<p>আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে করোনা হাসপাতাল নির্মাণকাজ। দিন-রাত বিরামহীনভাবে কাজ চলছে। দেশের সবচেয়ে বড় কনভেনশন হলকে হাসপাতালে রূপ দিতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সরঞ্জাম আনার কাজ শেষ। নির্ধারিত সময়ের আগেই এই অস্থায়ী করোনা হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।</p> <p>বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই ক্রান্তিকালে সরকারকে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকা দেওয়ার পাশাপাশি আইসিসিবিকে পাঁচ হাজার শয্যার করোনা হাসপাতালে রূপান্তরের প্রস্তাব দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।</p> <p>জানা যায়, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে ও প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল আইসিসিবি পরিদর্শন করে। পরে এটাকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে, তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে দুই হাজার ৭১ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির জন্য কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে প্রয়োজন দেখা দিলে এটিকে পাঁচ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা যাবে।</p> <p>গতকাল শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির এক্সপো জোনে তৈরি হচ্ছে হাসপাতালের অবকাঠামো। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি রাখা হয়েছে কনভেনশন হলগুলোতে। শ্রমিকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। পুরোদমে চলছে অবকাঠামো নির্মাণ। ছোট ছোট ঘরের মতো করে তৈরি হচ্ছে আইসোলেশন সেন্টার, যাতে একটি করে বেড স্থাপিত হবে। এসি স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালের বিছানা, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও বিদ্যুতের জন্য সাবস্টেশনও চলে এসেছে। যা স্থাপনের কাজ চলছে।</p> <p>হাসপাতাল তৈরিতে সম্পৃক্ত স্বাস্থ্য প্রকৌশলীরা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শেষ হবে। দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছেন সম্পৃক্তরা। সিসি ক্যামেরাও স্থাপন করা হবে—যেন রোগীকে সার্বক্ষণিক মনিটর করতে পারেন ডাক্তার ও নার্সরা। গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে নানামুখী সুবিধার এই কনভেনশন সেন্টারে রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি খাবারের ব্যবস্থাও থাকবে।</p> <p>গতকাল শনিবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম হাসপাতাল নির্মাণে কর্মযজ্ঞ দেখভাল করছিলেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সন্তোষজনক পর্যায়ে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী। আমরা আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের বেশির ভাগই চলে এসেছে। এখন ফিটিং করতে যতটুকু সময় লাগে। এরই মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে।’</p> <p>এই প্রকৌশলী বলেন, ‘স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ভেন্যুটিকে হাসপাতালে রূপান্তর করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করবে। এরপর হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য বিষয় তারা দেখবে।’</p> <p>মাসুদুল আলম বলেন, এক্সপো জোনকে ছয়টি ক্লাস্টারে ভাগ করে প্রতি ক্লাস্টারে ২৮৮টি করে বেড স্থাপন করা হবে, যাতে মোট এক হাজার ৪৮৮টি বেড স্থাপিত হবে। আর চারটি কনভেনশন হলে নির্মিত হবে ৫৬৪টি বেড। জরুরি ও গুরুতর রোগীর জন্য থাকবে আইসিইউ সাপোর্ট।</p> <p> </p>