ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্য সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছেলের জন্য পাত্রী দেখতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বোয়ালমারীতে যান তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথে শনিবার রাতে ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় রবিবার দিবাগত রাতে ওই নারী বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় মামলা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই নারী ইউপি সদস্য স্বামীকে নিয়ে গত শনিবার বিকেলে বোয়ালমারীর গুণবহা ইউনিয়নের অমৃতনগর গ্রামে ছেলের জন্য পাত্রী দেখতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে অমৃতনগর বটতলা নামক এলাকায় পথ হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। এ সময় ওই স্থানে বসে থাকা কয়েকজন যুবককে তাঁরা বুড়াইচ যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিতে বলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাহাবুবসহ কয়েকজন ওই দম্পতিকে আরেকটি পাত্রী দেখানোর জন্য দেরি করায়। সময় গড়াতে গড়াতে রাত হয়ে গেলে তারা স্বামীকে আটকে রেখে রায়পুর শ্মশান এলাকায় নিয়ে ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। রাতেই স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে ওই ইউপি সদস্য থানায় গিয়ে বিষয়টি ওসিকে জানান। ওই দিন অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত মাহাবুবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মাহাবুব বোয়ালমারী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের রায়পুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে।
এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল উঠে পড়ে লাগে; কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় তারা ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
বুড়াইচ ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ধর্ষকদের বিচার দাবি করে বলেন, ‘প্রায় সাড়ে চার বছর একসঙ্গে কাজ করছি, কোনো দিন খারাপ কিছু তাঁর (নারী সদস্য) মধ্যে পাইনি। পাত্রী দেখতে গিয়ে তিনি ওই ঘটনার শিকার হয়েছেন। ’
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি রিসিভ করেন তাঁর স্বামী। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই মান-সম্মান চলে গেছে। সব কিছু আপনারা শুনেছেন। স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে বাড়ি চলে যাব। ’ তিনি ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ‘ঘটনার মূল হোতা মাহাবুব আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ’
গতকাল সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর জানান, ফরিদপুর সদর উপজেলায় এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৯ জুন বিকেলে মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শিবরামপুর গ্রামের এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী মহল গৃহবধূর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি দুই-তিন লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।