<p>গতকাল কালের কণ্ঠ’র প্রথম পৃষ্ঠায় একটি ছবি ছাপা হয়েছে। টিসিবির পণ্য বিক্রি করে এমন একটি ট্রাক ঘিরে মানুষের ভিড়। সবাই পণ্য পেতে চায়। কারণ এখানে কম দামে মিলছে তেল, ডাল ও চিনি। ঠিক একই রকম আরো একটি ছবি ছাপা হয়েছিল কয়েক দিন আগে। সেটা ছিল ওএমএসের ট্রাকে মানুষের দীর্ঘ সারি। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম যখন সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে, তখন কম দামের বিক্রয়কেন্দ্রে ভিড় বাড়বে। গত কয়েক দিনে প্রকাশিত খবর থেকেও জানা যাচ্ছে, ওএমএস ও টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়ছে। শুধু নিম্নবিত্ত বা নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের একাধিক সদস্যকেও লাইনে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে। এই কঠিন সময়ে কিছুটা সাশ্রয় যদি হয়, এই প্রত্যাশায় অনেকেরই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে এসব বিক্রয়কেন্দ্রে। সকালে নির্দিষ্ট জায়গায়, নির্দিষ্ট সময়ে ওএমএসের চাল বা টিসিবির তেল, ডাল ও চিনি নিয়ে আসার কথা থাকলেও ভোর থেকেই এসব জায়গায় মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য বা চাল না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে প্রতিদিন।</p> <p>করোনার অভিঘাতে সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণিটিও বিপর্যস্ত। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিপের ফল বলছে, দেশে মহামারির আগে আয়মূলক কাজে নিযুক্ত তরুণীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ চলতি বছর জানুয়ারির মধ্যেই চাকরি হারিয়েছেন। অন্যদিকে ‘যেদিন কাজ, সেদিন বেতন’-এর ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন শ্রমিকদের কোনো উপার্জন নেই এখন। নেই এমন কোনো সঞ্চয়, যা ভেঙে তাদের দিন চলতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক পরিবারকেই এখন নির্ভর করতে হচ্ছে ওএমএসের চাল ও টিসিবির পণ্যের ওপর। ওএমএসের লাইনে নিম্ন আয়ের মানুষদের ভিড় আর পণ্যের চাহিদা বাড়লেও জোগান না বাড়ায় দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অনেককে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। ওএমএসের ডিলারদের দাবি, লকডাউন শুরু হওয়ার আগে নগরীর ৯৪টি ওএমএস কেন্দ্র ও ১০টি ট্রাকে যে পরিমাণ বরাদ্দ ছিল, তা বাড়ানো হয়নি। যে কারণে এসব চাল ও আটার চাহিদাসম্পন্ন লোকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। ওএমএস কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি তারা এরই মধ্যে নজরে নিয়েছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। শুধু ওএমএস নয়, টিসিবির আওতা এবং পণ্য বরাদ্দ বাড়ানো হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।</p>