<p>পেট্রোলিয়াম হলো প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভূত তরল, যা পৃথিবীপৃষ্ঠের নিচে পাওয়া যায়। শক্তির অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস পেট্রোলিয়াম। গ্রিক শব্দ ‘পেট্রো’ ও লাতিন শব্দ ‘অলিয়াম’ থেকে পেট্রোলিয়াম শব্দের উৎপত্তি। এখানে ‘পেট্রো’ শব্দের অর্থ ‘পাথর’ এবং ‘অলিয়াম’ অর্থ তেল। অর্থাৎ শাব্দিক অর্থে পাথরের তেলকে পেট্রোলিয়াম বলে।</p> <p>পেট্রোলিয়াম হলো জীবাশ্ম জ্বালানি, যার অর্থ এটি কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে জৈব পদার্থের পচনের ফলে তৈরি হয়। ধারণা করা হয়, প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কোটি বছর আগে পাথরের স্তরে স্তরে গাছপালা ও সামুদ্রিক প্রাণী চাপা পড়ে। কালে কালে এগুলোই খনিজ তেলে পরিণত হয়। সাধারণত প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে খনিতে পেট্রোলিয়াম থাকে। গ্যাসোলিন, কেরোসিন, ডিজেল—এগুলোই পেট্রোলিয়ামের অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া প্রোপেন ও বিউটেন স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় (২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) গ্যাসীয় হলেও উচ্চ চাপে তরল অবস্থায় থাকে বলে এরাও পেট্রোলিয়াম।</p> <p>পেট্রোলিয়ামের বড় একটি অংশ ব্যবহৃত হয় যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে। পাশাপাশি শিল্প-কারখানায় সার, কীটনাশক, মোম, আলকাতরা, লুব্রিকেন্ট, গ্রিজ ইত্যাদি তৈরিতেও পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করা হয়। কৃষিজমিতে সেচকাজে গ্রাম্যপদ্ধতির পাশাপাশি ডিজেলচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। সেই ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ পেট্রোলিয়াম ব্যবহৃত হচ্ছে।</p> <p>বাংলাদেশের পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের বার্ষিক চাহিদা ৩৩ লাখ মেট্রিক টন। দেশে বিদ্যমান পেট্রোলিয়াম পদার্থের মোট মজুদক্ষমতা ছয় লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন, যার মধ্যে ইষ্টার্ণ রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) মজুদক্ষমতা তিন লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। চট্টগ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের তিনটি প্রধান বিপণন কম্পানির পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেড, যমুনা অয়েল কম্পানি লিমিটেড ও মেঘনা অয়েল কম্পানি লিমিটেডের প্রধান স্থাপনাগুলোর মোট মজুদক্ষমতা দুই লাখ পাঁচ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় তেল বিপণন কম্পানিগুলোর ১৯টি তেল সংরক্ষণাগার রয়েছে।</p> <p>বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে শীর্ষ খনিজ তেল (পেট্রোলিয়াম) উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে স্বীকৃত। পেট্রোলিয়াম রপ্তানিতে শীর্ষে আছে সৌদি আরব ও আমদানিতে চীন।</p> <p> ►  ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p> <p> </p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে বাংলাপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় পেট্রোলিয়াম সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>