ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

আশ্রয়ণ প্রকল্পে হরিলুট

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আশ্রয়ণ প্রকল্পে হরিলুট
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

দুর্নীতি-অনিয়মের ধরন

দরপত্র ছাড়াই কাজ, শর্ত মানা হয়নি, তদবিরে তালিকা, নথিতে রাখা হয়নি বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তির নাম, ঘুষে তোলা হয়েছে নাম

ভোগান্তি

বিভিন্ন স্থানে ঘরে তালা, উড়ে গেছে ঘরের টিন, চালা দিয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি, কোথাও হচ্ছে ছাগল পালন

গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বেশুমার লুটপাট হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান ছিলেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)। জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলায় দরপত্র আহবান না করেই তাঁরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, শর্ত না মেনে মাটি ভরাট, ঘুষের বিনিময়ে ঘর বরাদ্দসহ নানাভাবে কামিয়েছেন অবৈধ অর্থ।

তাঁদের সঙ্গী ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মিত ঘরগুলোর বেশির ভাগই বছর না যেতেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, চূয়াডাঙ্গা, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পেয়েছেন, কোথাও ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে, টিনের চালা দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে, কোথাও ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। কোথাও ঘরগুলোয় ঝুলছে তালা।
কোথাও পালন করা হচ্ছে ছাগল। 

ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনে আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রকল্প নেয়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে আবারও ক্ষমতায় আসার পর আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেয়। ২০২০ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প জোরেশোরে বাস্তবায়ন শুরু হয়।

গত বছর ক্ষমতায় থাকার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রচার করেছিল, ৫৮ জেলা ও ৪৬৪ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প নেওয়া হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে ঘর দেওয়ায় ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ পুনর্বাসিত হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসনের সংখ্যা ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫।

জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় প্রধান ইউএনও। তিনি সভাপতি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সদস্যসচিব, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকেন সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা রাখা হয়।

পীরগাছায় বেশুমার দুর্নীতি : রংপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণের ৪৩০টি ঘর নির্মাণের বরাদ্দ যায় রংপুরের পীরগাছায়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় তিন লাখ চার হাজার টাকা। প্রথম ধাপে ১১০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ২০২৪ সালের শেষে নির্মাণ শুরু করা হয় ৩২০টি  ঘরের। পরিপত্র অনুসারে প্রকল্প এলাকায় ৫-৬ ফুটের পরিবর্তে দেড়-তিন ফুট উঁচু করে মাটি ভরাট করা হয়। শ্রমিক দিয়ে নিয়ম থাকলেও মাটি ভরাট করা হয় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে। তাতেই প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে পীরগাছার ইউএনও নাজমুল হক সুমনের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত মাটি চার কোটি টাকায় বিক্রি করেন তিনি।  জানা গেছে, তিনি ইউএনও থাকাকালে উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক হাফিজার রহমান সংগ্রামকে সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়ে শারলার বিল ও অন্নদানগর কলেজসংলগ্ন জমিতে ঘর নির্মাণ করান। শারলার বিলে তৈরি করা হয় ৪২৫টি ঘর। শর্ত অনুসারে, ৪০০ বর্গফুট আয়তনের দুই কক্ষের সেমিপাকা একক ঘর নির্মাণ করা হয়নি। ঘর বরাদ্দে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন তখনকার ইউএনও সুমন ও তাঁর সহযোগীরা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ইউএনও নাজমুল হক সুমন সব কিছু বলতে পারবেন। তবে পীরগাছার তখনকার ইউএনও নাজমুল হক সুমন বলেন, ড্রেজার দিয়ে ফিনিশিং করা হয়েছে। সব কাজ করা হয়নি। অর্থ আত্মসাৎসহ অন্যান্য বিষয়ে তিনি জবাব দেননি।

ধুনটে সঞ্চয়ের নির্লজ্জ লুট : স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭৮টি ঘর নির্মাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার ধুনটের সাবেক ইউএনও সঞ্চয় কুমার মোহন্তের বিরুদ্ধে। ঘর বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহহীনের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া ছাড়াও প্রকল্প থেকে কম হলেও দুই কোটি টাকা লুট করেছেন। ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়াই তিনি ঘর নির্মাণ করিয়েছেন। ঘুষের বিনিময়ে সঞ্চয় ঘর বরাদ্দ দেন। ফলে প্রকৃত গৃহহীনরা ঘর পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ধুনটে ২০২০-২১ অর্থবছরে মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় চার ধাপে ৩৯৯টি ঘর নির্মাণে সাত কোটি ৯৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউএনও কার্যালয়ে ৩৯৯টি ঘরের মধ্যে ২৬১টি বরাদ্দের সুবিধাভোগীর নামের তালিকা পাওয়া গেছে। বাকি ৭৮টি ঘরের তথ্য পাওয়া যায়নি। অর্থ বরাদ্দ ও বিতরণের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তাও এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ইউএনও সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন ধুনট উপজেলা ইটভাটার মালিকরা। মথুরাপুরে এসএসএস ইটভাটার মালিক শাহা আলীর কাছ থেকে প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ৬০ হাজার ইট চান। ইট দিতে না পারায় তখনকার ইউএনও সঞ্জয় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন। ধুনটের সাবেক ইউএনও ও বর্তমানে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সঞ্চয় কুমার মোহন্ত কালের কণ্ঠকে বলেন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমি বরাদ্দ অনুযায়ী ৭৮টি ঘর নির্মাণ করে ভূমি ও গৃহহীনদের দিয়েছি।

দামুড়হুদায় দরপত্র ছাড়াই মালামাল বিক্রি : চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, গত বছরের জুলাইয়ে ২৬৪টি ঘর নির্মাণ করা হয় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায়। নির্মাণের দুই মাসেই বেশির ভাগ ঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল। বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষায় এসব ঘরে বসবাসও করতে পারবেন না। কারণ সামান্য বৃষ্টিতেই চালা দিয়ে পানি পড়ে। একই স্থানে ১৫টি পুরনো টিন শেডের ঘর ভাঙার পর সেগুলোয় ব্যবহৃত টিন, লোহা ও ইট লোপাট হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র ছাড়াই প্রকল্পের পুরনো ঘর ভেঙে মালামাল লোপাট করেন দামুড়হুদার সদ্য সাবেক ইউএনও মমতাজ মহল। নতুন ঘর পাওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, ঘর নির্মাণে সিমেন্টসহ বিভিন্ন সামগ্রী ছিল নিম্নমানের। ফলে নির্মাণের এক মাসের মাথায় ঘরে ফাটল দেখা দিতে থাকে। কোথাও কোথাও দেবে গেছে ঘর। ঘরে টিনের চালে ফিনিশিং দেওয়া হয়নি। একটি ঘরের মালিক মর্জিনা খাতুন বলেন, আগে টিন শেডের ঘরেই ভালো ছিলাম। নতুন ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে। কয়েক দিন আগে আমার ঘরের চালাও ঝড়ে উড়ে গেছে। দেয়ালেও আছে ফাটল। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন, তৎকালীন ইউএনও মমতাজ মহল ঘরগুলো নির্মাণ করিয়েছেন। আমি নির্মাণকাজ সম্পর্কে কিছুই জানি না। ওই কমিটির আহবায়ক তৎকালীন ইউএনও মমতাজ মহল বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর জবাব মেলেনি। তবে দামুড়হুদার বর্তমান ইউএনও তিথি মিত্র বলেন, একটি ঘরে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রকল্পের মেরামত বা তদারকি ব্যয় বা বরাদ্দের বিষয়ে কিছু জানি না।

ধামরাইয়ে বরাদ্দপ্রাপ্তরা পালিয়েছেন : ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৬৫০ জনকে ঘর দেওয়া হয়েছিল। উত্তর বাস্তায় ৫৭টি পরিবারের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঘরে বসবাস করেন না। দেপাশাই পূবপাড়ায় ১৪৩টি ঘরের ২০টিতে বরাদ্দপ্রাপ্তরা থাকেন না। দেপাশাই মধ্যপাড়ায় ১২টি ঘর বিক্রি করে বরাদ্দপ্রাপ্তরা অন্যত্র চলে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানরা অর্থের বিনিময়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ভূমিহীন দেখিয়ে তালিকা করেছিলেন ইউএনওর কার্যালয়ে।

ডামুড্যায় হচ্ছে ছাগল পালন : ডামুড্যা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি জানান, ডামুড্যায় ২১৩টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে আদাশন এলাকায় ৪২টি ঘরের আটটিতে পরিবার বসবাস করছে। অন্যগুলো তালাবদ্ধ রয়েছে। বেশ কিছু ঘরে ছাগল পালন করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগই রাজনৈতিক বিবেচনায় ঘর বরাদ্দ পান। ঘুষের মাধ্যমে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের অনেকে ঘর পাননি। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. হাসান আহমেদ বলেছেন, অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাউজানে ঘর বিক্রি : রাউজান প্রতিনিধি জানান, কদলপুর ইউনিয়নের শমশেরনগর পাহাড়ি এলাকায় ১৩০টি ঘরের বেশির ভাগ অন্যদের দখলে রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সেখানে বরাদ্দ পাওয়া প্রকৃত ভূমিহীনরা থাকেন না। ৫০ জন ঘর হস্তান্তর করে দিয়েছেন। ৪০টি ঘর দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। পুরো এলাকায় সন্ধ্যার পর নীরবতা নেমে আসে। রাউজান উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় মোট ৭৪৫টি ঘর নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু উপজেলার হলদিয়া, ডাবুয়া, রাউজান পৌরসভা, পূর্ব রাউজান, পাহাড়তলীতে ৪৮৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইউএনও জিসান বিন মাজেদ বলেন, ঘরগুলোতে যারা থাকে না বা বিক্রির অভিযোগ ছিল, তা তদনন্ত করে বাতিল করা হয়েছে। এসব ঘর নতুন আবেদনকারীদের দেওয়া হবে। যাঁরা অনিয়ম করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

কেরানীগঞ্জে বেশির ভাগ ঘর তালাবদ্ধ : কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, কেরানীগঞ্জে আশ্রয়ণের ঘর পাওয়ার যোগ্যতা ছিল স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ দেওয়ার সামর্থ্য। জেলা পরিষদের কর্মচারী-আওয়ামী লীগকর্মী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের চক্র ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সচ্ছলদের ঘর বরাদ্দ দেয়। রোহিতপুরে স্থানীয় ভূমিহীন ও গরিব-অসহায় ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে ঘর দেওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা পরিষদের কর্মচারীদের। সেখানে নির্মিত ৪৫টি ঘরের সাতটি গৃহহীনদের দেওয়া হয়। গত রবিবার রোহিতপুর ইউনিয়নের সাহাপুরে ৪৫টি ঘরের বেশির ভাগ তালাবদ্ধ দেখা গেছে। ঘরমালিক জানে আলম বলেন, তিনি জেলা পরিষদের ঝাড়ুদারের কাজ করেন। তাঁর বাড়ি শরিয়তপুর শহরে। তিনি জানান, যারা ঘর পেয়েছে তাদের বেশির ভাগের বাসা আছে অন্য জায়গায়। এদিকে বক্তারচরে ১০৫ ঘরের অর্ধেকের বেশি তালাবদ্ধ দেখা গেছে।

কমলনগরে ৬৯ ঘরে তালা : রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৯টি ঘর প্রায় এক বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সরকারি পুকুরপার চরজাঙ্গালিয়া আশ্রায়ণ প্রকল্প ও একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সোনার বাংলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। এগুলো এখন স্থানীয় দালাল ও রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতার দখলে রয়েছে। তারা ঘর বিক্রি, ভাড়া দেওয়া ও পুকুরে মাছ চাষ করাসহ সব কিছু দেখভাল করছে। অভিযোগ রয়েছে, সেখানেও অনেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঘরগুলো বরাদ্দ পায়। চরজাঙ্গালিয়ায় ঘরমালিক নাছিমা আক্তার বলেন, এখানে অনেকে থাকেন না। তাঁদের অন্য জায়গায় বাড়ি আছে। অনেকে ঘর ভাড়া দিয়েছেন। মাসে একবার এসে ভাড়া নিয়ে যান। আবার অনেক পরিবার ঘর বিক্রি করে একেবারে চলে গেছে। ইউএনও রাহাত উজ জামান বলেন, ফাঁকা ঘরগুলো শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রকৃত অসহায়দের ঘর প্রদান করা হবে। কেউ অসাধু উপায়ে ঘর পেয়ে থাকলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জামায়াতের সমাবেশ আজ

১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আজ শনিবার আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের জাতীয় সমাবেশ। এবারই প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে নানামুখী প্রস্তুতি।

সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়।

তবে সকাল ১০টা থেকেই থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশ উপলক্ষে প্রায় ১০ হাজার বাস, বিশেষ ট্রেন ও লঞ্চে আসবেন নেতাকর্মীরা। ১০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম আশা করছে দলটি।

এ জন্য তিনটি বিশেষ ট্রেন রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করবে, রেল কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে এর অনুমোদন দিয়েছে।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবার ও আহতরাও থাকবেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে।

সমাবেশের মূল লক্ষ্য ৭ দফা দাবি জনসমক্ষে উপস্থাপন ও আদায়ের অঙ্গীকার।

এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঅবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নিশ্চয়তায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারকে ভোটাধিকার প্রদান।

জাতীয় সমাবেশ সফল করতে কাজ করছে একটি মূল বাস্তবায়ন কমিটি এবং অধীন আটটি উপকমিটি। দেশের সর্বত্র পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন, ভ্রাম্যমাণ মাইক এবং সাংস্কৃতিক দল নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। গান, নাটিকা আর স্লোগানে সমাবেশের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগর থেকে গ্রামান্তরে।

সমাবেশস্থলে থাকবে কড়া নিরাপত্তা।

২০টি নির্দিষ্ট পয়েন্টে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বে থাকবেন, যাঁদের জন্য থাকছে আলাদা ইউনিফর্ম। ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষের গাড়ি রাখার জন্য ১৫টি আলাদা পার্কিং জোন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

অতিথিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে থাকবে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ, প্রতিটিতে দুজন এমবিবিএস চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা।

বৃহৎ জনসমাগমের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হবে ড্রোন ও ক্যামেরা, যা প্রদর্শিত হবে এলইডি স্ক্রিনে এবং একযোগে প্রচারিত হবে ফেসবুক ও ইউটিউবেও।

এর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে সারা দেশ থেকে ঢাকামুখী হবেন লাখো মানুষ। তিনি নগরবাসীর কাছে সম্ভাব্য যানজট ও ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা

পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

ভোটের অনুপাত (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায় না বিএনপি। দলটি সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চেয়ে আসছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগামীর সংলাপে আবার যথারীতি তাদের আগের এ অবস্থানই তারা তুলে ধরবে। এ অবস্থায় ঐকমত্য কমিশন নিজেরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করলে, সেটার বিরোধিতা করবে না দলটি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফার আলোকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই অঙ্গীকার রক্ষা করবে।

অর্থাৎ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উচ্চকক্ষ গঠন করবে; মানে দলীয় অঙ্গীকার থেকে সরে যাবে না বিএনপি।

সর্বশেষ ঐকমত্য কমিশনার বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, আমরা সেই জায়গাতেই আছি। আমাদের ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা যে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বলেছিলাম, সেটি হলোযাঁরা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন, যাঁদের জাতি গঠনে অবদান আছে এবং যাঁরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাঁদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতি গঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয়, সেই আইডিয়া থেকেই আমরা এই প্রস্তাবটি রেখেছিলাম।

সেখানে আমরা উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন রাখার জন্য বলেছিলাম।

এর আগে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়। কিন্তু নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে একমত হতে পারেনি দলগুলো। পরে গত সপ্তাহের সোমবার ঐকমত্য কমিশন ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের বিকল্প প্রস্তাব করলেও তা সরাসরি নাকচ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল।

পরদিন মঙ্গলবার কমিশনের সংলাপে বিএনপিসহ পাঁচটি দল প্রস্তাব করে, সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে।

অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপিসহ ২১টি দল ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে। কয়েকটি দল এমনও প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষেরই দরকার নেই।

দীর্ঘ আলোচনায়ও সদস্যরা কিভাবে নির্বাচিত হবেনএ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবই বাদ যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী সপ্তাহে সংলাপে উচ্চকক্ষের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কমিশন মনে করে, সমাজে বিরাজমান বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তবে সংসদের উচ্চকক্ষের মতো নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো।

কমিশনের প্রথম প্রস্তাব ছিল, সংসদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০ করা হবে। ১০০ আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে শুধু নারীরা প্রার্থী হবেন। এতে ঐকমত্য না হওয়ায় গত সোমবার কমিশন প্রস্তাব করে ২৫টির বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেএমন দলগুলো অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল এ প্রস্তাব নাকচ করে। বিএনপি আগের মতোই জানায়, নারী আসন ১০০ করতে একমত হলেও নির্বাচন হতে হবে বিদ্যমান পদ্ধতিতে অর্থাৎ কোনো দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যার অনুপাতে।

জামায়াত জানায়, পিআর (ভোটের অনুপাতে) পদ্ধতিতে আসন বণ্টন হলে তারা আসন বৃদ্ধিতে রাজি। এনসিপি নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের নতুন ফর্মুলা দেয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদে নারী সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নেতারা অভিমত দেন, তাঁরা নারীর ক্ষমতা ও প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পক্ষে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনসংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ১০০টির মধ্যে ৫০টি নারী আসন সংরক্ষিত চাইবে। আর বাস্তবতার নিরিখে ধাপে ধাপে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চাইবে। এর অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনে ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১৫টি আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে ১০% মানে ৩০টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দলটি তাদের মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য আনতে রাজি আছে। তবে এমন ভারসাম্য চায় না, যেখানে সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না।

স্থায়ী কমিটি মনে করে, সার্বিক বিবেচনায় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। বিএনপি নেতারা অভিমত দেন, যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে, সেটা অকার্যকর হয়ে পড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগামীতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কিংবা সংসদীয় সরকারযে পদ্ধতিই করা হোক, সরকারপ্রধানকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। তবে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে আগামীতে আরো আলোচনা হবে।

মন্তব্য
সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা

গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা বলেছেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা ছিল। তিনি আরো দাবি করেন, জুলাই চেতনা নস্যাৎ করে পতিত প্রধানমন্ত্রীকে পুনর্বাসন ও জাতীয় নির্বাচন পেছানোর একটি চক্রান্ত চলছে, গোপালগঞ্জের ঘটনা তারই অংশ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক আইজিপি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকলে গোপালগঞ্জের মতো এত বড় ঘটনা ঘটত না।

গোয়েন্দা ব্যর্থতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি আরো বলেন, পুলিশের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে এবং যথাযথভাবে কাজ করতে দিলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

সোহাগ হত্যা প্রসঙ্গে আশরাফুল হুদা বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে হত্যাকাণ্ড ঘটে যাওয়ার পর পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। দুই দিন পর বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়, এটা দুঃখজনক।

এখানে কোনো গাফিলতি থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, বলেন তিনি।

মব ভায়োলেন্স প্রসঙ্গে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সব সময় ভুক্তভোগীরাই মব ভায়োলেন্স করে না, অনেক সময় রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যও এটি সংঘটিত হয়। কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা মব সন্ত্রাস বৃদ্ধির প্রধান কারণএ বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের হারিয়ে বিজয়ী হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের বিতার্কিক দল।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, মব সন্ত্রাস জাতীয় জীবনে এক নতুন আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশটা যেন মবের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে কলঙ্কিত করছে। সমাজের ক্যান্সার হিসেবে এই সংস্কৃতি বন্ধ করা না গেলে জনজীবনে আতঙ্ক আরো বাড়বে।

মন্তব্য
মার্কিন কূটনীতিকদের প্রতি ট্রাম্প

অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

অন্য দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোতে তারবার্তা পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তারবার্তায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, এই নিয়ে কোনো দেশের মার্কিন দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূত যেন মন্তব্য না করেন। গত ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে এই তারবার্তা।

এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে সেই দেশের মার্কিন দূতাবাস কিংবা ওয়াশিংটন থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হবে না।

নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষকে অভিনন্দন জানানো এবং যথাযথ সময়ে বিজয়ী পক্ষের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মার্কিন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা শুরুর দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, বৈধ হয়েছে কি হয়নি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোকে সমুন্নত রাখতে পেরেছে কি পারেনিএসব নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে কর্মরত কূটনীতিকরা আগ বাড়িয়ে মন্তব্য তো করবেনই না, এমনকি কোনো পক্ষ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তা এড়িয়ে যেতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

তারবার্তায় বলা হয়, অবশ্য কোনো দেশের নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যদি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত স্পষ্ট ও বাধ্যতামূলক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট থাকে, তাহলে এই নির্দেশনার ব্যতিক্রম ঘটবে; তবু সে ক্ষেত্রে ওই দেশের মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত বা কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকরা কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত মুখপাত্ররা প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে এবং তা উদযাপনও করছে। অন্যান্য দেশও একই পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন, যেকোনো দেশ, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, সেই দেশের সঙ্গে তিনি মার্কিন অংশীদারি বিস্তারের পক্ষে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ