<p>স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ছিলেন ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব জরিপের (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া) প্রতিষ্ঠাতা। ১৮১৪ সালে স্কটল্যান্ডের ডামফ্রিশায়ারে জন্মগ্রহণ করা আলেকজান্ডারের বাবা কবি অ্যালান কানিংহাম। বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ার্সে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে ১৮৩৩ সালে কলকাতায় আসেন আলেকজান্ডার। ইংরেজ পণ্ডিত, প্রাচ্যবিদ ও পুরাতত্ত্ববিদ জেমস প্রিন্সেপের উৎসাহেই মূলত তিনি ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব চর্চায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। চাকরিজীবন শেষে ১৮৬১ সালের ৩০ জুন তিনি মেজর জেনারেল পদমর্যাদায় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পুরো চাকরিজীবনে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব নিদর্শন সম্পর্কে নিয়মিত অধ্যয়ন ছিল কানিংহামের শখ।</p> <p>সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর কানিংহাম ১৮৬১ সালের নভেম্বরে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে লর্ড ক্যানিংকে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়েছিলেন। ক্যানিং এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং কানিংহামকে সার্ভের মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়।</p> <p>১৮৬১ থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে তিনি অসংখ্য মুদ্রা, উত্কীর্ণ লিপি, ভাস্কর্য ও স্থাপত্যনিদর্শন আবিষ্কার করেন। এ কাজের মাধ্যমে তিনি প্রাচীন ভারতের প্রকৃত ইতিহাসের ভিত্তি এবং ভারতীয় লিপিতত্ত্ব, মুদ্রাতত্ত্ব, শিল্পকলা ও স্থাপত্যশিল্প চর্চার ভিত্তি স্থাপন করেন। লুপ্ত ভারতীয় নগরগুলোর শনাক্তকরণ ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এর মধ্যে অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক হচ্ছে বাংলায় পুণ্ড্রনগরের শনাক্তকরণ।</p> <p>তিনি বহু লিপি আবিষ্কার করেছিলেন। এগুলোর পাঠোদ্ধার ভারতীয় ইতিহাসের বহু অজ্ঞাত তথ্য উদ্ঘাটনে সাহায্য করেছে। এই লিপির অনেকগুলোর পাঠোদ্ধার তিনি নিজেই করেছিলেন।</p> <p>১৮৭১-৭২ সালে তিনি ঝটিকা সফরে বাংলায় এসেছিলেন। পরিদর্শন করেছেন সোনারগাঁ, ঢাকায় পরী বিবির মাজার, বিক্রমপুরের বল্লালসেনের রাজপ্রাসাদ বল্লালবাড়ি এবং বাবা আদম শহীদের মাজার। সোনারগাঁয়ে সংগৃহীত লিপিসহ ১২টি মুসলিম লিপি সংগ্রহ করেছিলেন। ওই সময় তাঁর দেখা বাংলার অন্যান্য প্রাচীন স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—দেবীকোট, ঢাকা, মালদহ ও সোনারগাঁ। </p> <p>১৮৮৫ সালে কানিংহাম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে যান। এর আট বছর পর তিনি লন্ডনেই মারা যান।</p> <p><strong>রিদওয়ান আক্রাম</strong></p> <p> </p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে বাংলাপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় আলেকজান্ডার কানিংহাম সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p> <p> </p>