ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

রাষ্ট্রের নাম বদলে আপত্তি বিএনপির বেশির ভাগ প্রস্তাবে একমত এনসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাষ্ট্রের নাম বদলে আপত্তি বিএনপির বেশির ভাগ প্রস্তাবে একমত এনসিপি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে এক কাতারে আনা এবং রাষ্ট্রের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে কমিশনের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবে একমতের পাশাপাশি কিছু দ্বিমত ও বেশ কিছু নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৩টিতে পুরোপুরি একমত পোষণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে কিছু প্রস্তাবে দ্বিমতও করেছে দলটি।

এদিকে সিপিবি জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে দলগুলো পৃথকভাবে নিজেদের মত, দ্বিমত ও নতুন প্রস্তাব জমা দেয়।

 

বিএনপির প্রস্তাবে যা রয়েছে

গতকাল রবিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিতভাবে দলীয় মতামত জমা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা স্প্রেডশিটে উল্লেখ করেনি। এটি উচিত ছিল। সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রস্তাবনা। সেটি পুরোপুরি পরিবর্তন বা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অনেকটা পুনর্লিখনের মতো। সেখানে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের সঙ্গে ’২৪-এর অভ্যুত্থানকে এক কাতারে আনা হয়েছে। এটা সমুচিত বলে বিএনপি মনে করে না। বিএনপি পঞ্চদশ সংশোধনের আগের অবস্থায় যে প্রস্তাবনা ছিল সেটির পক্ষে।

সংবিধানে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিনের প্র্যাকটিসের মাধ্যমে রাষ্ট্রের নাম মেনে নিয়েছে।

এটা নিয়ে কতটুকু অর্জন হবে তা প্রশ্নের দাবি রাখে। এ বিষয়ে বিএনপি একমত নয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দুদক নিয়ে ২০টির মতো প্রস্তাবনা ছিল। এর মধ্যে আমরা ১১টিতে সরাসরি একমত। আর সাত-আটটিতে আমরা মন্তব্যসহ নীতিগতভাবে একমত। শুধু একটি প্রস্তাবে আমরা মন্তব্যসহ ভিন্নমত পোষণ করেছি।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘প্রশাসন সংস্কারে আমরা যেসব প্রস্তাব পেয়েছি তার প্রায় অর্ধেক প্রস্তাবে একমত। সেখানে ২৬টি প্রস্তাবনা রয়েছে। বাকি অর্ধেকে ভিন্নমত রয়েছে।’

বিচার বিভাগ সংস্কার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে সব প্রস্তাবে আমরা একমত।’

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ২৭ সুপারিশের মধ্যে বেশির ভাগ প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পৃক্ত উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘এটা আমরা ঠিক বুঝতে পারিনি। নির্বাচনব্যবস্থাসংক্রান্ত সংস্কারের প্রস্তাবে কিছু কিছু সংবিধান সংশ্লিষ্টতা আছে, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাজ নয় যেটা রিপোর্টে এসেছে। একটি বিষয়ে আমরা মতামত পজিটিভলি দিয়েছি, কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু ক্ষমতা খর্ব করার প্রস্তাব দিয়েছে যেগুলো আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। আমরা মনে করি জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে থাকা দরকার।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়টা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক এখতিয়ার। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাব, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধনী দিয়ে নির্বাচন কমিশনের হাতে ডিলিমিটেশনটা রাখা হোক। আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে রাখার বিষয়টি আমরা নাকচ করছি।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘মৌলিক অধিকার বা মূলনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রস্তাব করেছি, সংবিধানের যেসব ধারা রয়েছে তার মধ্যে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে হয়তো মূলনীতির ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা যায়। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে আগের অবস্থা বহাল রাখার জন্য বলেছি।’ সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক অধিকার এনশিউর করতে হবে রাষ্ট্রকে।

এনসিপি কমিশনের ১১৩টি প্রস্তাবে পুরোপুরি একমত  : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৩টিতে পুরোপুরি একমত পোষণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল রবিবার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে দেওয়া লিখিত মতামতে এনসিপি আরো জানিয়েছে, তারা ২৯টি প্রস্তাবের আংশিক একমত এবং ২২টি প্রস্তাবে একমত নয়।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন বিষয়ে আমাদের কাছে স্প্রেডশিট পাঠানো হয়নি। এই রিপোর্টগুলো আমরা দেখতে পাইনি। এ ব্যাপারে কমিশনের অবস্থান জানতে চেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব এসেছে। এটা আমরা সমর্থন করেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয় রয়েছে। আমরা বলেছি, এটা হবে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারের মেয়াদ ৭০ থেকে ৭৫ দিন হবে। এনসিপির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে সেটা তদন্ত করতে পারবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। যে পরিস্থিতিই হোক না কেন, নির্বাচনকালীন সময়ে জরুরি অবস্থা জারি করা যাবে না বলে আমরা প্রস্তাব করেছি।’

সরোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা বলেছি তরুণ-তরুণীদের বয়সসীমা সর্বোচ্চ কত হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। সেটা ৩৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। আর প্রার্থী হওয়ার বয়স ন্যূনতম ২৩ বছর হবে। ডেপুটি স্পিকার দুজনের কথা বলা হয়েছিল, আমরা বলেছি একজন হবেন এবং তা বিরোধী দল থেকে হওয়া উচিত।’

এনসিপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে দলটি। তবে তারা বলেছে, নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের প্রার্থী কারা, তা দলগুলোকে ঘোষণা করতে হবে। কারণ, নির্বাচনে একজন ভোটারের জানার অধিকার আছে, উচ্চকক্ষে কারা যাচ্ছেন।

জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার চায় সিপিবি : জরুরিভাবে এখনই দেশের নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিত মতামতে পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আপনাদের পাঠানো ‘স্প্রেডশিট’-এ বেশির ভাগ প্রশ্নই অস্বচ্ছ, অসম্পূর্ণ, একপেশে ও ব্যাখ্যার দাবি করে। এমতাবস্থায় সেসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা ব্যতিরেকে এসব প্রশ্নের বিষয়ে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দেওয়া সম্ভব কিংবা যথাযথ হবে বলে আমরা মনে করছি না। যে কারণে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

গতকাল রবিবার দুপুরে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিত মতামত জমা দেয়। এ সময় দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘যে প্রস্তাব আমরা পেয়েছি এসবের অনেক বিষয়ে আমরা একমত হলেও কোনো কোনো বিষয়ে এমনকি মৌলিক কিছু বিষয়ে আমাদের দ্বিমত ও আপত্তি আছে। এর বিকল্প অথবা নতুন প্রস্তাবও আমাদের আছে।’

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মিরপুরে প্রথম টি-টোয়েন্টি আজ

লাহোরের ‘বদলা’ ঢাকায়

তরিকুল ইসলাম সজল
তরিকুল ইসলাম সজল
শেয়ার
লাহোরের ‘বদলা’ ঢাকায়

একটু পরপরই ভেসে আসছে ওয়াচ ইট ওয়াচ ইট শব্দ। মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মূল মাঠে সচরাচর এমন দৃশ্য দেখা যায় না। গতকাল সন্ধ্যায় কৃত্রিম আলোর নিচে সেন্ট্রাল উইকেটের দুই পাশের নেটে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালালেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলীরা। বড় বড় ছক্কা হজমে এ দুই ব্যাটারের সামনে যেন বল ফেলার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদরা।

তাঁদের এমন প্রস্তুতি আজ সন্ধ্যা ৬টায় পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ঘিরে, যেখানে ঘুরেফিরে আলোচনার কেন্দ্রে মিরপুরের স্পিন সহায়ক উইকেট।

গতকাল সিরিজ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে মিরপুরের উইকেট নিয়ে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাসকে। সেসব কথার জবাব দেওয়ার আগে অবশ্য প্রথম ম্যাচের উইকেট খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন লিটন। এরপর মিরপুরের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করতেও দেখা গেল তাঁকে।

উইকেট দেখে আসার পর বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হলো লিটনকে, উইকেট ভালোই দেখলাম। আমার কাছে মনে হয় ভালো উইকেট হবে। ব্যাটিং-বোলিং দুই পক্ষেরই থাকবে। মিরপুরের এই উইকেটে সর্বশেষ ১৩ মাস আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন লিটনরা।
এই মাঠে সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হয়েছে প্রায় দুই মাস আগে। অর্থাৎ পাকিস্তানের বিপক্ষে সতেজ উইকেট পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। এর সঙ্গে শ্রীলঙ্কা থেকে সদ্য টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাসের পুঁজি তো আছেই। এবার সেটা মিরপুরে ধরে রাখার তাড়না শোনা গেল লিটনের কণ্ঠে, শ্রীলঙ্কায় আমাদের একটা ভালো সিরিজ গেছে, গোটা দলেরই। আমরা চেষ্টা করব, এই আত্মবিশ্বাসটা যেন দল হিসেবে আমরা মিরপুরেও ধরে রাখতে পারি।
পাকিস্তানি অধিনায়ক আগা সালমানও স্বাগতিকদের এগিয়ে রাখলেন, আমাদের জন্য এখানকার কন্ডিশন আলাদা। বাংলাদেশ যেকোনো স্টেডিয়ামে, যেকোনো মাঠে এবং যেকোনো দেশেই একটি খুব ভালো দল। আর যখন তারা নিজেদের দেশে খেলে, তখন তারা আরো শক্তিশালী। আমরা জানি আমাদের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে চলেছে।

পরিসংখ্যান অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে কথা বলছে। এশিয়ান কাপের ম্যাচ বাদ দিলে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি ২১ লড়াইয়ে মাত্র ২ জয় লিটনদের। এই দুটি জয় অবশ্য মিরপুরেই পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে ২০১৬ সালের পর পাকিস্তানকে আর হারাতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা, এই সময়ে হারে টানা ১২ ম্যাচ। সর্বশেষ সফরেও ৩-০ ব্যবধানে হারেন লিটনরা। এবার আক্ষেপ ঘোচাতে পারবে বাংলাদেশ? অধিনায়ক বললেন, যেকোনো দলকে হারানোর মতো মানসিকতা আমাদের আছে এবং আমরা সেই চেষ্টাই করব। কিন্তু নির্দিষ্ট এই দিনটাতে আপনাকে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তার মানে এই না যে ঘরের মাঠ বলেই আপনি ভালো খেলে জিতিয়ে দেবেন। তবে এসব ভেবে নিজেদের ওপর চাপ বাড়াতে চাচ্ছেন না লিটন, না, কোনো অতিরিক্ত চাপ নেই। আমরা এসব রেকর্ডের দিকে মনোযোগ দিই না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো ভালো ক্রিকেট খেলা এবং আমরা যে ধরনের ক্রিকেট খেলতে চাই, সেটাই খেলা। এই সিরিজেও আমরা একই বিষয়ে মনোযোগ দেব। আমরা প্রতিটি ম্যাচে ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই এবং প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।

মিরপুরের উঠান লিটনদের যেমন হাতের তালুর মতো চেনা, তেমনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলার সুবাদে পাকিস্তান দলের বেশ কয়েকজনও এখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইছেন পাকিস্তানি অধিনায়ক, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই বিপিএলে খেলেছে, যা অবশ্যই একটি বড় সুবিধা। তাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আমাদের জন্য মূল্যবান। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছি। তবে বাংলাদেশও সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন লিটন, দুই পক্ষই সুবিধা পাবে। ওরাও জানে আমাদের শক্তি, দুর্বলতার জায়গাও জানে। আমরাও তাদের সঙ্গে খেলি, শক্তি, দুর্বল জায়গাগুলো সম্পর্কে জানি। তো, আমার মনে হয় না এটা খুব সমস্যা হবে।

মন্তব্য

গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩০৬

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩০৬
কারফিউ শিথিল থাকার সময় গতকাল গোপালগঞ্জ শহরে জনজীবনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করে। শহরের ছালেহিয়া আলিয়া মাদরাসা সড়কের সামনে থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ

ধীরে ধীরে গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। কারফিউ শিথিল থাকায় আগের দিনের চেয়ে জন ও যান চলাচল বেশি ছিল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত বুধবারের হামলা-সংঘর্ষে পুলিশ বাদী হয়ে গতকাল পর্যন্ত চারটি মামলা করেছে। গতকাল শহরজুড়ে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছিল।

গতকাল শনিবার পর্যন্ত চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তিন হাজার চারজনকে।

এদিকে গত বুধবার থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। নতুন গ্রেপ্তার করা হয় ১১৯ জনকে।

জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে আরো একটি মামলা করেছে পুলিশ।

সদর উপজেলার সাতপাড়ে পুলিশের গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করা হয় গোপালগঞ্জ সদর থানায়। গত শুক্রবার রাতে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৩৫০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

এর আগে সন্ত্রাস দমন আইনে গোপালগঞ্জ সদর থানায় ৫৭৫ জন, কাশিয়ানী থানায় ৩৭০ জন এবং কোটালীপাড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এক হাজার ৬৫৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। সব মিলিয়ে আসামির সংখ্যা তিন হাজার চারজন।

পুলিশ জানায়, গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা করা হয় সদর, কাশিয়ানী ও কোটালীপাড়া থানায়। চারটি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় দুই হাজার ৬৫০ জনকে।

গোপালগঞ্জে গতকাল সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকে। এ অবস্থায় গতকাল রাত ৮টা থেকে আজ রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউয়ের সময়সীমা বাড়ায় জেলা প্রশাসন।

কারফিউ শিথিল থাকায় সাধারণ মানুষ গতকাল ঘর থেকে বের হয়। শহরে যান চলাচলও ছিল আগের দিনের চেয়ে বেশি। শহরে খোলা রাখা হয় বেশ কয়েকটি দোকানপাট। তবে অনেকে ছিল গ্রেপ্তার আতঙ্কে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান জানান, গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। তাই গতকাল রাত ৮টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউয়ের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

গত বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ভণ্ডুল করতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা ও সংঘর্ষে লিপ্ত হন। দিনভর সংঘর্ষে প্রথমে চারজন এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেকজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

মন্তব্য

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে এনসিপি নেতার বক্তব্যে উত্তাল কক্সবাজার

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি
শেয়ার
সালাহউদ্দিনকে নিয়ে এনসিপি নেতার বক্তব্যে উত্তাল কক্সবাজার
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরে গতকাল এনসিপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ছবি : কালের কণ্ঠ

কক্সবাজার জেলা শহরের শহীদ দৌলত ময়দানে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী এবং কক্সবাজারের সন্তান সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এক আপত্তিকর বক্তব্যে ফুঁসে উঠেছে কক্সবাজার। পাটওয়ারীর বক্তব্যের পরপরই শহরজুড়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। অবরোধ করা হয় সড়ক।

আকস্মিক এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজিত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কবল থেকে রেহাই পেতে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের পাহারায় পর্যটন শহর ছেড়ে বান্দরবানের পথে চকরিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় এনসিপির পদযাত্রা।

কক্সবাজার শহর থেকে চকরিয়া পর্যন্ত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাহ উপজেলা বাসস্টেশনে এবং চকরিয়া উপজেলা বাসস্টেশনে এনসিপির পৃথক পথসভা নির্ধারিত থাকলেও কোনো সভা আর করতে পারেননি এনসিপির নেতারা। এমনকি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের পাহারায় এনসিপি নেতাদের দলটি চকরিয়ায় পৌঁছার আগেই বিএনপির ক্ষুব্ধ লোকজন পথসভার মঞ্চটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। চকরিয়ায় বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করে রাখে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সড়ক অবরোধ ভেঙে দিয়ে ক্ষুব্ধ লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ করলে কয়েকজন আহত হন।

এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার জেলা শহরের শহীদ দৌলত ময়দানের মঞ্চে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত গডফাদার ছিল শামীম ওসমান। এখন শুনছি, কক্সবাজারের নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছে। ঘের দখল করছে, মানুষের জায়গাজমি দখল করছে। আবার সে নাকি সংস্কার বোঝে না।

নাম না বললাম। কক্সবাজারের জনতা এ ধরনের সংস্কারবিরোধী, যে পিআর বোঝে না, তাদের রাজপথে ঠেকিয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ।

এমন বক্তব্য প্রদানের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে। তখনই বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘর থেকে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এনসিপির নেতারা সমাবেশস্থল ত্যাগ করার পরপরই ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

এমনকি এনসিপির পদযাত্রার ব্যানার-ফেস্টুন সব কিছুই গুঁড়িয়ে দেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে ততক্ষণে কক্সবাজারের এনসিপি সমাবেশে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁরাসহ এনসিপির নেতাকর্মীরাও দ্রুত সরে পড়েন।

ওদিকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়া, পেকুয়াসহ সব উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে এনসিপি নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। কক্সবাজার জেলা শহরে বিকেল থেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাস, মহিলা দলসহ প্রায় সব সংগঠন একের পর এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল চলছিল।

এনসিপি আগেই কক্সবাজার থেকে পাঁচ জেলার উদ্দেশে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। এ ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কক্সবাজার শহরের দৌলত ময়দানমুখী পদযাত্রা শুরুর কথা থাকলেও তাদের কর্মসূচি শুরু হয় দুপুর ১টার পর। পথসভার মঞ্চে এনসিপি সভাপতি নাহিদ ইসলাম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষভাবে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিটি তৈরি করাসহ এই দুটি সংস্কারে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলে জুলাই সনদ তৈরি সম্ভব।

মন্তব্য
ফিরে দেখা ২০ জুলাই ’২৪

কারফিউয়ের মধ্যেও সংঘর্ষ, নিহত ৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কারফিউয়ের মধ্যেও সংঘর্ষ, নিহত ৩৭

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নজিরবিহীন সহিংসতা ও প্রাণহানির জেরে আগের দিন ১৯ জুলাই রাত ১২টায় দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। প্রথম দফায় এই কারফিউ ২০ জুলাই দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। এরপর দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ফের কারফিউ শুরু হয়ে পরদিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়।

এর মধ্যে থমথমে পরিবেশ আরো বাড়তে থাকে।

আর কারফিউয়ের মধ্যেও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এদিন সংঘর্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ জনের মৃত্যুর খবর আসে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে। নিহতদের মধ্যে রাজধানীতে ১৬ জন এবং রাজধানীর বাইরে ২১ জন।

২০ জুলাই তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে সরকার।

কারফিউ চলার সময় সারা দেশে যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকে। এর প্রভাব পড়ে বিমান চলাচলেও। যাত্রীস্বল্পতা, যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছতে দেরি হওয়া এবং সফটওয়্যারসংক্রান্ত সমস্যার কারণে বিভিন্ন ফ্লাইট বিলম্বিত বা বাতিল করা হয়। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় এয়ারলাইনগুলোকে।
এদিন রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে রেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

রাজধানীতে সহিংসতা ঠেকাতে এদিনও র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহল অব্যাহত ছিল। বঙ্গভবন, গণভবন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, থানা, সারা দেশের কারাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল দেখা গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে কারফিউ পাস নিয়ে জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা বাইরে বের হন।

কারফিউয়ের মধ্যে রাজধানীর অলিগলিতে মানুষের আনাগোনা থাকলেও এদিন বেশির ভাগ প্রধান সড়ক ছিল প্রায় জনশূন্য। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকি ছিল। তবে এদিনও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, বনশ্রী, রামপুরা, মালিবাগ, মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় সংঘর্ষ বেশি হয়।

সকাল থেকে রাজধানীর বাড্ডা, বনশ্রী, উত্তর ও মধ্য বাড্ডা এলাকায় অবস্থান নেয় কয়েক শ মানুষ। এর মধ্যে বনশ্রীতে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান ছিল বেশি। বিক্ষোভকারীরা সড়কে লোহার ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন।

সংঘর্ষের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বিভিন্ন দোকানের মালপত্র লুট হওয়ার খবরও পাওয়া যায় এদিন। মেরুল বাড্ডার হাতিরঝিল এলাকায় দোকানের লুট করা মালপত্র নিয়ে বিরোধে এক কিশোরের ছুরিকাঘাতে আরেক কিশোর নিহত হয়। এ ছাড়া আরেক কিশোর ছুরিকাঘাতে আহত হয়।

এদিন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ভবনে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে ওই ভবনে থাকা হাইওয়ে পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ গিয়ে হেলিকপ্টারের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়াও ওই ভবনে থাকা হাসপাতাল, ব্যাংক, চায়নিজ রেস্টুরেন্টসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এদিন দুপুরে কারফিউ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্যই কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলে কারফিউ শিথিল করা হবে।

আগের দিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রিসভার তিন সদস্যের বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের সব দাবি নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছে, যা আদালতে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপন করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং রায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়টির একটি গ্রহণযোগ্য মীমাংসা হবে।

 

রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় বৈঠক

দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এদিন রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকের পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউয়ের ঘোষণা আসে।

 

দুই দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা

২০ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নির্বাহী আদেশে ২১ ও ২২ জুলাই সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ওই দুই দিন স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি, পোশাক কারখানাসহ সব কলকারখানা বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয় মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে। তবে জরুরি পরিষেবা কাজে নিয়োজিত কর্মীরা ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন। সুপ্রিম কোর্টও বিচারিক আদালতগুলোতে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ