<p>ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে গতকাল শনিবার সিলেট ও ফরিদপুরের সালথায় সংঘর্ষে দুই সমর্থক নিহত হয়েছে। দুই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৭ জন। সিলেট সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নে দুই মেম্বার পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এবং ফরিদপুরের সালথার যদুনন্দী ইউনিয়নে দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ওই দুই ইউনিয়নে আগামী ১১ নভেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।</p> <p>সিলেটে নিহত আলা উদ্দিন আলা (৪৫) জালালাবাদ ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের মৃত আব্দুস সত্তারের ছেলে। অন্যদিকে ফরিদপুরের সালথায় নিহত মারিজ শিকদার (৩২) যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের মৃত সোহরাব শিকদারের ছেলে। সিলেটের ঘটনায় এরই মধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।</p> <p>জানা যায়, সিলেট সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নে মেম্বার পদপ্রার্থী আব্দুল হামিদ ও গোলাম রাব্বানীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিয়ে আলা উদ্দিন আলা এবং তাঁর চাচাতো ভাই আলী আহমদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় গোলাম রাব্বানীর লোকজনকে নিয়ে বাড়ির দিকে না আসতে আলা উদ্দিনকে নিষেধ করা হয়। গতকাল আলা উদ্দিন গোলাম রাব্বানীর কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে বাড়িতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় প্রতিপক্ষ লোকজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন আলা উদ্দিন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো সাতজন। তারা ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।</p> <p>সংঘর্ষের খবর পেয়ে জালালাবাদ থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংঘর্ষে নিহত এবং ১০ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের।</p> <p>এদিকে ফরিদপুরের সালথার যদুনন্দী ইউনিয়নে দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে।</p> <p>পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিক মোল্লার সমর্থকদের সঙ্গে অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী টুকু ঠাকুরের সমর্থকদের কথা-কাটাকাটির জের ধরে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিক মোল্লার সমর্থক মারিজ শিকদার প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। তাঁকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত  চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।</p> <p>মারিজ শিকদারের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে রফিক মোল্লার সমর্থকরা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী টুকু ঠাকুর এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়ার বাড়িসহ অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।</p> <p>সালথা থানার ওসি মো. আশিকুজ্জামান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।</p> <p>এর আগে গত ১৫ অক্টোবর ইউপি নির্বাচন ঘিরে মাগুরা সদরের জগদল ইউনিয়নে দুই মেম্বার পদপ্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে চার ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন।</p>