রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে এক তরুণীর ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত রবিবার দুপুরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পুলিশের। মৃত রুহি (১৯) ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থানার হরিয়ারঘাট গ্রামের সেকেন্দার আলীর মেয়ে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল সোমবার দুুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় রুহির প্রেমিক মিথুন ওরফে আকাশকে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে আটক করা হয়েছে। মিথুন গঙ্গাচড়ার ধামুর গ্রামের ইবাদত আলীর ছেলে। তিনি নিজের নাম মিথুন হলেও প্রেমিকা রুহির কাছে আকাশ বলে পরিচয় দেন এবং বাড়ি গঙ্গাচড়ায় হলেও রংপুর নগরের হারাগাছ থানার বাহারকাছনা রাম গোবিন্দমোড়ের ঠিকানা দিয়েছিলেন।
এদিকে রুহির মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কোতোয়ালি থানার এএসআই নাদিরা ও কনস্টেবল আফরোজা বেগমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়েছে। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপকমিশনার (ট্রাফিক) মেনহাজুল আলম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মাহব-উল-আলম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুহির সঙ্গে আকাশের (মিথুন) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের মার্চ মাসে ঝিনাইদহ থেকে আকাশের সঙ্গে দেখা করতে রংপুরের বাহারকাছনা রাম গোবিন্দমোড়ে আসেন রুহি। এ সময় রাতে একা ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে সেখান থেকে রুহিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাঁকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রেখে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত শনিবার রুহি আবার আকাশের সঙ্গে দেখা করতে ঝিনাইদহ থেকে রংপুরে আসেন। এ সময় আকাশের মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে বাহারকাছনা রাম গোবিন্দমোড়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন রুহি। বিষয়টি নজরে এলে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ৯৯৯-এ কল করে স্থানীয় লোকজন।
পরে হারাগাছ থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে যায়।
সেখানে থাকা অবস্থায় গত রবিবার দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন রুহি। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী বলেন, এ ঘটনায় গতকাল বিকেলে রুহির বাবা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
এতে রুহির প্রেমিক মিথুন তথা আকাশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে রুহির কল রেকর্ড তথ্য যাচাই করে মিথুনকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়। সাজ্জাদ হোসেন বলেন, থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রুহি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।