<p>জামরুল হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত একটি রসালো গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সামোয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে জন্মে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে জামরুলের ব্যাপক চাষ হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium samarangense. জামরুলের আঞ্চলিক নাম অনেক। যেমন—গোলাপজাম, আমরোজ, সাদাজাম, কোনো কোনো অঞ্চলে লকট নামেও পরিচিত। জামরুল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। তবে সাদা, হালকা সবুজ ও লাল-গোলাপি রঙেরই বেশি দেখা যায়।</p> <p>দেখতে ঘণ্টাকৃতির বলে এটি Bell Fruit নামেও পরিচিত। জামরুল ফলের মধ্যে একটি ছোট বীজ থাকে। এই ফলের গাছ চিরসবুজ ও মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। মার্চ-এপ্রিল মাসে ফুল আসে এবং মে-জুনে ফল পাকে। যে বছর প্রচণ্ড রোদ পড়ে, সে বছর জামরুল হয় মিষ্টি। আর ছায়ার জামরুল খেতে পানসে। জামরুল ফল বেশি মিষ্টি না হলেও এটি খেতে সুস্বাদু।</p> <p>জামরুল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে খনিজ পদার্থ রয়েছে কমলার তিন গুণ এবং আম, আনারস ও তরমুজের সমান। লিচু ও কুলের সমান এর ক্যালসিয়ামের পরিমাণ এবং আঙুরের দ্বিগুণ। আয়রনের পরিমাণ কমলা, আঙুর, পেঁপে ও কাঁঠালের চেয়েও বেশি। ফসফরাসের পরিমাণ আপেল, আঙুর, আম ও কমলার চেয়ে বেশি।</p> <p>সহজলভ্য জামরুলে আছে আশ্চর্য সব ওষধি গুণ। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। এর বিচি ডায়রিয়া প্রতিরোধে ওষুধের মতো কাজ করে।</p> <p>এই ফল হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া এই ফলে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধের উপাদান। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে দারুণ কার্যকর, মস্তিষ্ক ও লিভার সুরক্ষায় টনিক হিসেবে কাজ করে, বাত নিরাময়ে উপকারী।</p> <p>শুধু তা-ই নয়, লিভার আর কিডনির বিষ দূর করে বিপাকক্রিয়া সুষ্ঠু রাখতেও অব্যর্থ টোটকা এই জামরুল।</p> <p>                            ►   ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p> <p> </p>