চলতি অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। এবার আসন্ন ২০২২-২৩ সালের বাজেটে বিদেশে পাচার করা টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ কর পরিশোধ করে পাচারকারীরা টাকা বৈধ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
টাকা পাচারকারীদের তথ্য প্রকাশ করা ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) সবশেষ তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে; প্রতি ডলার ৮৮ টাকা ধরে স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় চার লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান। প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে অন্তত ৭৩ হাজার কোটি টাকা। টাকা পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম।
আসন্ন বাজেটে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ থাকবে কি না—জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে যেসব টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চলে গেছে, আমরা বিভিন্নভাবে এসব টাকা ফেরত আনার সুযোগ দিতে অ্যামনেস্টি দিচ্ছি, যাতে টাকাগুলো আমাদের দেশে ফিরে আসে। এটিই আমাদের উদ্দেশ্য। আগামী বাজেটে এটি থাকবে। তবে বাজেটের আগেই আমরা ঘোষণাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ’
তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সার্কুলার দেবে, সেখান থেকে আপনারা জানতে পারবেন। ’
যাঁরা টাকা পাচার করেছেন তাঁরা কর দিয়ে রেকর্ডে নাম লেখাতে চাইবেন কি না—এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে এ সুযোগ অনেকে নিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া যখন এমন একটি অ্যামনেস্টি ঘোষণা করল, তখন অনেক টাকা বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এখান থেকে যাঁরা টাকা নিয়ে গেছেন, এ সুযোগটি তাঁদের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি সুযোগ। ’ বিভিন্ন সময়ে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা বিনা প্রশ্নে ফিরিয়ে আনতে কখনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে এবারই প্রথম এই সুযোগ দেওয়া হবে।