<p>ভাস্কো দা গামা একজন বিখ্যাত পর্তুগিজ অনুসন্ধানকারী ও পর্যটক। তিনি জন্মেছিলেন পর্তুগালের সিনেস শহরে। বাবা এস্তেভাঁও দা গামা ও মা ইসাবেল  সোন্ড্রের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। পড়াশোনা করেছেন গণিত ও জাহাজ চালনা বিদ্যায় ইভরা শহরে। এক পর্যায়ে নৌ কর্মকর্তা পদে যোগ দেন। ১৪৯২ সালে জন দ্বিতীয় সেতুবাল ও এলগার্ভ বন্দরে শান্তিকালীন পর্তুগালের জাহাজে ফ্রান্স জাহাজের আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে ভাস্কো দা গামাকে পাঠান, যা তিনি অল্প সময়ে ফলপ্রসূভাবে সম্পাদন করেন। তিনি ক্যাটারিনা ডি আতাইদেকে বিয়ে করেন। তাঁর ছয় পুত্র ও এক কন্যাসন্তান ছিল।</p> <p>ভাস্কো দা গামা প্রথম পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ইউরোপ থেকে ভারতে আসেন। তিনি পর্তুগালের বর্তমান রাজধানী লিসবন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশে এসে পৌঁছান এবং সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে তিনি ১৪৯৮ সালের ২০ মে তাঁর নৌবহরসহ দক্ষিণ ভারতের কালিকটের নিকটবর্তী কাপ্পাডুতে এসে উপস্থিত হন।</p> <p>তাঁর এই ভ্রমণের মাধ্যমে এশিয়া ও ইউরোপ পানিপথে সংযুক্ত হয়। পাশাপাশি আটলান্টিক মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগ করে। এর ফলে ইউরোপীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির সেতুবন্ধ গড়ে তোলেন।</p> <p>ইতিহাসে ভাস্কো দা গামার  সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সে সময় চীন ও ভারতসহ দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য পরিচালিত হতো একমাত্র স্থলপথে। ইউরোপ থেকে এশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে সে সময় ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের শাসকরা ইউরোপীয় বণিকদের কাছ থেকে শুল্ক আদায় করতেন। ইউরোপিয়ান বণিকরা এই শুল্ক প্রদানে তেমন একটা আগ্রহী ছিলেন না।</p> <p>১৮৬৯ সালে সিনাই উপদ্বীপে সুয়েজ খাল খননের আগ পর্যন্ত নাবিকরা ইউরোপ থেকে এশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য ভাস্কো দা গামার দেখানো জলপথই অনুসরণ করতেন।</p> <p>১৪৯৯ সালে পর্তুগালের রাজা ম্যানুয়েল সিনেস শহরটি ভাস্কো দা গামাকে পুরস্কার হিসেবে প্রদান করেন। পর্তুগাল রাজা তৃতীয় জন ভাস্কো দা গামাকে ভারতের ‘ভাইসরয়’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। তা ছাড়া ভারতের পশ্চিম উপকূলের কলোনিগুলোর শাসনকর্তাও ছিলেন তিনি। ১৫২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভাস্কো দা গামা মারা যান।</p> <p>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে পত্রপত্রিকায় ভাস্কো দা গামা সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>