<p>এ বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি), প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাবও পাঠানো হবে। তবে পরীক্ষা না হলেও শ্রেণিকক্ষে মূল্যায়ন শেষে সনদ পাবে শিক্ষার্থীরা।</p> <p>প্রসঙ্গত, জেএসসি ও পিইসি কোনো পাবলিক পরীক্ষা নয়। এই পরীক্ষা দুটি সরকারের নির্বাহী আদেশে নেওয়া হয়। এ জন্য এই পরীক্ষা না নিতে হলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বছরের পিইসি ও ইবতেদায়ি না নেওয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।</p> <p>সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। টেলিভিশন, রেডিওসহ নানা মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল। তবে আন্ত মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলা হয়েছে। এখন ২০২১ শিক্ষাবর্ষের মাত্র দু-তিন মাস অবশিষ্ট আছে। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও মুদ্রণ, দেশব্যাপী একযোগে এই পরীক্ষা পরিচালনা করা এবং নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য হবে। করোনা সংক্রমণজনিত কারণে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনীও গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।</p> <p>সারসংক্ষেপে আরো বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকেও জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বল্প সময়ে ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে শিখন-শেখানো কার্যক্রম বিবেচনা করে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণের পরিবর্তে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা যেতে পারে।</p> <p>প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রাথমিক সমাপনী-সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে অনুযায়ী আমরা করণীয় ঠিক করব। তবে প্রাথমিক সমাপনী না হলেও আমরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করব। সেটা স্কুলের নিজ নিজ পরীক্ষাও হতে পারে বা শ্রেণিকক্ষে অন্য কোনো মূল্যায়নও হতে পারে। মূল্যায়ন শেষে তাদের সনদ দেওয়া হবে।’</p> <p>জানা যায়, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আর অষ্টম শ্রেণির এখন পর্যন্ত সপ্তাহে দুই দিন সরাসরি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আর ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। ফলে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগও নেই।</p> <p>গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘এখন যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে আলাদা করে বোধ হয় জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। মনে হয় না জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ পাব। তবে অন্য শ্রেণির মতো অষ্টম শ্রেণিতেও শ্রেণি মূল্যায়ন হবে।’</p> <p>নাম প্রকাশ না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন হলেও এখন পর্যন্ত ফরম পূরণ হয়নি। রেজিস্ট্রেশন করা অনেক শিক্ষার্থীই শেষ পর্যন্ত ফরম পূরণ করে না। তাই শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অবস্থা জানতে আমরা ফরম পূরণের চিন্তা-ভাবনা করছি। যারা ফরম পূরণ করবে তাদের শ্রেণিকক্ষে মূল্যায়ন শেষে সনদ দেওয়া হবে। তবে পরীক্ষা গ্রহণের সম্ভাবনা নেই।</p> <p>ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতিবছর জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত আমরা এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি।’</p>