<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শতকোটি টাকা চাঁদা দাবি, নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এবং তাঁর দুই ভাই হারিস আহমেদ ও জোসেফ আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালতে ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও র‌্যাব-৩-এর সাবেক অধিনায়ক শাফী উল্লাহ বুলবুল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলায় বাদীর অভিযোগ, ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর অন্য আসামিদের নির্দেশে শাফী উল্লাহ বুলবুল সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় গিয়ে রেঞ্জ রোভার গাড়ি চাঁদা দাবি করেন। এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর আবারও তাঁর বাসায় গিয়ে ১০০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেলিম প্রধান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে থাইল্যান্ড যাচ্ছিলেন। বিমানের ভেতর থেকে তাঁকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁকে র‌্যাব-১ অফিসে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। রেঞ্জ রোভার গাড়ি ও ১০০ কোটি টাকা চাঁদা না দিলে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাঁর সঙ্গে থাকা ১০ কোটি টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নেওয়া হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জেনারেল (অব.) আজিজ ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে এ ধরনের আরো অভিযোগ রয়েছে। গণতন্ত্রের অবনতি ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স মেন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত মে মাসে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গণতন্ত্রের অবনতি ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ২০ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁর (সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ) তৎপরতার কারণে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়েছে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রমের ওপর থেকে জনগণ আস্থা হারিয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও আনে যুক্তরাষ্ট্র। বলা হয়, ব্যক্তি স্বার্থের বিনিময়ে সরকারি নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর ঠিকাদারি অবৈধভাবে পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করেছেন মি. আজিজ। তাঁর ভাইয়ের অপরাধ সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচাতে দুর্নীতির আশ্রয় নেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের সাবেক সেনাবাহিনী প্রধানকে ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকার দুই সিটি কাউন্সিলরকে নির্যাতন</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত বছর ২৮ মে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে জেনারেল (অব.) আজিজ ও তাঁর তিন ভাই জোসেফ, হারিস ও আনিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তাঁদের অভিযোগ ছিল, জেনারেল (অব.) আজিজ ও তাঁর দুই ভাইয়ের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ২০১৯ সালে তাঁদের ওপর নৃশংসতা চালানো হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং মিথ্যা মামলায় কারগারে পাঠানো হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংবাদ সম্মেলনে তারেকুজ্জামান রাজীব দাবি করেন, খুব অল্প বয়সেই তিনি সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দেখে ঈর্ষান্বিত হয় তোফায়েল আহমেদ জোসেফ-হারিস আহমেদ-আনিস আহমেদ গং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাঁকে গ্রেপ্তার করান। এর সব কিছু জেনারেল আজিজ ও তাঁর </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সন্ত্রাসী</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> ভাইদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজীব বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমাকে আটকের পর রাতভর আমার বাসা ও অফিসে তল্লাশি অভিযান চলে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাঁদের মতো করে সন্ধান করে। অভিযান শেষে অভিযান পরিচালনাকারী দল গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল, আমার কোনো ক্যাসিনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ সেই অভিযান ছিল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নব্বই দশক থেকে জোসেফ-হারিস পরিবার ঢাকা শহরে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> উল্লেখ করে সাবেক এই কাউন্সিলর বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জেনারেল (অব.) আজিজ ও তাঁর ভাইয়েরা রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে চান। মোহাম্মদপুরে তাঁদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভয়ারণ্য। এ এলাকার একজন কাউন্সিলর ছিলাম আমি। আমার জায়গায় জেনারেল (অব.) আজিজের ভাইয়ের ছেলে আসিফ আহমেদকে কাউন্সিলর বানাতে পরিকল্পিতভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছিল। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হয়েও শুধু ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিনা অপরাধে তিন বছরের বেশি সময় জেলে থাকতে হয়েছে। আমার জীবন থেকে তিনটি বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংবাদ সম্মেলনে হাবিবুর রহমান মিজান বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">১৯৯৬ সালের ৭ মে মোহাম্মদপুরে আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলায় তোফায়েল আহমেদ জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার জজ আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে জোসেফ আপিল করলেও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগ এ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে ছিলেন জোসেফের ভাই হারিস আহমেদ ও আনিস আহমেদ, যাঁরা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। হারিস ও আনিস রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এমনকি সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তাঁদের কারাগারে যেতে হয়নি। তোফায়েল আহমেদ জোসেফও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা পাওয়ার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান ২০১৮ সালের মে মাসে। এরপর ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় আমাকে আটক করে শ্রীমঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাবিবুর রহমান মিজান অভিযোগ করেন, ২০২০ সালে তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে তিনি স্ত্রীর </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মৃত মুখটাও</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> দেখতে পাননি। তাঁর মা, ভগ্নিপতিসহ অনেক আপনজন মারা গেলেও তাদের ধর্মীয় বিদায়ে তিনি অংশ নিতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সরাসরি ইন্ধনে ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ-হারিস-আনিসের মদদে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমাকে গ্রেপ্তারের মূল কারণ ছিল জোসেফ গংয়ের মোহাম্মদপুর এলাকায় আবারও পুরনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করা।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>