<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধির ধারা অক্ষুণ্ন রাখার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বেসরকারি শিল্প খাত। স্বাধীনতা-উত্তরকালে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশে দেশপ্রেমিক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসেছেন। অনেক কষ্ট ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে তাঁরা দেশে শিল্পায়নের ভিত তৈরি করেছেন। তাঁরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করে টিকে থাকার মতো অবস্থান গড়ে তুলেছেন। কিন্তু সে সবই আজ হুমকির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারকে সব ধরনের কর দেওয়ার পরও শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা ক্রমাগত নানা বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। বৈরী পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। নানাভাবে জিম্মি হয়ে যাচ্ছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু এখনই নয়, অতীতেও দেখা গেছে যখনই দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে তখনই তাঁদের নানাভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনসহ অনেক পরিবর্তনের পরই ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা মামলা-হামলাসহ নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। সেসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করেও এ দেশে বেসরকারি খাত এগিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিকভাবে একটি অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। গতকাল কালের কণ্ঠে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিনিয়োগ করে অসহায় ব্যবসায়ীরা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতেও উঠে এসেছে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠার কথা। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ক্রমেই প্রবল হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। রয়েছে ডলার সংকট। কমছে ঋণপত্র খোলা এবং নিষ্পত্তির হার। কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েক শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ধুঁকছে অনেক কারখানা। অনেক কারখানা নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। ফলে বাড়ছে শ্রম অসন্তোষ। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অনুকূল নয়। সামগ্রিকভাবেই শিল্প খাতের পরিবেশের অবনতি হচ্ছে। এসব কারণে দেশীয় উদ্যোগ যেমন কমছে, তেমনি কমছে বিদেশি বিনিয়োগ। এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে শিল্প খাতের বিকাশ তো দূরের কথা, অস্তিত্ব নিয়েই সংকট তৈরি হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২-২৩ সালের একটি জরিপের তথ্যে বলা হয়েছে, দেশের জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ২৩.১০ শতাংশ। এর মধ্যে বড় শিল্পের অবদানই ১১.২০ শতাংশ। বিবিএসের ২০২২ সালের আরেকটি জরিপের তথ্য বলছে, দেশের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসার আকার পাঁচ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ৮৬ লাখ মানুষ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় জড়িত। ২০২৩ সালে বিবিএসের আরেকটি জরিপ বলছে, দেশের সাত কোটি ১০ লাখ মানুষ নানা কর্মে নিয়োজিত। এর মাত্র ৫ শতাংশেরও কম সরকারি চাকরিতে। ফলে বেশির ভাগই বেসরকারি কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। সরাসরি ব্যক্তি খাতেই কাজ করছেন ৪৭.৯ শতাংশ মানুষ। সুতরাং অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এই বেসরকারি খাত টিকিয়ে রাখতে দ্রুত পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত অপর এক খবরে দেখা যায়, গত চার দশকে আকাশছোঁয়া সাফল্যের অধিকারী কাগজশিল্প এখন রুগ্ণ হওয়ার পথে। গ্যাস-বিদ্যুৎ, কাঁচামাল, ডলার ও ঋণ সংকটে এক লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা কাগজশিল্প অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বাড়ছে। কর্মসংস্থানের চাহিদা বাড়ছে। এ অবস্থায় বেসরকারি খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি এই খাতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।</span></span></span></span></p>