ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

নির্বাচন কবে, ‘নিশ্চয়তা’ দিচ্ছে না সরকার

  • প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে রাজনৈতিক দলে প্রতিক্রিয়া
হাসান শিপলু
হাসান শিপলু
শেয়ার
নির্বাচন কবে, ‘নিশ্চয়তা’ দিচ্ছে না সরকার

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি। বরং নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। ফলে নির্বাচন এ বছর হবে কি না, সেই সংশয় আরো ঘনীভূত হচ্ছে। নির্বাচনের সময় নিয়ে সরকারের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থাহীনতাও বাড়ছে।

 

সর্বশেষ গত ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে কিংবা আগামী বছরের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে তারা যদি বৃহত্ সংস্কার প্যাকেজ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে এ কথা বলেন।

ড. ইউনূসের এই বক্তব্যে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত কিছুদিনে চলতি বছরের ডিসেম্বর, আগামী বছরের মার্চ ও জুনএই তিনটি সময় ধরে নির্বাচনের যে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাএসব বক্তব্যের মধ্যে কোনটি ঠিক, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।

রাজনৈতিক বোদ্ধাদের অনেকে মনে করছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবকে কোনো কথা বলা মানে এর তাৎপর্য অনেক বেশি। তার মানে হচ্ছে, ডিসেম্বরে নির্বাচন নিয়ে সরকারের মধ্যেই এক ধরনের অনিশ্চয়তা আছে।

অথবা ডিসেম্বরে নির্বাচন না দেওয়ার জন্য তিনি এক ধরনের চাপে আছেন। তাই নির্বাচন কবে, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারছেন না প্রধান উপদেষ্টা। 

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পুরোপুরি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি এবং এ বছর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে।

নাহিদের বক্তব্যের সপ্তাহ খানেক পর প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে এই বক্তব্য দিলেন।

দুজনের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে অনেকে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাচ্ছেন। দুটি বক্তব্য ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও একই সূত্রে গাঁথা বলছেন তাঁরা। কেউ কেউ বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তা কিছু বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টত বুঝা যায়। 

নাহিদ ইসলামের বক্তব্য ধরে গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ওই আলোচনায় আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয়ের কথা উঠে এসেছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর সেই আশঙ্কা আরো ঘনীভূত হলো। দলটির নীতিনির্ধারণী নেতারা মনে করেন, চলতি বছর সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। খোদ সরকারের ভেতর থেকেই নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা রয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠনের পর দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, যত দিন না পর্যন্ত খুনি হাসিনাকে ফাঁসির মঞ্চে দেখছি, তত দিন যেন কেউ ভুলক্রমেও নির্বাচনের কথা না বলে। এসব বক্তব্য নির্বাচন বিলম্ব করতে সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে আশ্বস্ত করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। এখন দৃশ্যত সেই বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন তিনি। গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বৈঠক শেষে বলেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন।

গত ১০ মার্চ যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, এই বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। নির্বাচন নিয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য আসা উচিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির সর্বশেষ বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ড. ইউনসূ তাঁর বক্তব্য থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। তখন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললেও এখন সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ হলে ডিসেম্বর আর বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ হলে আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কী বুঝাতে চেয়েছেন তা তাঁকে (ড. ইউনূস) পরিষ্কার করতে হবে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আইনি সংস্কার, প্রশাসনিক সংস্কার ও মাঠের সংস্কার করতে তিন মাসের বেশি সময় লাগে না। এর সঙ্গে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আসন পুনর্বিন্যাসসহ নির্বাচন কমিশনের কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ রয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার তো নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় সংসদে করতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে অন্য যেসব সংস্কার করা দরকার সেগুলো সময়সাপেক্ষ বিষয় নয়।

সরকারসংশ্লিষ্ট একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কালের কণ্ঠকে জানান, যেহেতু এটি নির্দলীয় সরকার, তাই কোনো দলের মতামতকে অগ্রাহ্য করা যাচ্ছে না। ড. ইউনূস হয়তো ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করতে চান। তার পরও ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে যাতে জুনের মধ্যে করা যায়, সেই সুযোগ হাতে রাখছেন তিনি। এর মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করতে চান। তবে নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি হলে মতানৈক্য প্রকট হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

অবশ্য বিএনপি জোটের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, সংস্কার পরিধি এক দলের কাছে এক রকম। অন্তর্বর্তী সরকারে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি আছেন। ফলে সরকারের ওপর তাঁদের প্রভাব রয়েছে, যার কারণে সরকারের মধ্যে নতুন দলের বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা যায়। বড় দল হিসেবে বিএনপিকে সরকার যেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন আবার অন্য দলগুলোকেও নাখোশ করছে না। এর মধ্য দিয়ে এক ধরনের ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ জন্য হয়তো নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে তাঁর বক্তব্যে সময়ে সময়ে পরিবর্তন আসে। তবে এটা ঠিক যে সরকার নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে চাইছে না।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু কালের কণ্ঠকে বলেন, কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বর আর বেশি সংস্কার চাইলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন। এটা সরকারের পিছু হটার লক্ষণ। প্রধান উপদেষ্টা কখনো বিএনপি কখনো বৈষম্যবিরোধীদের মন জুগিয়ে চলতে গিয়ে নিজের অবস্থানকে দুর্বল করে ফেলছেন। তাঁর কাছ থেকে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রূপরেখা আসা উচিত।

তিনি বলেন, ড. ইউনূসের কথাবার্তায় কখনো কখনো মনে হচ্ছে তিনি দোদুল্যমানতায় আছেন। প্রথম দিন ঢাকায় নেমেই বললেন, তিনি আমাদের সহযোদ্ধা এবং তাঁর কথা আমাদের শুনতে হবে। আমরা এটাকে সাদরে গ্রহণ করেছিলাম। তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো কোনো আপত্তি করেনি। সম্প্রতি তিনি বলতে শুরু করেছেন; তিনি আমাদের সহযোগী এবং আমরা যেভাবে চাই সেভাবে তিনি করবেন।

অবশ্য ড. ইউনূসের বক্তব্যে কোনো বিভ্রান্তি দেখছেন না ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই জুনেও যদি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হয় তাহলে আরো পরে নির্বাচন হতে পারে।

 

ডিসেম্বরে না হলে সংশয় কেন?

নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বর ধরেই ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ ডিসেম্বরের পর আগামী বছরের শুরুতে রমজান, এইচএসসি পরীক্ষা এবং বর্ষার কারণে ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্ভব নাও হতে পারে।

চাঁদ দেখা যাওয়ার ওপর নির্ভর করে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে রমজান শুরু হবে। সাধারণত বাংলাদেশে রমজানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না। এ ছাড়া নির্বাচনের তারিখ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যাতে ভোটের দিনের আগের তিন সপ্তাহের প্রচারের সময়টাও রমজান মাসে না পড়ে।

নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতে, রমজানে নির্বাচন হলে ভোটারদের অংশগ্রহণ কমে যেতে পারে এবং প্রচারণা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়। আবার রমজানের দুই মাস পর ঈদুল আজহা। পরে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকে নানা প্রস্তুতি শুরু হয়।

আবার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হতে পারে। যদি ওই সময়ে পরীক্ষা হয় তাহলে এই তিন মাস নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। মে ও জুন মাসে বাংলাদেশে বৃষ্টির মৌসুম থাকে। বর্ষাকালে বৈরী আবহাওয়া, অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও বন্যার শঙ্কায় ভোটগ্রহণ অনেকটা অসম্ভব। 

এসব দিক বিবেচনা করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে তা পরবর্তী বছরের অক্টোবরের আগে সম্ভব নয় বলে মনে করেন অনেকে। ফলে যেসব দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়, তাদের মধ্যে নানা ধরনের আশঙ্কা কাজ করছে।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জামায়াতের সমাবেশ আজ

১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আজ শনিবার আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের জাতীয় সমাবেশ। এবারই প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে নানামুখী প্রস্তুতি।

সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়।

তবে সকাল ১০টা থেকেই থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশ উপলক্ষে প্রায় ১০ হাজার বাস, বিশেষ ট্রেন ও লঞ্চে আসবেন নেতাকর্মীরা। ১০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম আশা করছে দলটি।

এ জন্য তিনটি বিশেষ ট্রেন রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করবে, রেল কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে এর অনুমোদন দিয়েছে।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবার ও আহতরাও থাকবেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে।

সমাবেশের মূল লক্ষ্য ৭ দফা দাবি জনসমক্ষে উপস্থাপন ও আদায়ের অঙ্গীকার।

এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঅবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নিশ্চয়তায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারকে ভোটাধিকার প্রদান।

জাতীয় সমাবেশ সফল করতে কাজ করছে একটি মূল বাস্তবায়ন কমিটি এবং অধীন আটটি উপকমিটি। দেশের সর্বত্র পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন, ভ্রাম্যমাণ মাইক এবং সাংস্কৃতিক দল নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। গান, নাটিকা আর স্লোগানে সমাবেশের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগর থেকে গ্রামান্তরে।

সমাবেশস্থলে থাকবে কড়া নিরাপত্তা।

২০টি নির্দিষ্ট পয়েন্টে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বে থাকবেন, যাঁদের জন্য থাকছে আলাদা ইউনিফর্ম। ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষের গাড়ি রাখার জন্য ১৫টি আলাদা পার্কিং জোন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

অতিথিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে থাকবে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ, প্রতিটিতে দুজন এমবিবিএস চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা।

বৃহৎ জনসমাগমের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হবে ড্রোন ও ক্যামেরা, যা প্রদর্শিত হবে এলইডি স্ক্রিনে এবং একযোগে প্রচারিত হবে ফেসবুক ও ইউটিউবেও।

এর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে সারা দেশ থেকে ঢাকামুখী হবেন লাখো মানুষ। তিনি নগরবাসীর কাছে সম্ভাব্য যানজট ও ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা

পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

ভোটের অনুপাত (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায় না বিএনপি। দলটি সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চেয়ে আসছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগামীর সংলাপে আবার যথারীতি তাদের আগের এ অবস্থানই তারা তুলে ধরবে। এ অবস্থায় ঐকমত্য কমিশন নিজেরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করলে, সেটার বিরোধিতা করবে না দলটি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফার আলোকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই অঙ্গীকার রক্ষা করবে।

অর্থাৎ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উচ্চকক্ষ গঠন করবে; মানে দলীয় অঙ্গীকার থেকে সরে যাবে না বিএনপি।

সর্বশেষ ঐকমত্য কমিশনার বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, আমরা সেই জায়গাতেই আছি। আমাদের ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা যে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বলেছিলাম, সেটি হলোযাঁরা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন, যাঁদের জাতি গঠনে অবদান আছে এবং যাঁরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাঁদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতি গঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয়, সেই আইডিয়া থেকেই আমরা এই প্রস্তাবটি রেখেছিলাম।

সেখানে আমরা উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন রাখার জন্য বলেছিলাম।

এর আগে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়। কিন্তু নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে একমত হতে পারেনি দলগুলো। পরে গত সপ্তাহের সোমবার ঐকমত্য কমিশন ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের বিকল্প প্রস্তাব করলেও তা সরাসরি নাকচ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল।

পরদিন মঙ্গলবার কমিশনের সংলাপে বিএনপিসহ পাঁচটি দল প্রস্তাব করে, সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে।

অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপিসহ ২১টি দল ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে। কয়েকটি দল এমনও প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষেরই দরকার নেই।

দীর্ঘ আলোচনায়ও সদস্যরা কিভাবে নির্বাচিত হবেনএ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবই বাদ যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী সপ্তাহে সংলাপে উচ্চকক্ষের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কমিশন মনে করে, সমাজে বিরাজমান বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তবে সংসদের উচ্চকক্ষের মতো নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো।

কমিশনের প্রথম প্রস্তাব ছিল, সংসদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০ করা হবে। ১০০ আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে শুধু নারীরা প্রার্থী হবেন। এতে ঐকমত্য না হওয়ায় গত সোমবার কমিশন প্রস্তাব করে ২৫টির বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেএমন দলগুলো অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল এ প্রস্তাব নাকচ করে। বিএনপি আগের মতোই জানায়, নারী আসন ১০০ করতে একমত হলেও নির্বাচন হতে হবে বিদ্যমান পদ্ধতিতে অর্থাৎ কোনো দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যার অনুপাতে।

জামায়াত জানায়, পিআর (ভোটের অনুপাতে) পদ্ধতিতে আসন বণ্টন হলে তারা আসন বৃদ্ধিতে রাজি। এনসিপি নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের নতুন ফর্মুলা দেয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদে নারী সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নেতারা অভিমত দেন, তাঁরা নারীর ক্ষমতা ও প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পক্ষে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনসংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ১০০টির মধ্যে ৫০টি নারী আসন সংরক্ষিত চাইবে। আর বাস্তবতার নিরিখে ধাপে ধাপে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চাইবে। এর অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনে ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১৫টি আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে ১০% মানে ৩০টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দলটি তাদের মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য আনতে রাজি আছে। তবে এমন ভারসাম্য চায় না, যেখানে সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না।

স্থায়ী কমিটি মনে করে, সার্বিক বিবেচনায় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। বিএনপি নেতারা অভিমত দেন, যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে, সেটা অকার্যকর হয়ে পড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগামীতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কিংবা সংসদীয় সরকারযে পদ্ধতিই করা হোক, সরকারপ্রধানকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। তবে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে আগামীতে আরো আলোচনা হবে।

মন্তব্য
সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা

গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা বলেছেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা ছিল। তিনি আরো দাবি করেন, জুলাই চেতনা নস্যাৎ করে পতিত প্রধানমন্ত্রীকে পুনর্বাসন ও জাতীয় নির্বাচন পেছানোর একটি চক্রান্ত চলছে, গোপালগঞ্জের ঘটনা তারই অংশ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক আইজিপি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকলে গোপালগঞ্জের মতো এত বড় ঘটনা ঘটত না।

গোয়েন্দা ব্যর্থতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি আরো বলেন, পুলিশের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে এবং যথাযথভাবে কাজ করতে দিলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

সোহাগ হত্যা প্রসঙ্গে আশরাফুল হুদা বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে হত্যাকাণ্ড ঘটে যাওয়ার পর পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। দুই দিন পর বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়, এটা দুঃখজনক।

এখানে কোনো গাফিলতি থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, বলেন তিনি।

মব ভায়োলেন্স প্রসঙ্গে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সব সময় ভুক্তভোগীরাই মব ভায়োলেন্স করে না, অনেক সময় রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যও এটি সংঘটিত হয়। কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা মব সন্ত্রাস বৃদ্ধির প্রধান কারণএ বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের হারিয়ে বিজয়ী হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের বিতার্কিক দল।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, মব সন্ত্রাস জাতীয় জীবনে এক নতুন আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশটা যেন মবের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে কলঙ্কিত করছে। সমাজের ক্যান্সার হিসেবে এই সংস্কৃতি বন্ধ করা না গেলে জনজীবনে আতঙ্ক আরো বাড়বে।

মন্তব্য
মার্কিন কূটনীতিকদের প্রতি ট্রাম্প

অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

অন্য দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোতে তারবার্তা পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তারবার্তায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, এই নিয়ে কোনো দেশের মার্কিন দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূত যেন মন্তব্য না করেন। গত ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে এই তারবার্তা।

এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে সেই দেশের মার্কিন দূতাবাস কিংবা ওয়াশিংটন থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হবে না।

নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষকে অভিনন্দন জানানো এবং যথাযথ সময়ে বিজয়ী পক্ষের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মার্কিন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা শুরুর দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, বৈধ হয়েছে কি হয়নি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোকে সমুন্নত রাখতে পেরেছে কি পারেনিএসব নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে কর্মরত কূটনীতিকরা আগ বাড়িয়ে মন্তব্য তো করবেনই না, এমনকি কোনো পক্ষ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তা এড়িয়ে যেতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

তারবার্তায় বলা হয়, অবশ্য কোনো দেশের নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যদি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত স্পষ্ট ও বাধ্যতামূলক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট থাকে, তাহলে এই নির্দেশনার ব্যতিক্রম ঘটবে; তবু সে ক্ষেত্রে ওই দেশের মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত বা কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকরা কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত মুখপাত্ররা প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে এবং তা উদযাপনও করছে। অন্যান্য দেশও একই পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন, যেকোনো দেশ, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, সেই দেশের সঙ্গে তিনি মার্কিন অংশীদারি বিস্তারের পক্ষে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ