বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই সারা দেশে অনিয়ন্ত্রিত নিত্যপণ্যের বাজার। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাজারে উত্তাপ কমেনি। বাজার স্থিতিশীল করতে আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর কমানো, মার্জিন তুলে দেওয়া, বাজারে অভিযান চালানোর মতো বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পেলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বাজার।
ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত ঘনীভূত হচ্ছে সংকট
মো. জাহিদুল ইসলাম

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যারা বাজারের প্রধান অংশীজন সেই ব্যবসায়ীদের সরকার গুরুত্ব না দেওয়ায় উল্টো ফল হচ্ছে। সংকট উত্তরণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার সংলাপ করলেও এখনো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করেনি।
বাজার ব্যবস্থাপনার গলদের পাশাপাশি শিল্পে নিরাপত্তাহীনতা, সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা, ডলার সংকট, আমদানি-রপ্তানির বেহাল দশায় সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১৩.৮০ শতাংশে। সে হিসাবে আগে একজন ক্রেতা ১০০ টাকার বিনিময়ে যে পরিমাণ পণ্য কিনতে পারতেন, বর্তমানে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হচ্ছে প্রায় ১১৪ টাকা।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি টার্গেটে পরিণত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিনিয়ত তাদের পড়তে হচ্ছে নানা ধরনের সংকটে। পরিবারসহ ব্যাংক হিসাব জব্দ করা, হত্যা মামলা দেওয়া, গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকা, নিরাপত্তা হুমকি, সার্বিক কার্যক্রমে তদারকিসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত তিন মাসের ব্যবধানে বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছে। এত পদক্ষেপের ভিড়ে যেই ব্যবসায়ীদের হাতে পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার লাগাম; তাদের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের মতবিনিময় করা হয়নি। উল্টো ব্যবসায়ীদের আরো কোণঠাসা করা হয়েছে। ডলার সংকট আরো বেড়ে এলসি খোলার পরিমাণ ও যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ কমে গেছে।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর যোগ দেওয়ার পর তিনবার নীতিসুদ হার বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে যা অবস্থান করছে ১০ শতাংশে। এ ছাড়া আমদানির ক্ষেত্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় ১১টি পণ্যে শতভাগ মার্জিনসহ বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। টাকার প্রবাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তে বেশিদিন অটল থাকতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুর্বল ছয় ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তরল সহায়তা।
টাকা ছাপানোর পর মূল্যস্ফীতি বাড়লেও গভর্নরের দাবি, ‘ছাপানো টাকা ছাড়া ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দেওয়ার আর কোনো বিকল্প উপায় ছিল না। ছাপানো টাকা ব্যাংককে দেওয়া হলেও বাজারে মুদ্রার প্রবাহ বাড়বে না। বাড়তি টাকা বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে আবার তুলে নেওয়া হবে। ফলে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।’
অন্যদিকে বাজার ধরে রাখতে সুদহার বাড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়ীদের ওপর। ঋণের বাড়তি বোঝা এখন তাদের ঘাড়ে। প্রজ্ঞাপন জারি করে চাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, খেজুর, ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক-কর কমালেও ব্যবসায়ীরা আমদানি না করায় সেই প্রভাব পড়েনি বাজারে। অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার কয়েকটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বাজারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ সরবরাহ কম থাকলে বাজারে অভিযান ভালো কোনো ফলাফল নিয়ে আসে না।
তবে দীর্ঘ সময় সরকারি সংস্থার মাধ্যমে বাজার তদারকিতে ব্যর্থ হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না অথবা তারা কী ভাবছেন তা যাচাইয়ের কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা, কোল্ড স্টোরেজ মালিকসহ সবার সঙ্গে আজকেও কথা হয়েছে। আমদানিকারক ও উৎপাদক সবার সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই কথা বলছি। তাদের সমস্যা, ভাবনা ও অবস্থান আমরা প্রতিনিয়ত যাচাই করছি। আমাদের সঙ্গে তাদের একটা মতবিনিময় নিয়মিত চলছে।’
পটপরিবর্তনের পর ব্যবসায়ীরা কী আস্থায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বড় বড় পাঁচ-ছয়টা শিল্প গ্রুপের মধ্যে শুধু দু-একটি বড় শিল্প গ্রুপ নেই সংগত কারণে। এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আলু-পেঁয়াজ যারা আমদানি করে তারা পর্যাপ্ত এলসি খুলছে। মাঝখানে একটু স্লো হয়েছিল, কিন্তু এখন মার্জিন লিবারেল করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভালো সাড়া দেখছি। পরিসংখ্যান আমরা নিয়মিত ফলো করছি। এখন মনে হচ্ছে স্বাভাবিক পর্যায়ে আসছে।’
ডলার সংকটের জেরে এলসি খুলতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। তবে ভয় ও নানামুখী চাপে প্রকাশ্যে কিছু বলতেও পারছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোজ্য তেল সরবরাহকারী একটি বৃহৎ শিল্প গ্রুপের বিতরণ শাখার প্রধান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এলসি খুলতে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না। বরং একাধিকবার এলসি বাতিল করা হয়েছে। যার কারণে বাজারে আমাদের তেল সরবরাহ কমে গেছে।’
চাহিদা কমায় উৎপাদনও কমছে
উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকায় ক্রয়ক্ষমতা কমেছে সাধারণ মানুষের। ভোগ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রথীন্দ্র নাথ পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির জেরে পণ্যের চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। গ্যাস সংকটের কারণে বড় বিনিয়োগ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’
উৎপাদন বাড়ানোয় জোর
বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে উৎপাদন বাড়ানোয় জোর দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘বাজার অস্থিতিশীলকারী সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারকে আরো কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু নীতি সুদহার বাড়ালেই হবে না। সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল করতে হবে। উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। নইলে মূল্যস্ফীতি কমবে না।’
রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি
শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আয়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়েছে এনবিআর। জুলাই মাসের শুরু থেকে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলনে দেশের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ ছিল। সাধারণ ছুটির পাশাপাশি ছিল কারফিউ। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় শিল্প উৎপাদন। এর জেরে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট; সব অনুবিভাগেই দেখা গেছে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি।
বেসরকারি ঋণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসার পরিবেশে অনিশ্চয়তা আর ব্যাংকঋণে উচ্চ সুদহারের প্রভাব পড়েছে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে। গত সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের তৃতীয় মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৯.২০ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এ খাতে এর চেয়ে কম, ৮.৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার মানে হলো ব্যবসার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে কমবে শিল্প সম্প্রসারণের গতি। অবধারিতভাবে তার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানে।’
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসার পরামর্শ
বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের দুর্বল নীতির কারণে বাজার অনিয়ন্ত্রিত রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের বসা উচিত বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের দুর্বলতায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সরকারের বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বসা উচিত। কারা বাজারকে অস্থিতিশীল করছে, সেটা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শুধু সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সব দেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি একই কাজে লাগে না। বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেটকে ভাঙা জরুরি।’
সম্পর্কিত খবর

এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুর ২টা থেকে যেকোনো মোবাইলে এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই ফল প্রকাশের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হবে।
এ বছর আগের মতো ফলাফল প্রকাশের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার গতকাল বলেছেন, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরে আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। দুই মাসের কম সময়ের মধ্যেই সব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। সব বোর্ড নিজেদের মতো করে ফল প্রকাশ করবে।
যেভাবে জানা যাবে ফল : যেকোনো মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে তা ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট http://www.educationboardresults.gov.bd -এর মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল জানা যাবে। আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ইনপুট দিয়ে ও শিক্ষা বোর্ড সিলেক্ট করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।
ফল প্রকাশের পর তা পুনর্নিরীক্ষণের সময়ও জানিয়েছে আন্ত শিক্ষা বোর্ড। ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন পদ্ধতি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং টেলিটক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে আজ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ভারতীয় জেনারেলের দাবি
চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জোট ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ভারতের প্রতিরক্ষা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের প্রতি ঝুঁকছে। এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের চিন্তক প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনিল চৌহান এ কথাগুলো বলেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট বহিরাগত শক্তিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
জেনারেল চৌহান বলেন, এই প্রবণতা ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা। সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা সে দেশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন।
চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বহু পুরনো। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং তাঁর ভারতে আশ্রয়লাভ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অনুষ্ঠানে সিডিএস জেনারেল চৌহানকে পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ওই সংঘাতে পাকিস্তানকে চীন কতটা ও কিভাবে সমর্থন দিয়েছে, সহায়তা করেছে, তা বলা খুবই কঠিন।
জেনারেল চৌহান বলেন, তবে ঘটনা হলো পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বেশির ভাগটাই চীন থেকে নেয়। সে কারণে পাকিস্তানে চীনের উপস্থিতি থাকার কথা। বিশেষ করে সংঘাত ও সংঘর্ষের সময়। সেটা কতটা ছিল এবং সমর্থন বা সহায়তার চরিত্র কেমন ছিল, তা বলা সহজ নয়।
অপারেশন সিন্দূর নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলার প্রসঙ্গে ভারতের উপসেনাপ্রধান লে. জেনারেল রাহুল আর সিং অবশ্য গত শুক্রবার বলেছিলেন, সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে চীন শুধু সাহায্যই করেনি, সংক্ষিপ্ত ওই যুদ্ধকে তারা তাদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার করে তুলেছিল।
ওই কর্মকর্তার দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ওই যুদ্ধে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলোর ৮১ শতাংশই চীনের তৈরি। সেসব অস্ত্র প্রকৃত যুদ্ধের সময় কতটা কার্যকর, সে পরীক্ষাও চীন করে ফেলেছে। ওই সংঘাতকে চীন তার অস্ত্রসম্ভারের পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড

গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন
বিচার আইসিসিতে পাঠানোর অনুরোধ অ্যামনেস্টিরf
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনা আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠন।
গতকাল বুধবার সংগঠনটির সাউথ এশিয়া বিষয়ক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার বিচার রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গতকাল বুধবার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি গুলির নির্দেশের একটি ফোনকল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একটি তথ্য-উপাত্তভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ধাতব পেলেটযুক্ত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা করা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে একটি ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব অপরাধীকে জবাবদিহির আওতায় আনা।

সরকারের উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, ইতিবাচক বিএনপি
- দায়িত্বে আছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা
দু-এক দিনের মধ্যে মতামত জানাবে বিএনপি
হাসান শিপলু

ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আবার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাপের মুখে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এর আগে কয়েক দফা ঘোষণাপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া সম্প্রতি তাদের দলের একজন শীর্ষ নেতার কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত দুই দিন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধান উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সংশোধন, পুনর্লিখন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার কথা বলা আছে। এ বিষয়ে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। দলটি পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের পক্ষে থাকলেও সংবিধান বাতিল করে তা পুনর্লিখনের বিপক্ষে।
সরকারসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার কথা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আরো মতামত দরকার, যাতে এটি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয় এবং জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘সরকারের খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা মতামত দিয়েছিলাম। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করা হয়নি। এখন আবার একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানাব।’
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ করে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি সামনে আনে। তখন এর প্রভাব কী হতে পারে, তা বুঝতে চাইছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঘোষণাপত্রের পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের উত্তাপ তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকার সর্বদলীয় বৈঠক করে, কিন্তু তাতে ঐকমত্য হয়নি। ওই সময় বিএনপি এত দিন পর ঘোষণাপত্রের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই ইস্যুতে সরকারের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকে।
সম্প্রতি এনসিপি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আবার সরব হয়ে ওঠে। গত ৪ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ে এক পথসভায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জুলাই-আগস্টের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন, এই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে। অন্যথায় তাঁদের পক্ষ থেকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে বলে সরকারকে সতর্ক করেন নাহিদ।
সরকারসংশ্লিষ্ট একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেন, ঘোষণাপত্রের মূল অংশীজন হলো বিএনপি ও এনসিপি। তাদের মধ্যে ঐকমত্য হলে দ্রুত ঘোষণাপত্র দেওয়া যাবে।
ঘোষণাপত্রে উল্লেখযোগ্য যা আছে : খসড়া ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয় তুলে ধরা হয়। কোন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, সে বিষয়টিও উঠে আসে।
এতে ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের কথাও বলা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ‘ব্যর্থতা’ এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করার কথাও তুলে ধরা হয়।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে মত প্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করার ফলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব সংগঠিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মত প্রকাশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাা পুনঃপ্রবর্তনের পথ সুগম হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর সিপাহি-জনতার বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আবার ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। মূলত তখন থেকে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের পথ সুগম হয়। এই বিষয়গুলো যুক্ত করার ফলে ঘোষণাপত্র বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে।
খসড়ায় স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে জনতার অবিরাম সংগ্রাম এবং এর মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান এবং পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সৃষ্টির বিষয়টিও উঠে আসে।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ধারাবাহিক তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
তবে বিএনপি নেতাদের কয়েকজন ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ দেন দলীয় ফোরামে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বলে প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের মতামত অনুসারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা : গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খসড়া ঘোষণাপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন করে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি এ বিষয়ে তাদের মতামত সরকারকে জানাবে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরো যেসব বিষয়ে আলোচনা : মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপ, নারী আসন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি। একই সঙ্গে এই শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জানা গেছে, বৈঠকে সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত দেন বিএনপি নেতারা। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এর মধ্যে সংসদে নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে তাঁরা কিভাবে নির্বাচিত হবেন, সে ব্যাপারে এখনো ঐকমত্য হয়নি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা প্রচলিত পদ্ধতিতে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করার পক্ষে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতি মানবেন না তাঁরা।