জসিম উদ্দিন
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের এই দুঃসময়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। মূল্যবৃদ্ধির এই উদ্যোগ সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় এখন নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, কুইক রেন্টালের একসময় প্রয়োজন ছিল। এখন আর তার প্রয়োজনীয়তা নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা উচিত। অদক্ষ বিদ্যুেকন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত। গ্যাসচালিত বিদ্যুেকন্দ্রগুলো অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। সরকার সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সরকারের ভুল পরিকল্পনার খেসারত শিল্প খাত বহন করতে পারে না। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি
হবে সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে এবং দেশে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে।
জসিম উদ্দিন বলেন, এসডিজি অনুযায়ী ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং জনগণের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সবার জন্য সুলভ, উন্নত, নিরবচ্ছিন্ন এবং টেকসই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিইআরসি আইনের বিধান অনুযায়ী স্বচ্ছতা, মানসম্মত দক্ষতা ও জবাবদিহি সহকারে সুচারুভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। তাদের অদক্ষতা, অস্বচ্ছতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং আইনের বিপরীতে পরিচালিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সমগ্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানিব্যবস্থার আমূল সংস্কার না করে এ খাতে বিরাজমান অব্যবস্থাপনার অহেতুক দায়ভার জাতীয় অর্থনীতি এবং জনগণের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের সব ক্ষেত্রে সংক্রমিত করা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না।
জসিম উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে এখন সরকারের উচিত হবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে আমূল সংস্কার আনা। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম বলেন, দেশে এখন ডলার সংকট চলছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এখন যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, উৎপাদন খরচ বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানি খাত যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে ভয়াবহ। প্রতিযোগী দেশের চেয়ে পিছিয়ে যাবে বাংলাদেশ। রপ্তানি আয়ে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ঝড় চলছে। এ অবস্থায় ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবেন না। ’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিটিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।