<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত কৃষিজমি ও খাদ্য উৎপাদন। অথচ ঘটছে উল্টোটা। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নানা প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত কমছে কৃষিজমি। কমছে কৃষিজমির উৎপাদনক্ষমতা। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, যশোরের শার্শায় কৃষিজমির মাটি কেটে নেওয়ার হিড়িক লেগেছে। খননযন্ত্র দিয়ে কয়েক ফুট গর্ত করে কৃষিজমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাটি যায় মূলত ইটভাটায়। এ ছাড়া জলাভূমি বা নিচু জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণেও এই মাটি ব্যবহার করা হয়। এভাবে ওপরের মাটি কেটে নেওয়ায় কৃষিজমি আর চাষাবাদের উপযুক্ত থাকছে না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষিশুমারি-২০১৯-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গড়ে প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে ৩৭ হাজার ৮১৮ একর। তার পরও উপকূলীয় এলাকায় নোনা পানি অনুপ্রবেশের কারণে জমির উর্বরতা কমছে। কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া জোরদার হচ্ছে এবং কমছে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমাণ। তার পরও কৃষিজমি রক্ষায় রাষ্ট্র বা প্রশাসনের উদ্যোগ নেই বললেই চলে। জাতীয় কৃষি নীতি ১৯৯৯-এ অকৃষি খাতে কৃষিজমির ব্যবহারকে নিরুৎসাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষিজমি সুরক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু আইন রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো যে এসব আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, যাঁরা কৃষিজমির মাটি কাটা ও বিক্রির ব্যবসা করেন তাঁরা স্থানীয়ভাবে যথেষ্ট প্রভাবশালী। মাটি বিক্রেতাদের ভাষ্য, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তাঁরা এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাহলে কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ নেবে কে?</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইট তৈরিতে কৃষিজমির মাটি ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। ইট তৈরিতে মাটি ব্যবহারের ধরন নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু প্রায় কোথাও তা মানা হয় না। আর এ বিষয়টি কোথাও দেখভালও করা হয় না। ফলে সারা দেশেই ইট নির্মাণে কৃষিজমির মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে প্রতিবছর ২২.৭১ বিলিয়ন বা দুই হাজার ২৭১ কোটি ইট তৈরি হয়। এসব ইট তৈরির জন্য যে বিপুল মাটির প্রয়োজন হয় তা আসে মূলত ফসলি জমির ওপরের স্তর বা টপ সয়েল থেকে। প্রয়োজনীয় অণুজীবসমৃদ্ধ এই উর্বর অংশ বা টপ সয়েল কেটে নিলে সেই জমিতে ফসল হয় না বললেই চলে। তা ছাড়া কয়েক ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়ায় বর্ষায় সেখানে পানি জমে যায়। সে কারণেও জমি চাষাবাদের উপযোগী থাকে না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা মনে করি, কৃষিজমি রক্ষায় আরো কঠোর আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ইট নির্মাণে কৃষিজমির মাটির ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>