<p>পেঙ্গুইন বরফ রাজ্যের পাখিদের মধ্যে অন্যতম। Spheniscidae পরিবারের অন্তর্গত এই পাখির ১৮টি প্রজাতি আছে। উড়তে না পারলেও এটি আদিকাল থেকেই পাখির খেতাব পেয়ে আসছে। পৃথিবীতে পেঙ্গুইনের আবির্ভাব পাঁচ কোটি বছর আগে বলে ধারণা করা হয়। পাখি হলেও এরা জীবনের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ সময় পানিতে ব্যয় করে। সাঁতার কাটায় পেঙ্গুইন বেশ পটু। প্রতি ঘণ্টায় এরা প্রায় ৩০ মাইল পর্যন্ত সাঁতার কাটতে এবং টানা ২০ মিনিট পানিতে ডুব দিয়ে থাকতে পারে।</p> <p>পেঙ্গুইনের প্রায় সব প্রজাতির বসবাস দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোতে। এ ছাড়া এর আশপাশের কিছু উষ্ণ দ্বীপেও এদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। এই পাখির সিলিন্ডারের মতো দেহ এবং ছোট পায়ের কারণে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। পেঙ্গুইনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হলো ‘ব্লু পেঙ্গুইন’। এদের উচ্চতা প্রায় ১৪ ইঞ্চি এবং ওজন এক থেকে ১.৫ কেজি হয়। সবচেয়ে বড় প্রজাতি এম্পেরর বা সম্রাট পেঙ্গুইন। এর গড় উচ্চতা প্রায় ৪৮ ইঞ্চি এবং ওজন ২২-৪৫ কেজি। এর বেশির ভাগ প্রজাতির কালো পিঠ ও সাদা পেট থাকে। দূর থেকে এদের কালো কোট পরা ভদ্রলোকের মতো লাগে। কিছু প্রজাতির মাথায় সাদা, কালো বা কমলা রঙের দাগ দেখা যায়।</p> <p>পেঙ্গুইনের খাদ্যাভ্যাস এর আশপাশে থাকা পানিতে পাওয়া রিসোর্সের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত এরা মাছ ও জলজ প্রাণী খেয়ে থাকে। বেশির ভাগ প্রজাতির পেঙ্গুইন বছরে একবার ডিম দেয় এবং সে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। আফ্রিকান ও ব্লু পেঙ্গুইন বছরে দুইবার ডিম পাড়ে। কিং পেঙ্গুইন তিন বছরে দুইবার ডিম দেয়। মা-বাবা দুজনে মিলে পালাক্রমে ডিমে তা দেয়। এম্পেরর বা সম্রাট পেঙ্গুইনের ক্ষেত্রে শুধু বাবা ডিমে তা দেয়। এই প্রজাতির বাবা পেঙ্গুইন ৬৫ দিনের জন্য ডিমটি নিজের পায়ের ওপর রেখে তার শরীরের উষ্ণ পালকযুক্ত বিশেষ থলের সাহায্যে ঢেকে রাখে। সে সময় মা পেঙ্গুইন সমুদ্রে যায় তার ছানাটির জন্য মজার মজার সব খাবারের সন্ধানে। নির্দিষ্ট দিন পর ডিম ফুটে ছানা বের হয়। তখন মা পেঙ্গুইন ফিরে এলে বাবা পেঙ্গুইন মাছ শিকার করতে সমুদ্রে যায়। সে সময় ছোট্ট ছানাটির দেখাশোনার দায়িত্ব নেয় তার মা।</p> <p>পেঙ্গুইনের প্রধান শত্রু সামুদ্রিক সিল, হাঙর ও কিলার হোয়েল বা খুনী তিমি। অনুকূল পরিবেশে একটি পেঙ্গুইন ১৫-২০ বছর, এমনকি কিছু কিছু প্রজাতি সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।</p> <p><strong>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</strong></p>