<p>আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় পাখি ফিঙে। মাছের লেজের মতো চেরা লেজবিশিষ্ট উজ্জ্বল কালো রঙের গায়ক পাখিটির আকার মাঝারি, লম্বা ও চোখা ডানা, সামান্য বাঁকা শক্ত ঠোঁট, যার গোড়ায় লম্বা গোঁফ রয়েছে। গায়ের রং কালো হলেও ফিঙে দেখতে খুব সুন্দর। লেজসহ ২৮ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Dicrurus macrocercus. ইংরেজি নাম ব্ল্যাক ড্রোনগো। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এ পাখির দেখা মেলে বেশি।</p> <p>আচার-আচরণের কারণে অনেকে একে পাখির রাজাও বলেন। রাজকীয় কাক হিসেবেও পরিচিতি আছে এর। অস্থির প্রকৃতির ফিঙে অন্যান্য পাখিকে সহ্য করতে পারে কম। এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকা এর ধাতে নেই। আচরণে কখনো কখনো হিংস্র হয়ে ওঠে। ছোট পাখিদের তো তটস্থ করে রাখেই, বড় পাখিও রেহাই পায় না। নিজের চেয়ে আকারে বড় চিল, বাজপাখিকেও তাড়িয়ে বেড়ায়। তবে কণ্ঠ বেশ মধুর, মিষ্টি শিস দেয়, শুনতে বেশ লাগে।</p> <p>ফিঙে প্রধানত পতঙ্গভুক। গ্রামাঞ্চলে গবাদি পশুর পিঠে বসে বা উড়ে উড়ে ফড়িং, মৌমাছি, উলু পোকা, মাজরা পোকা, মাকড়সা—এসব খেতে দেখা যায়। সাধারণত গাছের খোঁড়লে বাসা তৈরি করে তিন থেকে চারটি ডিম পাড়ে। এদের প্রজনন সময় মার্চ থেকে জুন। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩ থেকে ১৪ দিন।</p> <p>আফ্রিকা, প্রাচ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় দেখা গেলেও দক্ষিণ এশিয়ায় এই পাখির প্রাধান্য বেশি। পৃথিবীতে ২৪ প্রজাতির ফিঙে আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে আছে ছয় প্রজাতির।</p> <p>আফ্রিকায় এক ধরনের ফিঙে আছে, যাদের লেজ চামচের মতো। এদের চামচপুচ্ছ ফিঙে বলে। বহু পাখির ডাক নকল করতে পারে এরা। অনেক সময় মিথ্যা বিপত্সংকেত দিয়ে ছোট পশুপাখিকে ভড়কে দেয়। তারা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলে তাদের খাবার নিয়ে সটকে পড়ে দুষ্ট ফিঙে।</p> <p> </p> <p><strong>[আরো বিস্তারিত জানতে বাংলাপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় ফিঙে সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো]</strong></p> <p> </p>