<p>চন্দন একটি সুগন্ধি ভেষজ উদ্ভিদ। চন্দনের ইংরেজি নাম ‘স্যান্ডাল উড’। উদ্ভিদবিজ্ঞানী লিনিয়াস ১৭৫৩ সালে প্রথম গাছটির প্রজাতি শনাক্তসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেন।<br /> চন্দনগাছ সাধারণত ৪ থেকে ৯ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। চন্দনগাছ শত বছর বাঁচে। গাছের পাতার ওপরের অংশ উজ্জ্বল সবুজ থাকে। এই গাছে লাল রঙের ছোট ছোট ফুল ফোটে, ফুল শেষে ফল হয়। শ্বেত ও রক্ত দুই ধরনের চন্দনগাছ আছে। শ্বেতচন্দনের বৈজ্ঞানিক নাম Santalum album এবং রক্তচন্দনের বৈজ্ঞানিক নাম Pterocarpus santalinus.<br /> চন্দনের আদি আবাস ভারতে হলেও শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও অস্ট্রেলিয়ায় মোটামুটি সহজলভ্য। ভারতের মহীশূর চন্দনের জন্য বিখ্যাত। তবে কর্ণাটক ও তামিলনাডুতেও ভালো জন্মে। এ ছাড়া উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ ও ওডিশায়ও  চন্দন দেখা যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি গাছ দেখা যায়। সম্প্রতি চট্টগ্রামের ষোলশহরে অবস্থিত বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ১০ বছর চেষ্টার পর ১০০টি গাছ নিয়ে চন্দনের একটি বাগান গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে তিন শতাধিক চারাও বিতরণ করা হয়েছে সেই   বাগান থেকে।<br /> চন্দনগাছ বড় হয় ধীরগতিতে। পরিপক্ব হতে প্রায় ৫০ বছর সময় লাগে। এর শিকড় আংশিক পরজীবী। আশ্রীয় গাছ বা হোস্ট প্লান্ট ছাড়া এটি বড় হতে বেশি সময় নেয়। শ্বেতচন্দনের আশ্রীয় গাছ হিসেবে কালো কড়ই, নিম, সেগুন ইত্যাদি উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।<br /> প্রাচীন ভারতে চন্দনকে, বিশেষ করে শ্বেতচন্দনকে পুণ্য অর্জনের উপকরণ হিসেবে সম্মান করা হতো। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এর বহুল ব্যবহার আছে। চন্দনের আছে হাজারো ঔষধি গুণ।<br /> রূপচর্চার জন্য চন্দনের খ্যাতি যুগ যুগ ধরে। প্রাচীনকালে রূপচর্চার অন্যতম উপাদান ছিল চন্দন। বর্তমান সময়েও বিভিন্ন রকম কসমেটিকস ও সুগন্ধিতে চন্দন ব্যবহৃত হয়। চন্দন ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় বেশ উপকারী। এতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মুখের বলিরেখা দূর করতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং রোদে পোড়া দাগ দূর করতে চন্দন ব্যবহার করা হয়।<br /> ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল<br /> [আরো জানতে পত্রপত্রিকায় চন্দন সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p> <p> </p>