<p>মটরশুঁটি legume জাতীয় উদ্ভিদ। একে ইংরেজিতে Pea বলে। এটি এক প্রকারের ফল। প্রতিটি ফলে বেশ কয়েকটি সবুজ বা হলুদ বর্ণের গোলাকার বীজ থাকে। গড়ে প্রতিটি বীজের ওজন ০.১ থেকে ০.৩৬ গ্রাম। খাবারের স্বাদ বাড়াতে মটরশুঁটির তুলনা হয় না। যেকোনো সবজি, তরকারি, সালাদ, মাছ ভুনা, পোলাও, নুডলসসহ বিভিন্ন ধরনের রান্নায় এর ব্যবহার হয়। এতে আছে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ‘সি’, ফলিক এসিড, বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন ‘এ’, ফসফরাস, জিংক, ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স ও ভিটামিন ‘কে’। মটরশুঁটি আমিষের ভালো উৎস। শুকনা মটরশুঁটি ভেঙে দ্বিখণ্ডিত করে মটর ডাল তৈরি করা হয়। মটরশুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম Pisum sativum.</p> <p>প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসারে নিওলিথিক যুগের সিরিয়া, তুরস্ক ও জর্দানে মটরশুঁটির খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রাচীন মিসরের নীল নদের ব-দ্বীপ এলাকায় প্রায় ৪৮০০-৪৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এর ব্যবহারের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। পাকিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম ভারতবর্ষের হরপ্পা এলাকায় ২২৫০-১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মটরশুঁটির চাষ হতো।</p> <p>এটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। আমাদের দেশে শীতকালে মটরশুঁটির চাষ করা হয়। এটি লতানো গাছ। এই গাছ দুই থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। মটরশুঁটির পাতা মিষ্টি ঘ্রাণ যুক্ত। ফুল অনেক সুন্দর দেখতে। মটরশুঁটির ক্ষেত যখন ফুলে ফুলে ভরে যায়, তখন তা দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। আমাদের দেশে এখন বিভিন্ন জাতের মটরশুঁটির চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্য আরকেল, বনভিল, গ্রিন ফিস্ট, আলাস্কা, স্নো-ফ্লেক, সুগার স্ন্যাপ উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি মটরশুঁটি-১, বারি মটরশুঁটি-২ ও বারি মটরশুঁটি-৩ নামের তিনটি জাত অবমুক্ত করেছে। মটরশুঁটি শীতপ্রধান ও আংশিক আর্দ্র জলবায়ুর উপযোগী ফসল। দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে মটরশুঁটির চাষ হয়।</p> <p>মটরশুঁটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। নিয়মিত মটরশুঁটি খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ, পাকস্থলীর ক্যান্সার ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে এবং হৃৎপিণ্ড সতেজ ও হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।            </p> <p> </p> <p> </p>