<p>কার্বন মৌল কার্বন ডাই-অক্সাইড যৌগরূপে যে চক্রাকার পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল থেকে জীব জগতে প্রবেশ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে এসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখে, তাকে কার্বন চক্র বলে। ইংরেজিতে কার্বন চক্রকে Carbon Cycle বলে।</p> <p>কার্বন জীব ও জড় পরিবেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত আবর্তিত হয়। সব জীবদেহ গঠনে কার্বনের প্রয়োজন। এটি বায়ুুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস হিসেবে অবস্থান করে। বায়ুুমণ্ডলে এর পরিমাণ ০.০৩৬ ভাগ। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পানি ও বায়ুুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে অক্সিজেন ও গ্লুকোজ তৈরি করে। এই গ্লুকোজ উদ্ভ্ভিদের দেহ তৈরি করে। প্রাণী উদ্ভিদ থেকে খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন গ্রহণ করে। এই কার্বন উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহ থেকে তিন উপায়ে আবার বায়ুুমণ্ডলে ফিরে আসে। প্রথমত, উদ্ভিদ ও প্রাণী শ্বসন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি উৎপাদন করার সময় বায়ুুমণ্ডলের অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে দেয়। দ্ব্বিতীয়ত, উদ্ভিদকে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে বা প্রাণীদেহকে পোড়ালে তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মেশে। উদ্ভিদ বা গাছপালা মরে গেলে এদের দেহাবশেষ ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে ভেঙে যায় এবং একপর্যায়ে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ভূগর্ভে জমা হয়। আমাদের অতি ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, কেরোসিন বা পেট্রল—এসবই এই প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি আমরা রান্না থেকে শুরু করে গাড়িতে, শিল্প-কারখানায় দহন করে ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহার করছি। তৃতীয়ত, উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ মাটিতে পচার সময় ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক কার্বন ডাই-অক্সাইড সরাসরি বায়ুুতে ছেড়ে দেয়।</p> <p>এভাবে কার্বন চক্রের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের অর্থাৎ কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য বজায় থাকে।                     </p> <p><strong>ইন্দ্রজিৎ</strong> <strong>মণ্ডল</strong></p>