গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় সব খাতে সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অপচয় করা যাবে না। শুধু অপচয় রোধ নয়, জনগণের জন্য, দেশের জন্য প্রকল্প আগে নিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আগে নিতে হবে। অহেতুক বাড়াবাড়ি করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর সীমিত করার বিষয়ে পরিপত্রও জারি করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার জারি করা এই পরিপত্রে বলা হয়েছে, করোনা-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে আবার আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ এবং ইনোভেশনের আওতামুক্ত ভ্রমণ ও ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে।
গত সোমবার অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিদেশি মুদ্রা বাঁচাতে এবার স্বায়ত্তশাসিত, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তাঁরা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিলের অর্থ ব্যবহার করেও বিদেশ সফর করতে পারবেন না।
বিশ্লেষকরাও বলছেন, আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপে দেশে মার্কিন ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই হারে বাজারে সরবরাহ না বাড়ায় বাড়ছে ডলারের দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বাজারে ছেড়েও দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে ব্যাপক হারে আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে আমদানির ব্যয় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে ব্যাংকব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে, যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। মুদ্রা বাজারের অস্থিরতা সামাল দিতে দুই মাসে তৃতীয়বারের মতো ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ধন্যবাদার্হ। সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠান মেনে চলবে, অপচয় বন্ধ হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।