<p>দেশে প্রথমবারের মতো শিশু ক্যান্সার রোগীর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, গত বছরের ২৬ নভেম্বর কর্নেল শরমিন আরা ফেরদৌসির নেতৃত্বে ঢাকা সিএমএইচের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (বিএমটি) সেন্টারে এই সাফল্য অর্জিত হয়।</p> <p>সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশুদের একটি স্নায়ুজনিত ক্যান্সার হচ্ছে নিউরোব্লাস্টোমা। সারা বিশ্বে এ রোগে বছরে প্রতি মিলিয়নে ১০ জন শিশু আক্রান্ত হয়। ক্যান্সারজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর শতকরা ১৫ ভাগ হয় নিউরোব্লাস্টোমার কারণে। এই চিকিৎসার প্রতিটি পদক্ষেপ সঠিকভাবে সম্পন্ন করলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।</p> <p>চিকিৎসা পাওয়া ১০ বছর বয়সী শিশু সওদা আক্তারের বাবা সেনাবাহিনীর করপোরাল বেলাল। গত বছর ৩১ জানুয়ারি সিএমএইচ ঢাকার শিশু বিভাগে সওদাকে নিয়ে আসা হয়। তিন মাসের জ্বর নিয়ে সে ভর্তি হয়। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার ‘নিউরোব্লাস্টোমা স্টেজ-৪’ রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর প্রথম পর্যায়ে অপারেশনের মাধ্যমে টিউমার অপসারণ, এরপর কেমোথেরাপি এবং শেষে রোগীর নিজের অস্থিমজ্জাই তার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে এই প্রথম দেশে নিউরোব্লাস্টোমা রোগের সম্পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।</p> <p>জনসাধারণের দোরগোড়ায় আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের সার্বিক সহযোগিতায় ঢাকা সিএমএইচে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের কাজ শুরু হয় উল্লেখ করে আইএসপিআর জানায়, সেনা সদর, এজির শাখার (কল্যাণ ও পুনর্বাসন পরিদপ্তর) আর্থিক সহযোগিতায় এবং সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিতায় প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের নিজ অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন এবং ডোনারের দেওয়া অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন সফলভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশে প্রথম শিশু ক্যান্সার রোগীর নিজ অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। অচিরেই এই প্রতিষ্ঠানে শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগীর সম্পূর্ণ আরোগ্যকারী চিকিৎসা অ্যালোজেনিক (নিজের অস্থিমজ্জা নিজের শরীরে) বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বেসামরিক জনগণও ঢাকা সিএমএইচের বিএমটি সেন্টারের এই চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।</p> <p> </p>