<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলাজুড়ে অবস্থিত লালমাই পাহাড়। এটি বৃহত্তর কুমিল্লার ঐতিহ্য। উত্তর-দক্ষিণে ১১ মাইল লম্বা ও পূর্ব-পশ্চিমে দুই মাইল চওড়া এই পাহাড়ের মাটি কিছুটা লাল। লাল মাটি ছাড়াও এই পাহাড়ের ওপরে আছে ঘন গাছপালা। ফাঁকা জায়গাও দেখা যায় কিছুটা। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে রয়েছে শালবন বৌদ্ধবিহার। এর বাইরেও পাহাড়ের এখানে-সেখানে ছড়িয়ে আছে প্রত্নতত্ত্ব ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই পাহাড় সৃষ্টি ও নামকরণ নিয়ে নানা গল্প আছে। শোনা যায়, রাম-রাবণের যুদ্ধে রামের ছোট ভাই লক্ষ্মণ গুরুতর আহত হলে চিকিত্সক জানান, বৈশল্যকরণী পাতার রস ক্ষতস্থানে লাগালে লক্ষ্মণ ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু হনুমান গাছ চিনতে পারে না। যার কারণে সে হিমালয় পর্বত পুরোটা তুলে নিয়ে আসে। চিকিৎসার পর আবার পর্বতটা যথাস্থানে রাখতে রওনা দেয় হনুমান। কিন্তু পথে পর্বতের কিছু অংশ ভেঙে কুমিল্লার এই স্থানটিতে এসে পড়ে। তখন থেকেই স্থানটির নাম হয় লালমাই।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবার কারো কারো মতে, লালমতি ও ময়নামতি নামের দুই রাজকন্যার নামানুসারেই লালমাই পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, প্রায় পঁচিশ লাখ বছর আগে প্লাইস্টোসিন যুগে এই পাহাড় গঠিত হয়েছিল। সে হিসাবে এটি বাংলাদেশের বরেন্দ্রভূমি এবং মধুপুর ও ভাওয়াল গড়ের সমসাময়িক।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৮৯ সালের এপ্রিলে এবং ১৯৯১ সালের জুলাই মাসে লালমাই পাহাড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চলে। অনুসন্ধানে বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও পাওয়া যায়, যা এখানকার ইতিহাসকে আরো রহস্যময় করে তোলে। এর মধ্যে বৌদ্ধবিহার ও স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ উল্লেখযোগ্য। লালমাই পাহাড়ের কাছে অবস্থিত ময়নামতি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ময়নামতি বৌদ্ধবিহার ও এর সংলগ্ন অঞ্চল একসময় বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। লালমাই পাহাড়ের সর্ব দক্ষিণ প্রান্তদেশের চূড়ায় দুটি মন্দিরের দেখা মেলে। একটি শ্রী শ্রী চণ্ডী মন্দির, অন্যটি শিব মন্দির। লালমাই পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এর পরিবেশগত গুরুত্বও অসীম। পাহাড়টি এই অঞ্চলের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি স্থানীয় কৃষির ওপরও প্রভাব ফেলছে। পাহাড়ের ঢালে এবং আশপাশের সমতলভূমিতে ধান, পাট, আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদিত হয়। তবে ক্রমাগত লালমাই পাহাড়ের মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করার কারণে এই পাহাড়ের সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য অনেকাংশেই হারিয়ে যেতে বসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:right"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল<strong> সানি</strong></span></span></span></span></span></p>