<p>ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে, ধনী-গরিব, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই দিনে দিনে বড় হয়ে উঠছে মানসিক সমস্যা। কোনটা মানসিক রোগ আর কোনটা রোগ নয়, তা জানতে-বুঝতেও সমস্যায় পড়ে অনেকেই। মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসক কিংবা মনোবিদদের কাছে গেলেই পাগল হওয়া নয়; যা শুধুই সচেতনতার ব্যাপার মাত্র। তবে মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় দেশে জরুরি হয়ে পড়েছে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার ভিত্তি গড়ে তোলা এবং সেই ব্যবস্থাপনা থাকবে শহর থেকে গ্রামে। এমন বহুমাত্রিক ব্যবস্থাপনা ও জনসচেতনতার বিষয়গুলো উঠে আসে গত ৫ মে রবিবার কালের কণ্ঠ ও ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড আয়োজিত ‘মানসিক স্বাস্থ্য ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায়, যা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই বিশেষ ক্রোড়পত্র। গ্রন্থনায় কালের কণ্ঠ’র দুই প্রতিবেদক শাখাওয়াত হোসেন ও তানজিদ বসুনিয়া। ছবি : লুৎফর রহমান</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-21.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />দেশকে এগিয়ে নিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে</strong></h4> <p><strong>জাহিদ মালেক </strong></p> <p>আমি মনে করি, শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে একজন মানুষকে সুস্থ বলা যাবে না। শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবে সুস্থ মানুষকেই প্রকৃত অর্থে সুস্থ বলা যাবে। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের দেশে বহুকাল যাবৎ খুবই অবহেলিত ছিল। তবে এখন এই বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এর পেছনে একজনের অবদানও আছে। প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনি বর্তমানে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন। গত নির্বাচনের আগে আমি যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলাম। সেখানে পুতুলও গিয়েছিলেন। বিদেশে মানসিক স্বাস্থ্যকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে গিয়ে জানতে পারি। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষের পারিবারিক মূল্যবোধ ও বন্ধন নষ্ট হচ্ছে। গ্রামে সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকি, একে অপরের সহযোগিতা নিই। কিন্তু শহরে পাশের বাসার একজন মারা গেলেও আমরা জানি না। এভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। দুর্নীতি ছোঁয়াচে রোগের মতো, আত্মঘাতী বোমা হামলা, ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা—এসব মূলত মানসিক সমস্যার কারণেই সৃষ্টি হয়। দেশের মূল্যবোধ নষ্ট হলে দুর্নীতি বাড়ে। দুর্নীতি ও তদবির বাড়লে মানবাধিকরা নষ্ট হয়ে অসমতা দেখা দেয়। অসমতা বাড়লে হতাশা থেকে মানসিক স্বাস্থ্যহানি হয়। সমাজ পুরোপুরি ভোগবাদী হয়ে গেলেও মূল্যবোধ নষ্ট হয়। সামাজিক ন্যায়বিচারহীনতা ও মাদকও মূল্যবোধ নষ্ট করে। যেসব প্রতিষ্ঠান মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে সেগুলোর উন্নয়ন, সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসকও বাড়ানো দরকার। </p> <p>স্বাস্থ্য খাতের জন্য জাতীয় বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। মোট বাজেটের মাত্র ৪ শতাংশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেয়ে থাকে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই বাজেটে মানসিক রোগের জন্য বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। এই বাজেট বাড়াতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী প্রতি দশ হাজার মানুষের জন্য দশজন চিকিৎসক থাকা উচিত। কিন্তু আছে মাত্র তিনজন। চিকিৎসকের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-22.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />মনের শক্তিটা হারিয়ে ফেললে সমাজে নানা অবক্ষয় দেখা দেয়</strong></h4> <p><strong>ইমদাদুল হক মিলন </strong></p> <p>মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়েও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেবেলায় একটি উদ্ধৃতি পড়েছিলাম একজন লেখকের। তিনি বলেছিলেন, ‘কালি, কলম, মন—লেখে তিনজন।’ তার মানে একজন লেখক, একজন শিল্পী বা একজন ডাক্তার বা সমাজের যেকোনো একজন চিন্তাশীল মানুষ তাঁর মনের জায়গাটিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। শারীরিকভাবে পঙ্গু হওয়ার পরও মানসিক শক্তির কারণে বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার অনেক নজির পৃথিবীতে রয়েছে। মানুষ যদি মনের শক্তিটা হারিয়ে ফেলে তাহলে সমাজের নানা অবক্ষয় আমরা দেখতে পাই। মানুষের মন যখন আলোর দিকে, পরিচ্ছন্নতার দিকে বা ভালো কাজের দিকে যাবে, তখন আমরা দেখতে পাব দেশ, সমাজ ও জগৎ আলোকিত হয়েছে। আমি জানি মনের জায়গাটি, বাংলাদেশের মানুষ নানা ধরনের মানসিক জটিলতায় ভুগছে। সমাজের দিকে তাকালে যে দুর্নীতি, নারী ও শিশু নির্যাতন বা অনাচার দেখি তখন ভাবি যে নিশ্চয় মনের জায়গাটির অবক্ষয় হয়েছে।  সংবাদপত্রে কাজ করার সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানা অনাচারের খবর আসে আমাদের কাছে। এসব অনাচারের অন্যতম কারণ মানসিক বিকৃতি। আমরা অতীতে যেসব গৌরবের ইতিহাস সৃষ্টি করেছি তার প্রতিটির পেছনে মানসিক শক্তিটা খুব বড়ভাবে কাজ করেছে। আমরা যদি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের কথা ভাবি তাহলে বলতে হবে সেই ভাষা আন্দোলনের জন্য প্রথমে আমরা মনকে ঠিক করেছিলাম যে আমরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করব। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মনের জোরে দেশটিকে ছিনিয়ে এনেছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মনের শক্তিটা তৈরি করে দিয়েছেন। এখনো সমাজে যেসব অনাচার রয়েছে তা ঠিক হবে যদি মানুষের মনের জায়গাটি আমরা গড়ে দিতে পারি।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-23.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন সামনে চলে এসেছে</strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ </strong></p> <p>স্বাস্থ্য বিভাগে যাঁরা ভালো কাজ করেন আমি তাঁদের পাগল বলি। সেই হিসেবে আমি নিজেও পাগল। তবে এ ধরনের পাগল, কর্মপাগল আমরা আরো বেশি বেশি চাই। এ ধরনের পাগল বেশি বেশি হলে দেশটার পরিবর্তন হবে। তবে মানসিকভাবে অসুস্থ না হলেই হলো। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে শারীরিক স্বাস্থ্যকেই অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশে একই অবস্থা। এটার জন্য বাংলাদেশ এককভাবে দায়ী নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এর জন্য দায়ী। তারা এখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেও এত দিন এ বিষয়ে কিছু বলেনি। এর পেছনে হলো শারীরিক রোগের আধিক্য। যক্ষা, কলেরা, ডায়রিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়ায় আসলে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে পারেনি। উন্নত দেশগুলো শারীরিক রোগগুলোকে অনেক আগেই জয় করেছে। তাই তারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এখন অনেক উন্নতি করতে পেরেছে। আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার অর্থ এই নয় যে আমাদের শত শত প্রতিষ্ঠান বানাতে হবে। বরং মানুষ যেখানে বসবাস করে সেখানে এই বিষয়টি নিয়ে যেতে হবে। আমাদের জন্য আশার বিষয় হলো—প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এখন অটিজমের চেয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে ইতিমধ্যে আমরা একটা ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটির কাজ হলো—বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা। এই কর্মকৌশলটি এক বছরের পরিবর্তে ছয় মাসের মধ্যে প্রণয়ন করতে কাজ করছি আমরা। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করলে শুধু স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করলে হবে না। শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, মহিলা ও শিশু, শ্রম ও কর্মসংস্থান, শিল্প, বাণিজ্যসহ সব কটি মন্ত্রণালয়কে আনতে হবে। এসব সংস্থাকে যুক্ত করতে না পারলে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করা যাবে না।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-24.jpg" style="float:left; margin:8px" />পরিবারে মনের শক্তি জোগানোর মতো একজন মানুষ থাকলেও অনেক কিছু করতে পারে</strong></h4> <p><strong>মোস্তফা কামাল</strong></p> <p>মনের শক্তি কতটা কাজে লাগে তার অনেক উদাহরণই আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে দেখতে পাই। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দেখি, তিনি যে সাহসী পদক্ষেপগুলো নেন তা মানসিক শক্তি না থাকলে সম্ভব নয়। বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পরও পদ্মা সেতুর মতো বিশাল সেতু বানানোর কাজে হাত দিতে পেরেছেন মানসিক শক্তির কারণেই। অর্থনৈতিক শক্তি আমরা জোগাচ্ছি বা ট্যাক্সের টাকায় হচ্ছে। কিন্তু সাহস নিয়ে এত বড় প্রকল্প করাটা মানসিক শক্তিরই বিষয়। চিকিৎসার কথা যদি বলি, দেশে এবং বিদেশে অনেক গুণী চিকিৎসককে দেখেছি যে কোন রোগের চিকিৎসার জন্য গেলে রোগীকে আগে মানসিক কাউন্সেলিং দিয়ে থাকেন, যা থেকে রোগী সাহস ও শক্তি সঞ্চার করেন। মানসিক শক্তি অনেক ক্ষেত্রে যেকোনো রোগীকে অর্ধেক সুস্থ করে তুলতে পারে।</p> <p>আমাদের দেশে কর্মক্ষেত্রেও দেখি খুব বেশি মানসিক চাপ। এই মানসিক চাপের কারণে মতিভ্রম হয়ে গিয়ে নিজের কাজটাও ঠিকমতো করতে পারে না অনেকে। প্রতিটি পরিবারেই কোনো না কোনো মানসিক সমস্যা থাকে। আমরা আমাদের সন্তানকে মানসিক সাপোর্টটা দিই না। স্কুলে প্রথম হওয়া, জিপিও ৫ পাওয়াসহ নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করি। কিন্তু একজন মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ হওয়ার ব্যাপারে কখনো বলি না আমরা। পরিবার ও কর্মক্ষেত্রের এই চাপ থেকে উত্তরণ ও মানসিক শক্তি কিভাবে অর্জন করা সম্ভব সেই পথ বের করাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের দেশে যেসব সংকট আছে তা মোকাবেলায় মানসিক শক্তি দরকার। একটি পরিবারে মানসিক শক্তি দেওয়ার মতো একজন মানুষ থাকলেও অনেক কিছু হতে পারে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-25.jpg" style="float:left; margin:8px" />ব্যক্তি ও সমাজের মানসিক উন্নয়নের জন্য শরিক হতে পারায় অমি কৃতজ্ঞ </strong></h4> <p><strong>মো. আরিফ হোসেন </strong></p> <p>মানসিক স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করে পরিপূর্ণভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। তাই দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সারা পৃথিবীতে। বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেরকারি উদ্যোক্তারাও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে। মানসিক স্বাস্থ্য আইন পাসের মধ্য দিয়ে সরকারও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পথ সুগম করেছে। এখন সরকারি-বেসরকারি এসব উদ্যোগের সমন্বয়ের মাধ্যমে খাতটিকে এগিয়ে নিতে হবে। ব্যক্তি ও সমাজের মানসিক উন্নয়নের জন্য শরিক হতে পেরে কৃতজ্ঞ আমরা। আপনাদের সঙ্গে থেকে ব্যক্তি ও সমাজের মানসিক উন্নয়নের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত। আপনাদের মূল্যবান তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও গুরুত্বপূর্ণ অভিমত সামনের দিনগুলোতে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে। আমি বিশ্বাস করি, সবার সহযোগিতায় মানসিক স্বাস্থ্য খাতটি এগিয়ে যাবে বহুদূর।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-26.jpg" style="float:left; margin:8px" />মানসিক স্বাস্থ্যের পেশাজীবী হওয়া অনেক জরুরি ও সম্মানের </strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী</strong></p> <p>মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার ব্যাপারে আমি খুব আশাবাদী। যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানে না, তাদের জানাতে হবে। টেলিভিশনে যাঁরা নিয়মিত কথা বলেন, গণমাধ্যমে কাজ করেন, তাঁরাই আমাদের মনের কথাগুলো বলে দিবেন সবার কাছে। মানসিক রোগের চিকিৎসকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আর মানসিক স্বাস্থ্যের পেশাজীবী হওয়া কতটা জরুরি ও সম্মানের তা প্রচার করতে হবে। আর এ সচেতনতা বৃদ্ধির কাজটি গণমাধ্যম করতে পারে। বল এখন আমাদের কোর্টে। কারণ মানসিক স্বাস্থ্য আইনের মাধ্যমে আমাদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই আইনের আওতায় সরকারি কোনো দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করে কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারব। দক্ষ জনবল পেতে দেরি হলেও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে অন্য কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারব। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যারা ভুল শিখছে তাদের প্রতি ইতিবাচক ও সঠিক বার্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। মানসিক সমস্যা থাকলে সব ধরনের কাজ থেকে মানুষকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু এটা রোগ আরো বাড়িয়ে দেয়। কাজ করার সুযোগ দিয়েও মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করানো যায়।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-27.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />আইনের মাধ্যমে এখন দেশে মানসিক রোগীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে </strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী </strong></p> <p>এই গোলটেবিল বৈঠকে নিমন্ত্রণ করার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে কালের কণ্ঠ ও ওরিয়ন গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই। মানসিক স্বাস্থ্য নানা কারণে অবহেলিত ছিল। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য আইন পাস হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে রোগীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো। আইন প্রণয়ন বেশ জটিল প্রক্রিয়া হলেও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় দক্ষ কর্মী তৈরি না হলে ১৬ কোটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্ভব হবে না। দেশে ১১ লাখ শিশু এবং ১৬ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় রয়েছে। এত বিশালসংখ্যক রোগীর চিকিৎসার জন্য জনবল বাড়াতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মানসিক রোগের পর্যাপ্ত ওষুধ কিনতে হবে সিভিল সার্জনদের। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যের বরাদ্দ বাড়াতে হবে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-28.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />মা-বাবা তাঁদের দায়দায়িত্ব জানেন কি না  সেদিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত</strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম </strong></p> <p>মানসিক স্বাস্থ্যের খুব অবনতি হয়ে গেলে আমরা মানসিকভাবে খুব অসুস্থ হয়ে যাই, কিন্তু তার আগেই দুটি ক্ষেত্র নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে; পুরো জাতির মানসিক স্বাস্থ্য যাতে তদারকি করা হয় যে তারা ভালো আছে কি না, অবক্ষয়ের জায়গাটা কোথায় গেছে এবং আমরা কিভাবে প্রতিরোধ করব, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব থেকে শুরু করে আমাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কী ধরনের চর্চা হচ্ছে। একটি সন্তান নেশায় আসক্ত হওয়ার পরে কিন্তু শুধু একটি সন্তানই অসুস্থ হচ্ছে না, গোটা পরিবার হচ্ছে ও গোটা সমাজ অসুস্থ হচ্ছে। কাজেই আমাদের গোড়ায় হাত দিতে হবে। যেখানে আসলে পিতৃত্ব-মাতৃত্বটা কেমন হচ্ছে এবং এর জন্য কোনো কর্মসূচি আছে কি না তা দেখতে হবে। শুধু সন্তান জন্মদান করা মানেই মা-বাবা হওয়া নয়। মা-বাবা হওয়া ও সন্তানের জন্ম দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা কিভাবে আদর্শ বাবা-মা হবো, শিশুরা কিভাবে সুস্থ পরিবেশে বেড়ে উঠবে এবং এর পেছনে আমাদের কী কী কাজ রয়েছে সেটি না জেনেই আমরা মা-বাবা হচ্ছি। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকতে হবে, সমাজে অবদান রাখতে হবে, সমাজের ও দেশের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। পুরনো পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমি ধরে নিচ্ছি যে দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ অসুস্থ। কিন্তু বাকি ৭৫ শতাংশ মানুষ কেমন আছে তা নিবিড়ভাবে জানার সুযোগ পাচ্ছি। এখন শুধু ড্রাগ এডিকশন নয়, এখন কিন্তু পর্ন এডিকশন, সেক্স এডিকশন, রিলেশনশিপ এডিকশনসহ অনেক ধরনের এডিকশনের শাখা-প্রশাখাই বদলে গেছে। মা-বাবা তাঁদের দায়দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন কি না এটা নিয়ে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাঁরা কী করবেন, কী করবেন না, একটি বাচ্চাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে শুধু তার শরীরের স্বাস্থ্য দেখলে হবে না, তার মনের স্বাস্থ্য গড়ে উঠছে কি না এটা দেখতে হবে। তার আগে মা-বাবাকে সুখী দম্পতি হতে হবে। নৈতিক শিক্ষা কারিকুলামে ঢুকিয়ে বাচ্চাদের শেখানো যায় না। বাচ্চারা কিন্তু পড়ে শেখে না, দেখে শেখে। কাজেই এই জায়গাতে শিক্ষকদেরও একটা বিশেষ ভূমিকা আছে, তাদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-29.jpg" style="float:left; margin:8px" />মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় আমাদের লোকবলের সংকট আছে </strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল</strong></p> <p>জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আমরা কিছু প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি, সেখানে আমরা হুজুরদেরও প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম। এখানে আমরা খুব ভালো ফলাফল পেয়েছি। তারা যখন প্রশিক্ষণ পেল তারা যেভাবে রোগী রেফার করল সেটি বিশাল বড় একটি ইতিবাচক দিক। আমাদের এ বিষয়টি দেখে ইন্ডিয়াতে পুরোহিতদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো। আমাদের শিক্ষক, পুলিশ, উকিল তাদের সবাইকে যদি আমরা প্রশিক্ষণ দিতে পারি তাহলে আমাদের কেইস আইডেন্টিফিকেশনটা খুব সহজ হয়। অন্যান্য ডিসিপ্লিনের ৪৮ জন আমাদের এখানে বর্তমানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন যার মধ্যে স্কুল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সিলিং এডুকেশন সাইকোলজিস্টরা আছেন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টসহ অনেকেই আমাদের সব কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। যখন আমরা প্রাথমিক প্রতিরোধের কথা বলব সেই প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আমরা স্কুল পর্যায় থেকে কী শুরু করব। আমার বন্ধু কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল বলেছেন মনের শক্তির কথা। মনের শক্তি হলো আমাদের ভেতরের শক্তি, আমার উৎসাহ ও প্রণোদনা শক্তি, যা আমাকে লক্ষ্যের দিকে টেনে নিয়ে যায়। সেই ফোর্স মোবাইল ফোনের দখলে চলে যায়, মাদকের দখলে চলে যায়; সুতরাং সে জীবন থেকে লাইনচ্যুত হয়ে যায়। তার পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়, রাতে ঘুমায় না, পরের দিন ক্লাসে গিয়ে ঘুমায়। আর এসব সমস্যার জন্য বাচ্চার মা-বাবারা তাঁদের আমাদের কাছে নিয়ে আসে। আমাদের সাংস্কৃতিক জীবনের পরিবর্তনের ধারায় এমনটি হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। আমাদের লোকবলের সংকট আছে, ইতিমধ্যে আমরা ৬৭টি শিক্ষকের পদের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্রও দিয়েছি।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-30.jpg" style="float:left; margin:8px" />অসুস্থতার যত কারণ রয়েছে তার মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে অসুস্থতা দ্বিতীয় </strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব </strong></p> <p>মানসিক রোগ নিয়ে কাজ করতে হলে মানসিক শক্তিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর মানসিক শক্তি জোগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রভাবক কাজ করে। সারা বিশ্বে ৪৫০ মিলিয়ন মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ছিল। বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১৬.১ শতাংশ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। শিশুদের মধ্যে মানসিক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ১৮.৪ শতাংশ। মোট অসুস্থ মানুষের ১২.৩ শতাংশ মানসিক রোগে আক্রান্ত। অসুস্থতার যত কারণ রয়েছে তার মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে অসুস্থতা দ্বিতীয়। বৈষম্য, উপেক্ষা ও কলঙ্ক এই তিন কারণে মানসিক সমস্যা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ব্যয় মাত্র ২.৪ টাকা। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যে এক হাজার ৮৯৩ জন পেশাদার রয়েছে। প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য ১.১৭ জন চিকিৎসক রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যে প্রশিক্ষিত সেবিকা রয়েছে মাত্র ১২ হাজার। মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসায় সুপারিশগুলো হলো মানসিক স্বাস্থ্য আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন। সমন্বিত কর্মসূচি প্রণয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পদ বাড়ানো এবং মানসিক স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মীর জন্য প্রণোদনা বাড়ানো। মানসিকভাবে সুস্থ থাকার পূর্বশর্ত হলো মন। একটি নৌকা যেমন সব কিছু থাকার পরও মাঝি না থাকলে সঠিকভাবে চলতে পারে না, তেমনি সুস্থ মন ছাড়া একজন মানুষ সুস্থ থাকতে পারে না।</p> <p>১৮ শতাংশ শিশুর মধ্যে মানসিক সমস্যা থাকে। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ জন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে কাজে অনুপস্থিত থাকে। এ ছাড়া প্রতি এক লাখে ছয়জন আত্মহননের মতো পন্থা বেছে নেয়। এসব মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেই হয়ে থাকে। </p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-31.jpg" style="float:left; margin:8px" />যারা প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করি তাদের মানসিক উৎকর্ষের প্রয়োজন </strong></h4> <p><strong>সৈয়দ আলমগীর </strong></p> <p>আমরা যারা প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করি তাদের মানসিক উৎকর্ষের অনেক প্রয়োজন। প্রাইভেট সেক্টরে কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠিত পরামর্শ নেই, প্রতিদিন আমরা যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়ে থাকি সেগুলো প্রতিদিন নিখুঁতভাবে সমাধান করতে হয়। যারা এই কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের মানসিক উৎকর্ষ অনেক প্রয়োজন। আমরা সৃজনশীলতা নিয়ে কাজ করি, বিপণন কৌশল নিয়ে কাজ করি, ক্রেতাকে কিভাবে ভালো সেবা দেওয়া যায় সেটি নিয়ে কাজ করি। সব কিছুর সামগ্রিক মান; মান বলতে শুধু পণ্যের মান নয়, আমাদের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবার মানও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। প্রতিষ্ঠিত ও সফল প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন তারা তাদের সেবার মান ঠিক রাখছে। আমরাও আমাদের কর্মীদের মানসিক বিকাশের জন্য বিভিন্ন উদ্দীপনা দিয়ে থাকি।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-32.jpg" style="float:left; margin:8px" />বাংলাদেশে ৭৮ শতাংশ লোক মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা পাচ্ছে না </strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক আলম </strong></p> <p>আমাদের সমস্যা অনেক, কিন্তু এর মধ্যেও কত শতাংশ লোক চিকিৎসা পাচ্ছে সেটাও আমরা গবেষণা করে বের করেছি। বাংলাদেশে ৭৮ শতাংশ লোক মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা পাচ্ছে না। এই যে ৭৮ শতাংশ লোক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না তাদের কাছে আমরা কিভাবে পৌঁছাব, এটি নিয়ে আমার কিছু পরামর্শ আছে। আমাদের সমস্যা অনেক, কিন্তু এখন আমাদের আগে অগ্রাধিকার ঠিক করা দরকার। এ জন্য আমাদের কিছু স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্য ঠিক করা দরকার। স্বল্প মেয়াদি লক্ষ্যের মধ্যে প্রথমেই আমাদের লোকবল বাড়ানো দরকার। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকবলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের দুই ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ যা ডাক্তার, নার্স কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হয় এবং দীর্ঘ প্রশিক্ষণ যা ৮৯ দিনব্যাপী চলে ডাক্তারদের। এর উদ্দেশ্য  হলো জেলাপর্যায়ে যেহতু আমাদের পর্যাপ্ত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ নেই তাই আমরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দিয়ে সে জায়গাটা পূরণ করব। পরবর্তী সময়ে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের ওই জায়গায় স্থানান্তর করা যেতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো আমাদের জেলাপর্যায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। আমরা আসি ঢাকা মেডিক্যালে, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অথবা পাবনায়; কিন্তু জেলাপর্যায়ে সেই সুবিধাটা নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, জেলাপর্যায়ে ডাক্তারদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সাত দিন নয়, বরং তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রটোকল এরই মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। জেলাপর্যায়ে মানসিক রোগের ওষুধের অপর্যাপ্ততা নিরসনে এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি নির্দেশনা দরকার। সরকারি-বেসরকারি মোট ১০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও আমার মনে হয় না ২০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা হয়। এমবিবিএস ডাক্তাররা যদি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু না পড়েন তাহলে তাঁরা এই বিষয়ে জানবেন কেমন করে? অথচ সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় ধরেই নেওয়া হয় যে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে জানেন। তাই সব প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে একটি ইউনিট খোলা যায় কি না এটা নিয়ে ভেবে দেখতে হবে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-33.jpg" style="float:left; margin:8px" />যারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করবে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যটাও দেখা জরুরি</strong></h4> <p><strong>অধ্যাপক ডা. নাহিদ মেহজাবিন মোরশেদ </strong></p> <p>মানসিক স্বাস্থ্য যে অবহেলিত এটা বারবার আমরা বলছি। কিন্তু এখান থেকে আসলে কিভাবে আমরা বের হতে পারব? আমরা বারবারই বলছি যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের ধারণা থেকে বের হতে হলে আমাদের (মানসিক স্বাস্থ্যের) সার্ভিসগুলো বাড়াতে হবে। কিন্তু এই সার্ভিসগুলো বাড়াতে যে ম্যানপাওয়ার বাড়াতে হবে, সেই ম্যানপাওয়ারের যারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করবে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যটাও কিন্তু দেখা খুব জরুরি। যেমন—যখন আমরা সার্ভিস দেই তখন আমাদের বসার জায়গাটাও ভালো থাকে না, প্রচণ্ড গরমে দেখা গেছে টয়লেট ফ্যাসিলিটিস নেই। আমরা মহিলারা যখন দায়িত্ব পালন করব দেখা যাচ্ছে আমাদের নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। দেখা যাচ্ছে ২৪ ঘণ্টা হয়তো কাজ করতে হচ্ছে, রাতে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে; কাজেই দেখাই যাচ্ছে যে যারা এসব (মানসিক স্বাস্থ্য) নিয়ে কাজ করছে তাদেরও সুবিধা দেওয়ার একটা ব্যাপার রয়েই গেছে। যখন একজন সার্ভিস দেবে সে যখন নিশ্চিন্ত মনে কোনো স্ট্রেস ছাড়া সার্ভিস দেবে সেটা খুবই ফলদায়ক ও কার্যকর হবে। সারাক্ষণ চাপের মধ্য দিয়ে, দোষারোপের মধ্য দিয়ে আসলে সার্ভিস দেওয়াটা খুব একটা স্বাস্থ্যকর হয় না। কাউকে কিছু বলতে গেলে বলে ‘তুমি তো মানসিক স্বাস্থ্যের ডাক্তার। তোমার কেন মন খারাপ হবে?’ বিষয়টি হলো এ রকম যে স্বাস্থ্য ডাক্তার, অ-ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক কাউকে দেখে না।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-34.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />এসডিজি অর্জনে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই</strong></h4> <p><strong>ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ </strong></p> <p>আমরা যে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে যাচ্ছি, সেটি অর্জন করতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এসডিজির তিন নম্বরে উল্লেখ করা ‘ওয়েল বিং’, আট নম্বরে ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধ’ এবং ১০ নম্বরে যে লক্ষ্যটি আছে ‘সাম্যভাব/ন্যায্যতা’ এই সব কিছুকে কেন্দ্র করে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দিলে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্ভব হবে না, নারী-পুরুষের, ধনী-দরিদ্রের সমতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ সব কিছুর সঙ্গে, আত্মহত্যার সঙ্গে এই এসডিজি অর্জন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কিন্তু একটি স্বর্ণযুগ চলছে। আমরা যদি এই মুহূর্তটিকে কাজে লাগাতে না পারি তাহলে কিন্তু ভবিষ্যতে আর পারব না। এ রকম অনুকূল পরিবেশ, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি; প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছেন তাই এটিই আমাদের উপযুক্ত সময় মানসিক স্বাস্থ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আত্মহত্যা প্রতিরোধ মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম একটি উপাদান, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের খসড়া পলিসিতে আত্মহত্যা প্রতিরোধের অনেক কর্মকৌশল নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। আপনারা জেনে নিশ্চয়ই আনন্দিত হবেন যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই জাতীয় পর্যায়ের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকৌশল কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির দুটি সভা এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মকৌশলেও কিন্তু আত্মহত্যার বিষয়ে তিন-চারটি জায়গায় আত্মহত্যা প্রতিরোধের বিষয়গুলো নিয়ে বলা হয়েছে। ২০১৮ সালে আমরা ‘আত্মহত্যা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের করণীয়’ শীর্ষক ১০টি কর্মশালার আয়োজন করি যেখানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২০০ জন অংশগ্রহণ করেন। মজার বিষয় হলো, তার মধ্যে একটি কর্মশালা কালের কণ্ঠের এই কক্ষেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে গবেষণায় আমরা দেখতে পাই যে প্রায় ৬৫টি প্রতিবেদনে আমাদের কর্মশালার প্রতিফলন ঘটেছিল।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-35.jpg" style="float:left; height:291px; margin:8px; width:250px" />শিশু, কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বেশি নজর রাখতে হবে</strong></h4> <p><strong>ডা. মেখলা সরকার </strong></p> <p>আমাদের শিশু কিশোর এবং তরুণ প্রজন্ম, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে ডাব্লিউএইচওর হিসাব মতে ১১ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত কিশোর এবং ২৪ বছর পর্যন্ত তরুণ বলে আমরা জানি। এই সময়টা মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে মানসিক গঠনের যে মূল অংশ অর্থাৎ আমাদের বেড়ে ওঠার সময় মানসিক গঠন বা ব্যক্তিতে বৈশিষ্ট্য তৈরি হয় সেটা কিন্তু মোটামুটি ১৮ থেকে ১৯ বছরেই এবং এই সময়ের মধ্যেই কিন্তু তার মানসিক বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ তার যখন প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা, তার অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক, তার উৎপাদনশীলতা কিংবা তার জীবনের সঙ্গে তার যে সংশ্লিষ্টতা সেটি কি রকম আচরণ করবে সেটা কিন্তু তার এই ব্যক্তিক বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করবে। তারুণ্যের বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে যেমন আবেগের প্রাধান্য, ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এবং কৌতূহল প্রবণতা—এই বয়সটাকে যেমন অনন্য করে তোলে, তেমনি আবার এই বয়সটা নানা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। যেহেতু একটা ট্রাজিশন সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা পার করছি, তাই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে ভাবার বিষয়টা অত্যন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ১০-১৫ বছর আগে এতটা চিন্তা করতাম না, সেখানে কিন্তু একটা নতুন জিনিস বিশেষ করে প্রযুক্তি, সাইবার ক্রাইম, সাইবার বুলিং এই শব্দগুলো আমাদের জীবনে চলে আসছে এবং এই বিষয়টা কিন্তু কোনো না কোনোভাবে আমাদের জীবনের সঙ্গে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। এক-দেড় যুগ আগে আমাদের শিশুরা যেভাবে বেড়ে উঠত আর এখন যেভাবে বেড়ে উঠছে, তার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। নতুনদের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা কমে আসছে, একই সঙ্গে আমাদের জীবনযাপনের ধরনেও কিছু পরিবর্তন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ যৌথ পরিবার ভেঙে এখন একক পরিবারের প্রাধান্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের শিশু-কিশোরের জন্য আগে প্রচুর পরিমাণে খেলার জায়গা ছিল। ওই জায়গাগুলোর পরিমাণ জ্যামিতিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই জিনিসগুলোকে আমরা বলি ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রটেক্টিভ ফ্যাক্টর’। একটা শিশু যত খেলাধুলার সুযোগ পাবে, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে যত বেশি মেলামেশার সুযোগ পাবে, সেটি তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে তত বেশি সাহায্য করবে, আত্মমর্যাদা তৈরি করতে সাহায্য করবে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-36.jpg" style="float:left; margin:8px" />মোবাইল ফোন অ্যাডিকশনে আক্রান্ত রোগী বেশি পাচ্ছি</strong></h4> <p><strong>ডা. নিগার সুলতানা </strong></p> <p>সিনিয়র কনসালট্যান্ট, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা</p> <p>আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এখানে আসলেই অনেক বেশি সীমাবদ্ধতা অবশ্যই আছে, তবে সেটা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। আমার এখানে শুধু আমি আউটপেশেন্ট করতে পারছি এবং ইনপেশেন্ট আমাদের হসপিটালে এখনো আমরা শুরু করতে পারিনি। আমাদের এখানে পাঁচজন সাইকোলজিস্ট একসাথে কাজ করেন। যথেষ্ট রোগী আসছে এবং যতটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি সাহায্য করতে। যেসব রোগী আসছে তাদের মধ্যে ডিপ্রেশন বাই পোলার যা যা হতে পারে সবই আছে এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো, যেসব রোগী আসছে তার মধ্যে মোবাইল এডিকশন আছে এমন রোগীর সংখ্যা বেশি। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। বাচ্চাদের হাতে কেমন করে স্মার্টফোন যাচ্ছে সে বিষয়টি নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। আমার মনে হয় এ বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকা উচিত যে একটি বয়সের আগ পর্যন্ত ওরা স্মার্টফোন ব্যবহার করবে না। মা-বাবার অবশ্যই ছোট বাচ্চাদের সাথে খুব ভালো যোগাযোগ থাকতে হবে। এবং স্কুলের শিক্ষকদের সাথে মা-বাবার একটা গাইডেড যোগাযোগ থাকা দরকার, যার মাধ্যমে স্কুলে বাচ্চার আচরণ কেমন সেটি জানা যায়। এখানে শিক্ষকদেরও গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা আছে।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-37.jpg" style="float:left; margin:8px" />অনেকেই মনে করে, মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা শুধু ঘুমের ওষুধ দিয়ে থাকেন</strong></h4> <p><strong>ডা. মো. আসাদুজ্জামান</strong></p> <p>অনেকেই মনে করেন মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা শুধু ঘুমের ওষুধ দিয়ে থাকেন। এখানে একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো যাঁরা অন্যান্য ডিসিপ্লিনের ডাক্তার, তাঁরা ওষুধ ছাড়া চিকিৎসা করতে পারেন না। কিন্তু আমরা যাঁরা মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত আছি, আমরা এটা বলতে পারি যে আমাদের বেশির ভাগ রোগীর বিশেষ করে নিউরিসিসে যারা ভোগে তাদের ওষুধ খাওয়ানোর অনেক ক্ষেত্রে কোনো প্রয়োজন নেই। তার জন্য সাইকোথেরাপি, বিহেভিয়ার থেরাপি এবং কাউন্সিলিং যথেষ্ট।</p> <p> </p> <h4><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/08-05-2019/Kalerkantho_19-05-08-38.jpg" style="float:left; margin:8px" />ওষুধটা যেন মানসম্পন্ন হয়, নিরাপদ হয়, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে</strong></h4> <p><strong>মোহাম্মদ মিজানুর রহমান</strong></p> <p>যেহতু অনেক কিছুই আলোচনা হয়েছে, তাই আমি ফার্মাসিউটিক্যালস নিয়েই একটু আলোচনা করতে চাই। আমরা ওষুধ উৎপাদনকারী হলেও এটা বিশ্বাস করি যে ওষুধ ছাড়াই মানসিক রোগের চিকিৎসা হলে সেটা ভালো। কারণ মানবদেহে কেমিক্যাল অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। সুতরাং এটা ছাড়া যদি কাউন্সেলিং, সাইকোথেরাপি কিংবা অন্যভাবে এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয় সেটা অবশ্যই ভালো। যদি কোনো কারণে ওষুধের দরকার হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করি ওষুধটা যেন মানসম্পন্ন হয়, নিরাপদ হয়, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ ওষুধ পৌঁছে দিতে ওষুধ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বদ্ধপরিকর।</p> <p> </p> <h3><strong>যাঁরা অংশ নিয়েছেন</strong></h3> <p><strong>জাহিদ মালেক, এমপি</strong></p> <p>মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়</p> <p> </p> <p><strong>ইমদাদুল হক মিলন</strong></p> <p>সম্পাদক, কালের কণ্ঠ</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ</strong></p> <p>মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর</p> <p> </p> <p><strong>মোস্তফা কামাল</strong></p> <p>নির্বাহী সম্পাদক, কালের কণ্ঠ</p> <p> </p> <p><strong>মো. আরিফ হোসেন </strong></p> <p>সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী</strong></p> <p>চেয়ারম্যান, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল, ডিস-এবিলিটি প্রটেকশন ট্রাস্টি বোর্ড</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী </strong></p> <p>সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্ট</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম </strong></p> <p>মনোবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল</strong></p> <p>পরিচালক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব </strong></p> <p>চেয়ারম্যান, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় </p> <p> </p> <p><strong>সৈয়দ আলমগীর </strong></p> <p>ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডস</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক আলম </strong></p> <p>সাবেক পরিচালক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল</p> <p> </p> <p><strong>অধ্যাপক ডা. নাহিদ মেহজাবিন মোরশেদ </strong></p> <p>মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়</p> <p> </p> <p><strong>ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ </strong></p> <p>সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল</p> <p> </p> <p><strong>ডা. মেখলা সরকার </strong></p> <p>সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল</p> <p> </p> <p><strong>ডা. নিগার সুলতানা </strong></p> <p>সিনিয়র কনসালট্যান্ট, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা</p> <p> </p> <p><strong>ডা. মো. আসাদুজ্জামান</strong></p> <p>সিনিয়র কনসালট্যান্ট, সিটি হাসপাতাল</p> <p> </p> <p><strong>মোহাম্মদ মিজানুর রহমান</strong></p> <p>উপমহাব্যবস্থাপক (বিপণন), ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড</p>