<p>রজনীগন্ধা (TubeRose) Agavaceae পরিবারের অন্তর্গত একটি মনোরম ও সুগন্ধী ফুল। রং ও সুগন্ধীর জন্য এই ফুল সবার কাছেই প্রিয়। রাতে সুগন্ধ ছড়ায় বলে একে রজনীগন্ধা বলে। এই ফুলকে রাতের রানি বলা হয়। কারণ এটি সন্ধ্যায় ফোটে আর মিষ্টি সুবাস ছড়ায়। এর মোহনীয় গন্ধ তনুমনে প্রশান্তি এনে দেয়। সাদা রং ও গন্ধে বাগান হয় সমৃদ্ধিশালী। সৌন্দর্যের কারণে আমাদের সামাজিক বিভিন্ন কাজে যেমন—গৃহসজ্জা, বিয়েশাদি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয় এই ফুল। ফলে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে বহু আগে।</p> <p>রজনীগন্ধা ভারতীয় উপমহাদেশে আসে পর্তুগিজদের আসার পর। এর আদি বাসস্থান মেক্সিকোতে হলেও বর্তমানে অনেক দেশেই জন্মে। বৈজ্ঞানিক নাম Polianthes tuberosa.</p> <p>সারা বছরই বাজারে রজনীগন্ধা ফুলের চাহিদা বেশি থাকে এবং সারা বছরই চাষ হয়ে থাকে। তবে শীতকালে কিছুটা কম ফোটে। রজনীগন্ধার কন্দ লাগিয়ে বংশবৃদ্ধি করা হয়। মার্চ-এপ্রিল মাস কন্দ লাগানোর উপযুক্ত সময়। আমাদের দেশের যশোর, সাভার, নরসিংদী প্রভৃতি এলাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল চাষ হচ্ছে। রজনীগন্ধা আর্দ্র ও উষ্ণ জলবায়ুতে বেশ ভালো জন্মে। জৈবসারসমৃদ্ধ উর্বর দোআঁশ বা এটেল মাটিতে এর ফলন ভালো হয়।</p> <p>রজনীগন্ধার সাধারণত তিনটি জাত যেমন—সিঙ্গেল, সেমি ডাবল, ডাবল আমাদের দেশে দেখা যায়। তার মধ্যে সিঙ্গেল জাতে রয়েছে পার্ল, বম্বে, ক্যালকাটা ও সিঙ্গেল ম্যাক্সিকান। আর ডাবল জাতে রয়েছে ডাবল পার্ল ও প্রোজ্জ্বল। আমাদের দেশের কৃষকরা প্রোজ্জ্বল, সেমি ডাবল ও ডাবল জাতের রজনীগন্ধা চাষ করে থাকেন। এর মধ্যে সিঙ্গেল জাতের ফুলগুলোতে পাপড়ি এক সারিতে হয় এবং দেখতে সাদা ও খুব সুগন্ধযুক্ত হয়। প্রোজ্জ্বল, সেমি-ডাবল, ডাবল জাতগুলোতে দুই বা তার বেশি পাপড়ি দেখা যায় এবং দেখতে হালকা লালচে ধরনের হয় এবং কম সুগন্ধযুক্ত হয়।</p> <p>ফুলদানিতে রজনীগন্ধা ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। সুন্দর গন্ধের কারণে এই ফুলের নির্যাস থেকে সুগন্ধি দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। লাভজনক বিধায় বৈদেশিক বাণিজ্যেও এর অপার সম্ভাবনা রয়েছে।</p> <p>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে পত্রপত্রিকায় রজনীগন্ধা সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>