কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হতে বাকি আর মাত্র ১৬ দিন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের শেষ কর্মদিবস। এর আগেই সংসদে পাস হওয়া আইনটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর শেষে সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ এবং সেই আইনের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের শূন্যপদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।
আগের দুইবার অনুসন্ধান কমিটি তাদের কাজ সম্পন্ন করার জন্য ১০ দিন সময় পেলেও নতুন আইনে ১৫ দিন সময় পেতে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইনের বিলটি সংসদে পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সইয়ের পর এটির গেজেট হবে। রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটিও গঠন করবেন। করোনাকালের এই সংকটের মধ্যেই এসব কাজ সম্পন্ন হবে আশা করছি। ’
নতুন আইন অনুসারে আগের দুইবারের মতোই অনুসন্ধান কমিটি প্রতিটি পদের বিপরীতে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে এবং রাষ্ট্রপতি তাঁদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন।
গতবার অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি এবং অনুসন্ধান কমিটির তৈরি নামের তালিকা থেকে ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন এবং সেদিনই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে কবিতা খানম বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আগের অনুসন্ধান কমিটি ও এবার আইন অনুসারে গঠিত হতে যাওয়া অনুসন্ধান কমিটি এবং কমিটির দায়িত্ব ও কার্যপরিধি একই থাকার পরও পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন হতে যাচ্ছে। আইনটি নিয়ে বিতর্ক চলমান। এবার রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়নি। গতবারের মতো অনুসন্ধান কমিটি যোগ্য ব্যক্তিদের অনুসন্ধানে সব অংশীজনের সহযোগিতা পাবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া ৩১টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম চেয়েছিল। এর মধ্যে ২৭ দলের সাড়া মেলে এবং ওই দলগুলোর কাছ থেকে মোট ১২৫ জনের নাম পাওয়া যায়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি (রব) সার্চ কমিটিকে কোনো নামের তালিকা না পাঠিয়ে কেন পাঠানো হয়নি বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয়। সিপিবির যুক্তি ছিল, ‘কোনো রাজনৈতিক দল যদি কোনো নাম সুপারিশ করে, সে ধরনের নাম ডিসকোয়ালিফাই করা উচিত। ’