আবার কি অশান্ত হয়ে উঠছে পাহাড়, নাকি অশান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে? গতকাল দেশের সব গণমাধ্যমে একটি খবর প্রকাশের পর এমন প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলি ইউনিয়নে সশস্ত্র হামলায় তিন গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ইউনিয়ন সভাপতির বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামের একটি নতুন সশস্ত্র সংগঠনের কর্মীরা বড়থলি ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ ঘটনার একটি রাজনৈতিক মাত্রা আছে। যারাই ঘটিয়ে থাকুক, তাতে পাহাড়ে আরেক দফা রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। সেটি কিছুতেই মঙ্গলজনক হওয়ার কথা নয়। কাজেই এ ঘটনাকে কোনোভাবেই তুচ্ছ হিসেবে ধরা যাবে না। কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট তাদের ফেসবুকে বলেছে, ‘কেএনএফের স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স হেড-হান্টার টিম সন্ত্রাসী জেএসএসের সশস্ত্র বাহিনী জেএলএর জাইজাম বেইসমেন্ট ক্যাম্পে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে জেএলএ বাহিনীর তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তবে আহত অবস্থায় ট্রেইনিসহ অন্যরা সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ’ প্রতিশোধমূলক আরো সহিংসতা হতে পারে—এমন আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়। কাজেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক থাকতে হবে।
একসময় আঞ্চলিক রাজনীতির বিরোধে জর্জরিত ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের উত্তরের জেলা খাগড়াছড়ি। এরপর আঞ্চলিক রাজনীতির বিরোধ এবং এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখার লড়াইয়ে তছনছ হয়ে যেতে থাকে রাঙামাটি। সে সময় রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন জনজাতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শান্তির জায়গা হিসেবে বিবেচিত বান্দরবানে চলে আসে। এখন সেখানেও জ্বলছে সংঘাতের আগুন। এখন পাহাড় নতুন করে আবার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে বলা হয়েছে।
পাহাড়ে শান্তির জন্য সহিংসতা বন্ধ ও আতঙ্ক দূর করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে স্বস্তি।