দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি। সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সারা দেশে কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে। বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে। নির্বিচারে পুকুর খননও করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। খনন করে পাওয়া মাটি বিক্রি করা হচ্ছে আশপাশের ইটভাটায়। এই মাটি পরিবহনের সময় ট্রাক্টরের চাকায় নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট। এলাকায় একের পর এক পুকুর খননের কারণে ফসলের মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে কমছে ফসল উৎপাদনও। ফসল উৎপাদন কমলে হুমকির মুখে পড়বে খাদ্য নিরাপত্তা। কৃষিপণ্যের জন্য বিদেশনির্ভরতা বাড়বে।
আমাদের দেশে ভূমির সুষম ব্যবহারের জন্য ‘ল্যান্ড জোনিং’ হয়নি। ফলে ফসলের মাঠে হচ্ছে শিল্প আর শিল্পের জায়গায় হচ্ছে আবাসন। সরকার ‘ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ২০০১’ তৈরি করলেও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে জমির অপব্যবহার বাড়ছেই। ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী কেউ নদী-নালা, খাল-বিল, রাস্তাঘাট প্রভৃতির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবে না। প্রাকৃতিক কারণে যদি এসবের শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিতে হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে, জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। ২০১৫ সালের ১১ জুন ভূমি মন্ত্রণালয়ের নীতিমালাসংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, কৃষিজমি যতটুকু সম্ভব রক্ষা করতে হবে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জমির প্রকৃতিগত কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। কিন্তু সেই নিয়ম তো মানা হচ্ছে না।
পৃথিবীর অনেক দেশেই নীতিমালা মেনে ভূমি ব্যবহার করা হয়। পরিকল্পনা ও আইনের বাইরে সেসব দেশে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। শুধু রাজশাহী নয়, সারা দেশেই কৃষিজমির মাটি কেটে পুকুর খনন বন্ধ করতে প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে।