—শুল্ক নীতি পর্যালোচনা ও শুল্ক হার যৌক্তিকীকরণ, দেশের আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যের সিস্টেম কোড পর্যালোচনা, কাস্টমস আইনের অ্যান্টি ডাম্পিং নীতি অনুযায়ী দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাসহ অন্য বহুপক্ষীয় চুক্তি পর্যালোচনা করা, ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট ট্রেড, জিএসপি ও অন্যান্য বাণিজ্যসংক্রান্ত সুবিধা দেখা। বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য পর্যালোচনা করা, বৈদেশিক বাণিজ্যে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী দেশীয় ও বিদেশি নীতিমালা পর্যালোচনা করবে। বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহ, ডাটা বেইস সংরক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করবে ট্যারিফ কমিশন। এসবের পাশাপাশি শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শুল্কনীতি প্রণয়ন করবে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে যেকোনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।</p> <p>দেশীয় শিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনকে আরো কার্যকর করে তোলার জন্য পুনর্গঠনের দাবি উঠেছিল দীর্ঘদিন আগে। ২০১১ সালেই বিদ্যমান আইনি ধারার প্রয়োজনীয় উপাদান সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে প্রস্তাবিত সুপারিশ চূড়ান্ত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েই ছিল।</p>