বৃদ্ধ বয়সে অনেক মানুষকেই জীবনযাপনে চরম দুর্দশায় পড়তে হয়। অনেকের সন্তান থাকে না। সন্তান থাকলেও তাদের অনেকেই বৃদ্ধ মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে চায় না। আবার বেকার হয়ে গেলে কিংবা রোগব্যাধিতে কাজ করতে অক্ষম হয়ে গেলে কিংবা পঙ্গুত্ব দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভোগান্তির সীমা থাকে না।
বিজ্ঞাপন
উন্নত অনেক দেশেই এমন পেনশন বা নানা ধরনের সামাজিক নিরাপত্তাবলয় রয়েছে। বাংলাদেশও উত্তরোত্তর এগিয়ে চলেছে। ২০৪১ সাল নাগাদ সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও নাগরিকদের জন্য এজাতীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। অতীতে দেশের বয়স্ক নাগরিকদের নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অনেক দুঃখজনক খবরও আমাদের দেখতে হয়েছে। অনেক স্থানে বৃদ্ধ মা অথবা বাবাকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। গতকালও গণমাধ্যমে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, পুত্রসন্তান মায়ের কাছ থেকে জমি লিখে নিয়ে মাকে একটি দোকানঘরে রেখে এসেছে, যে দোকানটি বৃদ্ধার মৃত স্বামী রেখে গেছেন। বার্ধক্যে এমন অসহায় জীবন যেন কাউকে বহন করতে না হয় সে জন্য এমন একটি পেনশন ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছিল। সরকার এসংক্রান্ত আইনের খসড়া অনুমোদন করার মাধ্যমে সেই জরুরি কাজ সম্পাদনের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত যে কেউ এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ ক্ষেত্রে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা ব্যক্তিদেরও এতে যুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। বিধিমালায় এসংক্রান্ত আরো অনেক খুঁটিনাটি বিষয়াদি উল্লেখ থাকবে।
আমরা আশা করি, দেশের প্রায় সব মানুষ এই সুবিধার আওতায় আসবে। সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক ক্রমেই আরো বিস্তৃত হোক।