বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য অতীতে শত শত কোটি টাকা খরচ করে কিংবা বিদেশে রোড শো করেও লাভ হয়নি। বেসরকারি বিনিয়োগও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হয়নি। এর অন্যতম কারণ ছিল দেশে বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়।
বিজ্ঞাপন
অবকাঠামো উন্নয়ন একটি দেশের রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ওপরে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ১ থেকে ১.৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেতুর কারণে বদলে যাবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র। দেড় দশক আগেও বাংলাদেশে বার্ষিক মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলারের নিচে আর এখন তা দুই হাজার ডলারের বেশি। অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে রড, সিমেন্ট, পাথরসহ বিভিন্ন সংযোগ শিল্পে। শুধু সরকারি মেগাপ্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কাজ নয়, বেসরকারি পর্যায়েও এসবের চাহিদা দ্রুত বেড়ে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিডাব্লিউ রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে সিমেন্টের ব্যবহার সরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে ৩৫ শতাংশ, ব্যক্তি উদ্যোগে অবকাঠামো নির্মাণে ৪০ শতাংশ এবং আবাসন খাতে ২৫ শতাংশ। ২০০০ সালে মাথাপিছু সিমেন্টের ব্যবহার ছিল মাত্র ৪৫ কেজি, গত বছরের শেষ দিকে এটি ২০০ কেজি ছাড়িয়েছে। একইভাবে এগিয়ে চলেছে দেশের ইস্পাতশিল্প। এসব খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ আসছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাখ লাখ মানুষ এসব শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
করোনা মহামারির কারণে এই খাতগুলো এখন যথেষ্ট সমস্যায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই খাতগুলোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন। প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে চলতি মূলধন হিসেবে দ্রুত ও সহজ শর্তে সহায়তা দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিতে হবে। ভ্যাট, অগ্রিম কর, অগ্রিম আয়কর ও রেগুলেটরি করে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন।