<p><strong>চতুর্থ অধ্যায় : জীবনীশক্তি</strong></p> <p><strong>সৃজনশীল প্রশ্ন</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/magazin-2019/September/22-09-2019/kalerkantho-2019-09-22.jpg" style="height:85px; width:390px" /></p> <p>ক) জীবনীশক্তি কী?</p> <p>ক) প্রস্বেদনকে কেন অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গল বলা হয়?</p> <p>গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত (i) নম্বর প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) (ii) নম্বর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কতগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়, যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো।</p> <p>সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর</p> <p>ক) জীব কর্তৃক তার দেহে শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারের মৌলিক কৌশলই হচ্ছে জীবনীশক্তি।</p> <p>খ) প্রস্বেদন প্রক্রিয়াটি উদ্ভিদের বহু ধরনের উপকার করলেও কিছু অপকারী ভূমিকা পালন করে। পানি শোষণের চেয়ে প্রস্বেদনে পানি হারানোর হার অধিক হলে উদ্ভিদের পানি ও খনিজের ঘাটতি দেখা দেবে এবং এর ফলে উদ্ভিদের মৃত্যুও হতে পারে। এ জন্য একে একটি অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গল বলে।</p> <p>গ) উদ্ভিদের প্রদত্ত প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণের আলোক নিরপেক্ষ পর্যায়। এ পর্যন্ত কার্বন বিজারণের মাধ্যমে শর্করা তৈরির তিনটি গতিপথ শনাক্ত করা হয়েছে। যথা : ১। ক্যালভিনচক্র ২। হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র ও ৩। ক্রাসুলেসিয়ান এসিড বিলাকচক্র। শর্করা তৈরির এ তিনটি গতিপথের মধ্যে ক্যালভিনচক্র সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। নিচে ক্যালভিনচক্র বর্ণনা করা হলো—</p> <p>বায়ুস্থ CO<sub>2</sub> পত্ররন্ধ্রের মধ্য দিয়ে কোষে প্রবেশ করে। কোষে অবস্থিত ৫ কার্বনবিশিষ্ট রাইবুলোজ ১, ৫ ডাই-ফসফেটের সঙ্গে মিলিত হয়ে ৬ কার্বনবিশিষ্ট কিটো এসিড তৈরি করে, যা সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে গিয়ে তিন কার্বনবিশিষ্ট দুই অণু ৩ ফসফোগ্লিসারিক এসিড তৈরি হয়। অতঃপর আলোক পর্যায়ে সৃষ্ট আত্তীকরণ শক্তি ATP ও NADPH +H+ কে ব্যবহার করে ৩ ফসফোগ্লিসারিক এসিড ৩ কার্বনবিশিষ্ট ৩ ফসফেট ফসফোগ্লিসারলডিহাইড ডাই-হাইড্রক্সি অ্যাসিটোন ফসফেট তৈরি করে। ৩ ফসফোগ্লিসারলডিহাইড ও ডাই-হাইড্রক্সি অ্যাসিটোন ফসফেট থেকে ক্রমাগত বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একদিকে শর্করা এবং অন্যদিকে রাইবুলোজ ১, ৫ ডাই-ফসফেট তৈরি হয়ে থাকে। এভাবে আত্তীকরণ শক্তি কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বিজারিত হয়ে শর্করা উৎপন্ন করে।</p> <p>ঘ) উদ্দীপকের (ii) নম্বর প্রক্রিয়া হলো সবাত শ্বসন। সবাত শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে চারটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো—</p> <p>ধাপ-১ (গ্লাইকোলাইসিস) : এ প্রক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারিত হয়ে দুই অণু পাইরুভিক এসিড উৎপন্ন করে। এ ধাপে চার অণু ATP (দুই অণু খরচ হয়ে যায়) এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো অক্সিজেন প্রয়োজন হয় না। তাই গ্লাইকোলাইসিস সবাত ও অবাত শ্বসনেরই প্রথম ধাপ। ধাপগুলো কোষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে থাকে।</p> <p>ধাপ-২ (অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি) : গ্লাইকোলাইসিসে সৃষ্ট প্রতি অণু পাইরুভিক এসিড পর্যায়ক্রমে বিক্রিয়া শেষে ২ কার্বনবিশিষ্ট এক অণু অ্যাসিটাইল কো-এ এক অণু CO<sub>2</sub> এবং এক অণু NADH +H+ উৎপন্ন করে। (দুই অণু পাইরুভিক এসিড থেকে দুই অণু অ্যাসিটাইল কো-এনজাইম, দুই অণু CO<sub>2</sub> এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়)।</p> <p>ধাপ-৩ (ক্রেবসচক্র) : ক্রেবসচক্রে ২ কার্বনবিশিষ্ট অ্যাসিটাইল CO-A জারিত হয়ে দুই অণু CO<sub>2</sub> উৎপন্ন করে। এ পর্যায়ে অ্যাসিটাইল কো-এ মাইটোকন্ড্রিয়ায় প্রবেশ করে এবং ক্রেবসচক্রে অংশগ্রহণ করে। এ চক্রের সব বিক্রিয়া মাইটোকন্ড্রিয়ায় সংঘটিত হয়। CO<sub>2</sub> ছাড়াও এ চক্রে ১ অণু অ্যাসিটাইল কো-এ থেকে ৩ অণু NADH+H+ , ১ অণু FADH2, ১ অণু GTP (গুয়ানোসিন ট্রাই-ফসফেট) উৎপন্ন হয়। অতএব, দুই অণু অ্যাসিটাইল CO-A থেকে ৪ অণু CO<sub>2</sub>, ৬ অণু NADH +H+ , দুই অণু FADH<sub>2</sub> এবং দুই অণু GTP উৎপন্ন হয়।</p> <p>ধাপ-৪ (ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র) : এ প্রক্রিয়ায় উপরোক্ত তিনটি ধাপে উৎপন্ন NADH +H+, FADH<sub>2</sub> জারিত হয়ে ATP, পানি, ইলেকট্রন ও প্রোটন উৎপন্ন হয়। উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রনগুলো ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্রের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় শক্তি নির্গত হয়। সে শক্তি ATP তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র মাইটোকন্ড্রিয়ায় সংঘটিত হয়।</p>